#ব্রাজিল: ভাস্কর্যে নরনারীর যৌনাঙ্গের স্পষ্ট রূপায়ণ পৃথিবীর কোনও দেশে কোনও কালেই অস্বাভাবিক কোনও ঘটনা নয়। মিশেলেঞ্জেলোর (Michelangelo) বিখ্যাত ডেভিডের মূর্তিটার কথাই এ ক্ষেত্রে উদাহরণ হিসেবে তুলে আনা যেতে পারে। সেখানে স্পষ্ট ভাবেই দৃশ্যমান নায়কের পুরুষাঙ্গ। আবার যদি এই দেশের দিকে তাকাতে হয়, তা হলে তান্ত্রিক দেবী লজ্জাগৌরীর মূর্তির কথা উল্লেখ করা যায়। যেখানে দেবীর মুখশ্রীর জায়গা জুড়ে থাকে বিকশিত পদ্ম আর যোনিদেশটি থাকে দৃশ্যমান! কিন্তু সম্প্রতি ব্রাজিলের এক পার্কে ১০৮ ফুটের এক বিশালাকার যোনি-ভাস্কর্য স্থাপন করায় সরকার এবং বেসরকারি পক্ষের তীব্র নিন্দার মুখে পড়লেন শিল্পী জুলিয়ানা নোতারি।
খবর মোতাবেকে, ব্রাজিলের পেরনামবুকোয় ডিভা নামের কংক্রিটের তৈরি এই যোনিমূর্তিটি বসানো হয়েছে। তার পর থেকেই রক্ষণশীল প্রেসিডেন্ট জায়ার বলসোনারো এবং তাঁর সমর্থকদের কোপে পড়েছেন নোতারি। অবশ্য, শিল্পীও চুপ করে থাকেননি। নিজের সোশ্যাল মিডিয়া মারফত তিনি এই মনোভঙ্গীকে কট্টর পুরুষতান্ত্রিক তকমা দিয়ে সমালোচনাও করেছেন।
Such stunning lack of self awareness ... this Karen in Brazil got black men to dig trenches in the heat on subsistence wages to create a giant vagina art sculpture. pic.twitter.com/7eC0yRekFD
— Gender Studies for Men (@JohnDavisJDLLM) January 2, 2021
কিন্তু বিতর্ক এত সহজে জুড়াতে চাইছে না। নোতারি তাঁর ফেসবুকে (Facebook) গাঢ় লাল রঙের এই যোনিমূর্তির ছবি পোস্ট করায় তা ২৫ হাজার লাইক পেয়েছে এবং শেয়ার হয়েছে ১২ হাজারেরও বেশি। একই সঙ্গে উঠেছে তুমুল বিতর্কের ঝড়। সমালোচকদের দাবি- আদতে তা অত্যন্ত কুৎসিত এক মূর্তি, কোনও দিক থেকেই তা শিল্পের সমার্থক নয়। আর নোতারির পুরুষতান্ত্রিকতার সমালোচনার পাল্টা যুক্তিও দিয়েছেন বিরোধীরা। তাঁদের দাবি- এই মূর্তি বসানোর জন্য পুরুষদের দিয়েই গর্ত খুঁড়িয়েছেন নোতারি। যে কাজে তাঁকে পুরুষদের সাহায্য নিতে হয়, সে ক্ষেত্রে পুরুষতান্ত্রিকতা তাঁর সহায়ক বলেই ধরে নেওয়া উচিৎ!
যদিও ব্রাজিলের প্রসিদ্ধ চলচ্চিত্র পরিচালক ক্লেবার মেনডোঙ্কা ফিলহো শিল্পের প্রশংসা করে নোতারির পাশে এসে দাঁড়িয়েছেন। তাঁর এই উৎকীর্ণ শিল্পের প্রশংসা করেছেন কার্টুনিস্ট ল্যারেট কুচিনহো-ও। এঁদের সবার দাবি- ২০১৯ সাল থেকে ক্ষমতায় আসার পরই ব্রাজিলের বর্তমান সরকার শিল্পীদের স্বাধীনতা নানা ভাবে খর্ব করে চলেছেন! সত্যি বলতে কী, কোরিয়ায় যদি পুরুষাঙ্গের মূর্তিশোভিত পার্ক থাকতে পারে এবং তা পর্যটনের কেন্দ্রবিন্দু হয়, তা হলে ব্রাজিলে সমস্যা কেন হবে, সেটাই ভাবিয়ে তুলেছে মুক্তমনাদের!