হুগলি: শুরু হয়ে গেল ২০২৩ সালের মাধ্যমিক পরীক্ষা। গোটা রাজ্যের পাশাপাশি হুগলি জেলাতেও কমেছে মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীর সংখ্যা। হুগলি জেলাতে গতবারের তুলনায় এবার পরীক্ষার্থী অর্ধেক সংখ্যায় এসে দাঁড়িয়েছে। এই বছর হুগলিতে মোট মাধ্যমিক পরীক্ষা দিচ্ছে ২৯৮৫৯ জন। তার মধ্যে ছাত্র সংখ্যা ১৩০৮৫, ছাত্রী সংখ্যা ১৬৭৭৪ জন। গত বছরে মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ছিল ৬০৪২৮ জন। এই বছর পরীক্ষার্থীর সংখ্যা গত বছরের তুলনায় অর্ধেকের ও কম। পরীক্ষার্থী কমায় কমেছে পরীক্ষাকেন্দ্রের সংখ্যাও। গত বছর ২৪৩ টি পরীক্ষা কেন্দ্র ছিল। এই বছর মোট পরীক্ষা কেন্দ্র রয়েছে ১২৭ টি।
কেন এই ব্যাপকহারে পরীক্ষার্থীর সংখ্যা কমলও? এর নেপথ্যেও কি রয়েছে কারণ?
আরও পড়ুন: শহর বাড়ছে আতঙ্ক! এবার কলকাতায় অ্যাডিনোভাইরাসে মৃত্যু কিশোরীর
জেলা স্কুল পরিদর্শক মারফত খবর, ২০১৭ সালে শিক্ষা দফতর নিয়ম করে পঞ্চম শ্রেণিতে ভর্তি হওয়ার বয়স ন্যূনতম হতে হবে ১০ বছর। আগে ১০ বছরের কম বয়সি ছাত্রছাত্রীরাও ভর্তি হতে পারত ক্লাস ফাইভে। নতুন এই নিয়মের ফলে ১৭ সালে অনেকেই ১০ বছরের নীচে বয়স থাকার জন্য ক্লাস ফাইভে ভর্তি হতে পারেনি। ১৭ সালের ভর্তি হওয়া ব্যাচ এই বছর মাধ্যমিক পরীক্ষা দিচ্ছে তাই স্বভাবতই কমেছে পরীক্ষার্থীদের সংখ্যা।
জেলার বিভিন্ন স্কুলের শিক্ষক শিক্ষিকাদের সাথে কথা বলে উঠে আসে আরও একটি বিষয়। মধ্যশিক্ষা পর্ষদের স্কুলের শিক্ষক মহলের দাবি, অভিভাবক অভিভাবিকারা পর্ষদের স্কুলগুলিকে বাদ দিয়ে অন্যান্য বোর্ডের স্কুলে ছাত্র-ছাত্রীদের ভর্তি করছেন। বিশেষ করে ইংরেজি মাধ্যমের যে সমস্ত স্কুলগুলি রয়েছে আইসিএসসি সিবিএসসি বোর্ডের স্কুলগুলিতে নিজেদের ছেলেমেয়েদের ভর্তি করতে উৎসাহী হয়েছেন অভিভাবকেরা। ফলে স্বভাবতই মধ্যশিক্ষা পর্ষদের স্কুলের ছাত্র-ছাত্রীর সংখ্যা কমছে।
এই বছর মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীর সংখ্যা কমে যাওয়ার অন্য একটি কারণ করোনা মহামারিও। মহামারির জন্য স্কুল ছুটের সংখ্যা বেড়েছিল। হুগলি জেলার বিশেষ করে গ্রামাঞ্চল গুলিতে স্কুল ছুটের সংখ্যা অনেকটাই বৃদ্ধি পেয়েছিল করোনাকালে। নবম ও দশম শ্রেণির অনেক ছাত্ররাই স্কুলের পড়াশোনা ছেড়ে পরিবারের আর্থিক সহায়তায় লেগে পড়েছিল কাজে। পুরনো ছন্দের স্কুল ফেরার পরে শিক্ষক মহলের প্রচেষ্টায় ছাত্রছাত্রীদের স্কুলে ফিরিয়ে নিয়ে আসার চেষ্টা চলে। তবে স্কুল ছুট পড়ুয়ারা অনেকেই বিমুখ হয়েছেন স্কুল থেকে।
এই বিষয়ে কোন্নগর উচ্চ বিদ্যালয় ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক তড়িৎ ঘোষ বলেন, অন্যান্য বছর স্কুল থেকে মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীর সংখ্যা থাকতো ৫০ থেকে ৬০ জনের, এই বছর সেই সংখ্যা এসে দাঁড়িয়েছে ৩৬ জন। ২০১৭ সালে ভর্তি হয়েছিল প্রায় ৪০ জন। করোনার সময় স্কুল থেকে বিমুখ হয়েছে বাকি ছাত্র ছাত্রীরা। স্কুলের তরফ থেকে তাদেরকে স্কুলে নিয়ে আসার প্রচেষ্টা করা হয়েছিল। কিন্তু বর্তমানে তারা বাড়ির আর্থিক সমস্যার জন্য বিভিন্ন জায়গায় কাজ করছে।
রাহী হালদার
নিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।