ভিন গ্রহে প্রাণ আছে কি না বা ছিল কি না, তা খুঁজতে গিয়ে বহু বছর ধরে বিজ্ঞানীরা চাঁদ ও মঙ্গলে পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালিয়ে আসছেন। কিন্তু কয়েক বছর আগে তাঁরা আবিষ্কার করেন, প্রক্সিমা সেনটাওরি বি-কে (Proxima Centauri B)। তার পর থেকে এই ভিন গ্রহটিকে নিয়ে আশায় বুক বাঁধতে শুরু করেন তাঁরা । বিজ্ঞানীদের জোরালো বিশ্বাস ছিল, প্রাণের হদিশ মেলার সম্ভাবনা রয়েছে প্রতিবেশী আলফা সেনটাওরি সৌরজগতের এই গ্রহে।
প্রক্সিমা সেন্টাওরি বি অনেকটাই পৃথিবীর মতো। গ্রহটি যে নক্ষত্রকে প্রদক্ষিণ করছে, জানা গিয়েছে, সেটি সূর্যের মতো আগুনের গোলা নয়। ফলে সেখানে প্রাণ থাকতে পারে বলে মনে করতে শুরু করেন বিজ্ঞানীরা।
এ বার সেখান থেকেই সিগন্যাল এল পৃথিবীতে। মনে করা হচ্ছে, সেই সিগন্যাল ভিনগ্রহীদেরই!
দ্য গার্ডিয়ানে প্রকাশিত খবর অনুযায়ী, গত বছর এপ্রিল-মে নাগাদ সূর্যের সব চেয়ে কাছের নক্ষত্র প্রক্সিমা সেন্টাওরি থেকে সিগন্যাল পাওয়া যায়। একটি সরু রেডিও ওয়েভের মাধ্যমে সেই সিগন্যাল এসে পৌঁছয় পৃথিবীতে। যা একটানা ৩০ ঘণ্টা ধরে লক্ষ্য করেন বিজ্ঞানীরা অস্ট্রেলিয়ার পার্কস টেলেস্কোপে (Parkes Telescope)।
তার পর থেকেই ওই রেডিও ওয়েভটি নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা শুরু হয়। সেটির উৎস খোঁজা শুরু হয়, দেখা হয় সেটি ওই নক্ষত্রমণ্ডল থেকেই আসা না কি আশেপাশের কোনও স্যাটেলাইট থেকে আসা! কিন্তু এখানেই বিজ্ঞানীদের উৎসাহ দিচ্ছে এই ওয়েভের ধরন। ওয়েভটি ছিল 980MHz-এর এবং তার ফ্রিকোয়েন্সিতে পরিবর্তন ছিল চোখে পড়ার মতো। যা একটি গ্রহের মুভমেন্টকে বোঝায়।
দ্য গার্ডিয়ানে প্রকাশিত রিপোর্টটি বলছে, ওই বিমটি বা ওয়েভটি প্রক্সিমা সেন্টাওরির ডিরেকশনেই এসেছে। যা পৃথিবী থেকে ৪.২ আলোকবর্ষ দূরে অবস্থান করছে। তবে, এখনও পর্যন্ত এই নিয়ে স্পষ্ট কিছু জানা যায়নি। অস্ট্রেলিয়ার ওই সংস্থা জানিয়েছে যে, তারা এটির উপরে কাজ করছে।
একজন বিজ্ঞানী ওই সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন, ১৯৭৭ সালের পর এটাই প্রথম তেমন কোনও সিগন্যাল যা ভিনগ্রহে প্রাণ থাকার বিষয়টি নতুন করে উসকে দেয়। এটি ওয়াও সিগন্যাল। ১৯৭৭ সালে আমেরিকায় এমন একটি সিগন্যাল পাওয়া গেছিল।
ভিন গ্রহে প্রাণের খোঁজ মিলতে পারে এমন আভাস পাওয়ার পর এ বার অস্ট্রেলিয়ার ওই বিজ্ঞানীরা ওই BLC1 নামের বিম নিয়ে একটি গবেষণাপত্র লিখতে চলেছেন, যাতে বিষয়টি বোঝা আরও সহজ হয়!