#নাইজেরিয়া: প্রত্নতাত্ত্বিকদের সন্ধানের ফলে খোঁজ মিলল আনুমানিক ৩৫০০ বছরের পুরনো একটি মধুর পাত্রের৷ ঐতিহাসিক মহলে এই খোঁজ কার্যত তোলপাড় ফেলে দিয়েছে। বিশেষজ্ঞদের মধ্যে, এই মধুর পাত্রের বয়স আনুমানিক ৩৫০০ বছর। যিশুর জন্মের আগে খ্রিস্টপূর্ব আনুমানিক ১৫০০ সাল থেকে এই পাত্র ব্যবহার করা হত বলে জানিয়েছেন প্রত্নতাত্ত্বিকরা। স্বাভাবিক ভাবেই যা বিশ্বের সবচেয়ে প্রাচীন মধু সংগ্রহের কার্যকলাপের দিকে ইঙ্গিত করে থাকে।
সম্প্রতি গ্যেটে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রত্নতাত্বিকরা, ব্রিটেনের ব্রিষ্টল বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়নবিদদের সঙ্গে নিয়ে যৌথভাবে সন্ধান চালিয়ে এই মধুপাত্রের সন্ধান পেয়েছেন। আফ্রিকা মহাদেশ থেকে প্রাপ্ত এই মধুপাত্র নক সংস্কৃতির দিকে ইঙ্গিত করে থাকে এমনটাই মনে করেছেন উভয়ে। বিশেষজ্ঞদের মতে এই নক সংস্কৃতির জন্ম আফ্রিকা প্রদেশের নাইজেরিয়া দেশে। খ্রিস্টের জন্মের আগে আনুমানিক ১৫০০ শতক থেকে এই সংস্কৃতি আফ্রিকা ও নাইজেরিয়ার বুকে রয়েছে। এই নক সংস্কৃতি আফ্রিকার সাধারণ যুগ ( Common Era)-এর অংশ।
এই যুগ ঐতিহাসিকদের কাছে পরিচিত মূলত প্রাচীন স্থাপত্যের জন্য। সাধারণ যুগের টেরাকোটা শিল্প সারা বিশ্বব্যাপী প্রসিদ্ধ। এবার সেই যুগের প্রাচীন মধুপাত্রের সন্ধান পেয়ে বিজ্ঞানীরা যারপরনাই উল্লসিত। অনেকেই মনে করছেন, এই মধু পাত্রের সন্ধান আফ্রিকা সম্পর্কিত এ যাবৎকালের চর্চায় এক নতুন দিকের জন্ম দেবে। আফ্রিকার ইতিহাস সম্পর্কিত আলোচনায়, এই সন্ধান এক নতুন দিগন্ত খুলে দেবে এমনটাও মনে করছেন অনেকে।
গ্যেটে বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক পিটার ব্রেউইং (Peter Breuing) বলছিলেন সেই কথা। 'এই মধু তাদের প্রাত্যহিক জীবনযাপন বা খাদ্যের অংশ ছিল, এই কথা ভাবতেই অবাক লাগে'। ব্রেউইং-এর মত অনুযায়ী, 'এই সন্ধান আফ্রিকা প্রদেশের এক সম্পূর্ণ নতুন দিক সারা বিশ্বের কাছে নিয়ে এসেছে। এই দিক বিস্ময়ের উদ্রেক করে।'
তবে বিস্মিত কেবলমাত্র প্রত্নতাত্ত্বিকেরা নন। একই রকম বিস্ময় প্রকাশ করেছেন, ব্রিষ্টল বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়নের অধ্যাপকেরাও। 'বায়োমলিকিউলার তথ্যসমূহের সঙ্গে নৃতাত্ত্বিক পরীক্ষা ও তথ্যাদির মিশ্রণ প্রমাণ করে যে এই মধুর ব্যবহার হত আজ থেকে ৩৫০০ বছর আগে। আফ্রিকার ইতিহাস চর্চার ক্ষেত্রে এটি একটি লক্ষণীয় বিষয়।' ব্রিষ্টল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপিকা জুলি দুন ( Julie Dunne)-এর গলায় ঝরে পড়ে উচ্ছ্বাস৷
আফ্রিকায় মধুর প্রচলন ও ব্যবহার বেশ পুরনো। অধ্যাপিকা ক্যাথারিনা নিউম্যান ( Katharina Neumann)-এর কথায় 'সব চেয়ে প্রাচীন মৃৎপাত্রের নিদর্শন এগারো হাজার বছরের পুরনো। আমরা এটা বোঝার চেষ্টা করছি, সেটাও মোমের অবশিষ্টাংশ দিয়ে তৈরি কি না।' বিজ্ঞানীরা আফ্রিকার নক সংস্কৃতির মানুষজনের মধ্যে পশুপালনের অভ্যাস ছিল কি না তাই নিয়ে গবেষণা শুরু করেছেন। যদিও সে বিষয়ে এখনও অবধি কোনও সম্পূর্ণ তথ্য পাওয়া যায়নি। তবে বিজ্ঞানীদের ধারণা, এই মধু কাঁচামালের সঙ্গে প্রাণিজ পদার্থের সংমিশ্রণে তৈরি করা হয়ে থাকত।
নিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।
Tags: Honey, Viral story