#ঢাকা: এ বছরই বাংলাদেশ যুদ্ধের পঞ্চাশ বছর পূর্তি। তার ওপর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্ম শতবর্ষ। দুই দেশের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক আরও উন্নত করার জন্য নরেন্দ্র মোদি সরকার এবং শেখ হাসিনা সরকার অনেক নতুন প্রকল্প ঘোষণা করেছেন ইতিমধ্যেই। যার মধ্যে তিস্তা জল বন্টন থেকে শুরু করে দীর্ঘদিন বন্ধ হয়ে থাকা ট্রেন লাইন চালু হওয়া অন্যতম সফল পদক্ষেপ। ভারতের দেখাদেখি বাংলাদেশকে পাশে পেতে মরিয়া পাকিস্তান। দিন তিনেক আগে বাংলাদেশে নিযুক্ত পাকিস্তানের নতুন হাই কমিশনার ইমরান আহমেদ সিদ্দিকী আশার আলো দেখছিলেন নতুন সিদ্ধান্তে। বাংলাদেশকে কাছে টানার জন্য কয়েক বছর ধরেই চেষ্টা করে আসছে পাকিস্তান। সম্প্রতি বাংলাদেশী নাগরিকদের জন্য ভিসার সব রকম বিধি-নিষেধ প্রত্যাহার করে নিয়েছে পাক সরকার।
দক্ষিণ এশিয়ার মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দুই দেশের ভেতর খারাপ সম্পর্কের ফলে অনেকটাই উন্নত হবে আশা করেছিল পাকিস্তান। বরফ গলবে এমনটাই মনে হয়েছিল ইমরান খান সরকারের। কিন্তু বাংলাদেশ জানিয়েছে ভিসা সংক্রান্ত ব্যাপারে পাকিস্তান বন্ধুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নিলেও দুই দেশের সম্পর্ক স্বাভাবিক করতে এটাই যথেষ্ট নয়। ঢাকার পক্ষ থেকে বিদেশ প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম জানিয়ে দিয়েছেন সবার আগে পাকিস্তান সরকারকে বাংলাদেশ যুদ্ধের সময় নারকীয় গনহত্যার জন্য ক্ষমা চাইতে হবে। অসংখ্য মানুষকে হত্যা এবং মহিলাদের ধর্ষণের অভিযোগ রয়েছে পাকিস্তান সেনার বিরুদ্ধে। পাক সেনাবাহিনীর জেনারেল নিয়াজি এবং টিক্কা খানের নেতৃত্বে বাংলাদেশে প্রায় তিন লক্ষেরও বেশি মানুষকে হত্যা করা হয়। কুখ্যাত অপারেশন সার্চ লাইটের জন্য আজ পর্যন্ত সরকারিভাবে ক্ষমা চায়নি পাকিস্তান। তাই বাংলাদেশ মনে করে এই বিষয়টি যতদিন না নিষ্পত্তি করছে পাকিস্তান ততদিন বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে তোলা মুশকিল।
পাশাপাশি শাহরিয়ার আলম জানিয়ে দিয়েছেন বাংলাদেশে আটক থাকা পাকিস্তানিদের ফিরিয়ে নেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করা ছাড়াও সম্পত্তি বিভাজনের বিষয়টি নিষ্পত্তি করা প্রয়োজন। এছাড়াও পাকিস্তানকে আরও বেশি করে বাংলাদেশি পণ্যের প্রবেশাধিকার দিতে হবে জানিয়ে দিয়েছে বাংলাদেশ। অতএব পাকিস্তান যতদিন না তাঁদের পাপের জন্য সরকারি তরফে ক্ষমা চাইছে ততদিন সম্পর্ক স্বাভাবিক হওয়া সম্ভব নয়। গত জুলাইয়ে ইমরান খান নিজে ফোন করেছিলেন শেখ হাসিনাকে। সম্প্রতি ভারতের সঙ্গে কিছু বিষয় নিয়ে বাংলাদেশের মতের অমিল হলেও মোদি হাসিনার বৈঠকের পর দুই দেশ আবার কাছাকাছি এসেছে।