হাওড়া: পাওয়ারলিফটিং চ্যাম্পিয়নশিপে সোনা জয়ী হাওড়ার স্নেহা। কেরলে অনুষ্ঠিত এশিয়ান পাওয়ার লিফটিং চ্যাম্পিয়নশিপে ৭৬ কেজি সাব জুনিয়র বিভাগে। একক এবং দলগত মিলিয়ে মোট চারটি সোনা জয় রেকর্ড হাওড়ার স্নেহার। স্নেহা জানান, তাঁর এই সাফল্যর পেছনে রয়েছে কোচেদের যেমন সহযোগিতা, তেমনই বালি হেলথ সেন্টার এবং বেঙ্গল পাওয়ার লিফটিং এসোসিয়েশন সঙ্গও। সেই সঙ্গে মা-বাবার দারুন সাপোর্ট।
এই প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহ করা একটা সময় অনিশ্চিত থাকলেও স্থানীয় বিধায়ক ও কয়েকজন মানুষের সহযোগিতায় সমস্যা সমাধান হয়। বাধা কাটিয়ে শেষমেষ প্রতিযোগিতার মঞ্চে হাজির হন স্নেহা। সেখানে অন্যান্য দেশের প্রতিযোগীদের পিছনে ফেলে সফল স্নেহা। এই প্রতিযোগিতাতেই এশিয়ান রেকর্ড তৈরি করেন তিনি।
সোমবার বেলা ১১টা নাগাদ চেন্নাই এক্সপ্রেসে হাওড়ার সাঁতরাগাছিতে এসে নামেন তিনি। সঙ্গে ছিলেন স্নেহার বাবা, মা ও শিক্ষাগুরু। টাকার অভাবে যখন তাঁর এই প্রতিযোগিতায় যাওয়া প্রায় অনিশ্চিত হয়ে গিয়েছিল তখন খবর পেয়ে ডোমজুড়ের বিধায়ক তথা তৃণমুলের হাওড়া জেলা সভাপতি কল্যাণ ঘোষ এগিয়ে আসেন। নগদ আশি হাজার টাকা সহযোগিতা করে অনেকটাই চিন্তামুক্ত করেছিলেন।
আরও পড়ুন: তিনশো টাকা কেজি, হাত দেওয়াই দায়! হঠাৎ কেন এতটা বেড়ে গেল আদার দাম?
স্নেহার পরিবার সূত্রে জানা যায়, এই চ্যাম্পিয়নশিপে যোগ দিতে প্রয়োজনীয় অর্থ বিধায়ক সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেন। তার পাশাপাশি বেশ কয়েকজন মানুষ স্নেহার পাশে দাঁড়িয়েছিলেন এই প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করতে। স্নেহার বাবা একজন ফল বিক্রেতা। দিন এনে দিন খাওয়া পরিবার। এই চড়া মূল্যের বাজারে সংসার চালানো দায় হয়ে পড়েছে। তবে এই অল্প উপার্জনের মধ্যেই স্নেহাকে একজন সুপ্রতিষ্ঠিত খেলোয়াড় তৈরি করার স্বপ্ন দেখেন স্নেহার মা ও বাবা।
স্নেহার বাবা উত্তম ঘরামী জানান, মেয়েকে নিয়ে স্বপ্ন দেখি। তবে লকডাউনের সময় থেকে সমস্যা বেড়েছে। ব্যবসা আগের মতো নেই। কোনও রকমে ফল বিক্রি করে চলে সংসার। মেয়েকে কত দূর এগিয়ে নিয়ে যেতে পারব জানি না। তবে আমরা চেষ্টা করে চলেছি। স্নেহার বাবা উত্তম ঘরামি দীর্ঘদিন খো খো খেলার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। পাঁচবার জাতীয় স্তরে খো খো খেলার অংশ নিয়েছিলেন। নিজের অসমাপ্ত স্বপ্ন পূরণ করতে তাই ছোট থেকে মেয়েকে খো খো খেলার প্রশিক্ষণ দেন তিনি। কয়েক বছর খো খো খেলার পর, স্নেহা পাওয়ার লিফটিং খেলায় যোগ দেয়। জাতীয় স্তরে সাফল্যের পর এবার এশিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপ প্রতিযোগিতায় স্বর্ণপদক জয়, আরও আশার আলো। এ বার তাঁর স্বপ্ন ওয়ার্ল্ড চ্যাম্পিয়নশিপে অংশ গ্রহণ করা। নিজেকে আগামীতে সেই মতই তৈরি করতে চান তিনি, বলে জানিয়েছেন স্নেহা।
স্নেহা জানান, স্বপ্ন পূরণ করতে নিজেকে আরও বেশি করে উপযোগী করে তুলতে হবে। তবে বিদেশে খেলতে যাওয়া অনেকটা ব্যয় সাপেক্ষ, সেটাই চিন্তা বাড়াচ্ছে।
রাকেশ মাইতি
নিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।
Tags: Howrah news, Local sports