হুগলি: শিক্ষা নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় কুন্তল ঘোষের নাম জড়িয়েছে আগেই। ইডির হেফাজতে একের পর এক চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে আসছে নিয়োগ দুর্নীতি নিয়ে। এবার হুগলিতে একটি নিউজ ওয়েব পোর্টাল চালানোর তথ্য সামনে এল। শুধু তাই নয় প্রকাশ্যে এল কুন্তলের আরA কূকীর্তি। একটি ওয়েব পোর্টাল চালাতেন কুন্তল ঘোষ বলে অভিযোগ । সেখানে কর্মরত অনেক সাংবাদিকদেরই তাদের প্রাপ্য টাকা দিতে পারেনি কুন্তল। শুধু তাই নয় পোর্টালের মার্কেটিং এর জন্য যে তৃতীয় কোম্পানিকে ভাড়া করা হয়েছিল তাদের থেকেও লক্ষাদিক টাকার জালিয়াতের অভিযোগ উঠেছে কিন্তলের বিরুদ্ধে।
ঘটনার সূত্রপাত ২০১৯ সালে, একটি বেসরকারি ডিজিটাল মার্কেটিং সংস্থার সঙ্গে চুক্তি করে নিউজ পোর্টাল চালু করে কুন্তল। একাধিক কর্মী নিয়োগ করা হয় ওই ওয়েব পোর্টালে। তবে প্রাপ্ত টাকা অনেকেই পাননি কাজ করে এমনটাই অভিযোগ ওই ওয়েব পোর্টালের কর্মরত সাংবাদিক সহ মার্কেটিং ম্যানেজমেন্ট টিমের। উপরন্তু ওই বেসরকারি সংস্থার মালিকের থেকে মায়ের চিকিৎসার নাম করে তিন লক্ষ টাকা ধার করেন কুন্তল।
বেসরকারি সংস্থার মালিক তিনি জানিয়েছেন, প্রথমদিকে কুন্তলের সাথে কাজ করতে কোন সমস্যা ছিল না। চুক্তি মাফিক সমস্ত কাজ চলত। সমস্যা সামনে আসে গত বছর পুজোর আগের সময় থেকে। শুরু হয় পেমেন্ট নিয়ে সমস্যা। ওয়েব পোর্টালে কর্মরত অনেক কর্মচারী দীর্ঘ দিন বেতন না পাওয়ার অভিযোগ তোলেন। বেতন আসত কুন্তল টাকা পাঠালে। গত বছর পুজোর আগের যে সমস্যার সময়কাল তিনি উল্লেখ করেছেন সেই সময়ই প্রথম ইডির রেড হয় পার্থর বান্ধবী অর্পিতার বিলাসবহুল আবাসনে।
আরও পড়ুন: বাড়িতে বসে এই অ্যাপেই জানতে পারবেন বাজেটের খুঁটিনাটি, কীভাবে ডাউনলোড, জানুন
ওই বেসরকারি সংস্থার মালিক প্রশান্ত সরকার বলেন, কর্মচারীদের পেমেন্ট নিয়ে সমস্যা ছিলনা প্রথম থেকে। পুজোর পরপরই সমস্ত সমস্যা শুরু হয়। তারপরে একদিন হঠাৎ কুন্তল ফোন করে তার থেকে ২ লক্ষ টাকা চান। মায়ের শরীর খারাপ চিকিৎসার জন্য সেই টাকার প্রয়োজন বলে জানান তিনি এবং তিনি কথা দেন খুব শীঘ্রই সেই টাকা ফিরিয়ে দেবেন। প্রশান্ত সরকারের কথায়, " আমি প্রথম দিকে কিছুটা হকচকিয়ে গিয়েছিলাম যখন কুন্তল দা আমার থেকে ২ লক্ষ টাকা চায়, কিন্তু যেহেতু উনি একজন গণ্যমান্য ব্যক্তি হিসাবে পরিচিত তাই সেই সময়ে আমি তাকে সেই টাকা দিয়ে দিই পরবর্তীতে আবারও এক লক্ষ টাকা চায় সে টাকাও তাকে নিজে গিয়ে দিয়ে আসেন। তবে পুরো টাকা এখনও পর্যন্ত ফেরত পাননি তারা।
খবরের জন্য যে সমস্ত সাংবাদিকদের নিয়োগ করা হয়েছিল তাদের অনেকেরই অনেক অনেক মাসের বেতন বাকি রয়েছে। একসময় ওই অফিসে কর্মরত এক সাংবাদিক তিনি জানান, ত্রিপুরার ভোটের সময় তাকে নিয়োগ করা হয় কাজে। তিনি খবর করতে এসে বুঝতে পারেন আসলে খবরের কিছু ব্যাপার নয় পুরো বিষয়টি ছিল শাসকদলের বিশেষ এক ক্যান্ডিডেট কে তোল্লাই দেওয়ার। তিনি যত মাস কাজ করেছেন সেই অনুযায়ী তার মোট বেতন হওয়ার কথা ছিল ৫৬ হাজার টাকা। কিন্তু তিনি তার পরিবর্তে পেয়েছেন মাত্র দশ হাজার টাকা। প্রাপ্ত টাকা চেয়ে কুন্তল কে ফোন করলে পেয়েছেন শুধু ভুয়ো ভাওতা।
ওই মহিলা সাংবাদিক বলেন, টাকার জন্য ফোন করলে কুন্তল বলতেন রাশিয়া ইউক্রেনের ছাত্র-ছাত্রীদের রাজ্যে ফেরানোর কাজে তিনি ব্যস্ত রয়েছেন। কখনো বলতেন জনদরদী কাজে তিনি ব্যস্ত পরবর্তীতে সময় পেলে তিনি ঠিক টাকা দিয়ে দেবেন। তবে সেই টাকা মেলেনি আজও। বেশিবার ফোন করায় নাম্বার করে দিয়েছিলেন রিজেক্ট লিস্টে।
নিয়োগ দুর্নীতির টাকা দিয়ে কুন্তল আরো কি কি কুকীর্তি করে রেখেছে তা সময়ের সঙ্গে আরো সামনে আসবে। তবে কুন্তলের এই জালিয়াতির চক্রের প্রতারণার শিকার হয়েছেন বহু মানুষ। এখন হুগলির বাসিন্দাদের মুখে মুখে ঘুরছে কুন্তল ও শান্তনুর কথা। কত মানুষের রক্ত জল করা পয়সা দিয়ে বিলাসবহুল ফ্লাট , অট্টালিকার বাড়ি, দামি কোম্পানির গাড়ি চড়ে ঘুরে বেড়াতেন।
রাহী হালদার
নিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।