তা, প্রচলিত ধারণায় নরকের বর্ণনা কিন্তু এই রকমেরই হয়ে থাকে! সে মৃত্যুপুরী যেন লাভার সমুদ্রে ঘেরা, গনগনে আঁচ আর তার আভায় রুক্ষ পাথুরে পরিবেশে কেবলই শাস্তি ভোগ করে দুষ্কর্মের হোতারা!
শুনতে অবাক লাগলেও এটাই সত্যি যে এই সব বর্ণনা অক্ষরে অক্ষরে মিলে যাচ্ছে, সম্প্রতি মহাশূন্যে এমন এক গ্রহ আবিষ্কার করে ফেলেছেন বিজ্ঞানীরা। কেপলার টেলিস্কোপে এই গ্রহটির অস্তিত্ব সম্পর্কে তাঁরা সজাগ হয়েছেন বলে খবর মারফত জানা যাচ্ছে। তবে এই গ্রহটি কিন্তু ন্যাশনাল এয়ারোনটিকস অ্যান্ড স্পেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন, ওরফে নাসা-র বিজ্ঞানীরা আবিষ্কার করেননি। এর খোঁজ পেয়েছেন ম্যাকগিল অ্যান্ড ইয়র্ক ইউনিভার্সিটির বিজ্ঞানীরা।
খবর বলছে যে এই বিজ্ঞানীরা সদ্য আবিষ্কৃত এই গ্রহটির বিজ্ঞানসম্মত নামকরণ করেছেন কে২-১৪১বি। বোঝাই যাচ্ছে যে এই নামকরণ করা হয়েছে গাণিতিক হিসেবের দিক থেকে। কিন্তু একই সঙ্গে তাঁরা এই গ্রহটিকে হেল প্ল্যানেট বা নরক বলেও অভিহিত করেছেন।
তাঁদের দেওয়া তথ্য থেকে জানা গিয়েছে যে এই হেল প্ল্যানেট পৃথিবীর চেয়ে আকারে প্রায় ৫ গুণ বড়। নিজের অক্ষপথে সে নিকটবর্তী নক্ষত্রকে মাত্র ৭ ঘণ্টায় সম্পূর্ণ প্রদক্ষিণ করতে পারে। তার যে দিকটা সেই নক্ষত্রের দিকে মুখ করে আছে, তা ভীষণই উত্তপ্ত। ২৭৬০ সেলসিয়াস তাপমাত্রা সেই অঞ্চলের যা পাথরকেও গলিয়ে দিতে পারে। সেই কারণেই প্রায় মাইল বিস্তৃত এবং গভীর ফুটন্ত লাভার সমুদ্র তৈরি হয়েছে ওই গ্রহের বুকে।
তবে তার যে দিকটি সংশ্লিষ্ট নক্ষত্রের দিকে মুখ করে নেই, সেখানকার পরিবেশ আবার খুবই ঠান্ডা! ওই পিঠের মাইনাস ২০০ ডিগ্রি সেলসিয়াসে জমে বরফ আছে নাইট্রোজেন। আর এই দুই গোলার্ধের এমন বিপরীত স্বভাবের কারণে মধ্যবর্তী স্তরে তৈরি হয়েছে এক অতি ভীষণ চৌম্বকীয় টান। সেই টানে তপ্ত গোলার্ধ থেকে শীতল গোলার্ধে প্রতি ঘণ্টায় ৩০০০ মাইল বেগে বয়ে যাচ্ছে ঝোড়ো হাওয়া!
বিজ্ঞানীরা আরও জানিয়েছেন যে এই গ্রহটি পৃথিবী থেকে মাত্র ২০০ আলোকবর্ষ দূরে অবস্থান করছে। পৃথিবীর মতো আর কী কী গ্রহ মহাশূন্যে থাকতে পারে, তার খোঁজ করতে গিয়েই এই হেল প্ল্যানেট আবিষ্কার করে ফেলেছেন তাঁরা!
নিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।
Tags: Earth, Hell Planet, Planet