বাৎস্যায়ণ তাঁর কামসূত্র গ্রন্থে বলপূর্বক যৌনতায় প্রবৃত্ত হওয়া এবং বিশেষ করে পুরুষের দ্বারা নারীর নিগ্রহমূলক যৌনতাকে অত্যন্ত নিন্দনীয় বলে ব্যাখ্যা করেছিলেন। তাঁর অভিমত ছিল এই যে এক্ষেত্রে প্রাণহানির আশঙ্কা থেকে যায়! এবার ঠিক এই এক বিষয় নিয়ে সরব হল ব্রিটেন। রতিক্রীড়ার সময়ে সঙ্গিনীর যদি শ্বাসরোধ হয়ে মৃত্যু হয়, তা হলে তাকে হত্যা হিসেবেই গণ্য করতে হবে এবং পুরুষসঙ্গীটিকে সেই মতো আইনি শাস্তি দিতে হবে- এই মর্মে নতুন আইন প্রণয়ণের উদ্যোগের কথা জানা গেল খবরে।
ব্রিটেনের ডোমেস্টিক অ্যাবিউজ কমিশনার নিকোল জোবস এবং ভিকটিমস কমিশনার ডেম ভেরা বেয়ার্ড এই আইন প্রণয়ণের লক্ষ্যে বিচারমন্ত্রকের সঙ্গে কথা বলতে চলেছেন। তাঁদের প্রস্তাবটি হাউজ অফ লর্ডস-এ পেশ করার কথা রয়েছে প্রাক্তন ভিকটিমস কমিশনার ব্যারনেস নিউলাভের। তার প্রয়োজনীয়তা কেন রয়েছে, এই প্রসঙ্গে নিকোল এবং ডেম একটি পরিসংখ্যানের দিকে সবার দৃষ্টি আকর্ষণ করতে চেয়েছেন। তাঁদের দাবি- এই আইন প্রণয়ণ না হলে দেশের নারীদের উপরে পারিবারিক ক্ষেত্রে অত্যাচার বাড়বে বই কমবে না!
নিকোল এবং ডেম পরিসংখ্যান দিয়ে এ কথার সত্যতা প্রমাণ করতে চেয়েছেন। তাঁরা জানিয়েছেন যে দেশে শ্বাসরোধ হয়ে যে সব নারীদের মৃত্যু হয়েছে, তার মধ্যে এক তৃতীয়াংশই ঘটেছে রতিক্রীড়ার সময়ে। প্রতি পাঁচজন নারী যাঁদের শ্বাসরোধ হয়ে মৃত্যু হয়েছে, তাঁদের মধ্যে পরিসংখ্যান মোতাবেকে একজন লিপ্ত ছিলেন রতিক্রীড়ায় এবং সেই সময়েই তাঁর মৃত্যু হয়েছে! অতএব, বিষয়টিকে লঘু ভাবে নেওয়া কখনই ঠিক হবে না!
তা, এমন ক্ষেত্রে কোন ধরনের শাস্তির ব্যবস্থা করে থাকে ইউনাইটেড কিংডমের বিচারমন্ত্রক? জানা গিয়েছে যে এ ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট পুরুষটির বড় জোর মাসছয়েকের কারাদণ্ড হয়ে থাকে। কেন না, বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই আদালতে এটা প্রমাণ করা হয় যে নিগ্রহমূলক যৌনতার ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট নারীটির সায় ছিল। ফলে, ঘটনাকে হত্যা হিসেবে তকমা দিতে পারে না বিচারমন্ত্রক; অনিচ্ছাকৃত মৃত্যু বলেই ছেড়ে দিতে হয়!
নিকোল এবং ডেমের দাবি- আইনের এই সুযোগ নিয়ে দেশে নারীদের উপরে অত্যাচার ক্রমেই বেড়ে চলেছে। অতএব যদি আইন প্রণয়ণ করে রতিক্রীড়ার সময়ে সঙ্গিনীর শ্বাসরোধ হয়ে মৃত্যুর ঘটনাকে হত্যা হিসেবে সাব্যস্ত করা যায়, তা হলে অপরাধের সংখ্যা কমবে!
Written By: Anirban Chaudhury