হোম /খবর /হুগলি /
অকেজো দু'পা, পড়াশোনা বন্ধ নবম শ্রেণিতে! শ্যামলীর লড়াই এখন পরিবারের জন্য

Hooghly News: অকেজো দু'পা, পড়াশোনা বন্ধ নবম শ্রেণিতে! শ্যামলীর লড়াই এখন পরিবারের জন্য

X
জরির [object Object]

নবম শ্রেণীতে পড়ার সময় হঠাৎই দু'পা অকেজো, অর্থের অভাবে হয়নি চিকিৎসা, হাঁটতে ও স্কুলে যেতে চায় শ্যামলী

  • Hyperlocal
  • Last Updated :
  • Share this:

পুরশুড়া: অদম্য ইচ্ছাশক্তি ও কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমে যে প্রতিবন্ধকতাকে জয় করা সম্ভব, তার নজির রেখে চলেছেন পুরশুড়ার বড়দিগরুই গ্রামের একেবারে হতদরিদ্র পরিবারের শ্যামলী দোলুই। বয়স প্রায় ১৮ বছর। ছোট থেকে একেবারে সুস্থই ছিল। কিন্তু নবম শ্রেণিতে পড়ার সময় হঠাৎই পিঠে কুঁজ দেখা দেয়। দুটি পা ধীরে ধীরে অবশ হয়ে পড়ে। চলাফেরা করার ক্ষমতা একেবারেই হারিয়ে ফেলেন।

তারপর থেকেই পড়াশোনা বন্ধ হয়ে গেছে তাঁর। বাড়িতেই তিনি থাকেন। শ্যামলীর বাবা অষ্ট দোলুই দিনমজুরির কাজ করেন। তাও সব দিন কাজ পান না। কাজ না পেলে ঘরেই বসে থাকতে হয়। নিজেদের জমিজমা বলতে কিছুই নেই। মা মালতী দোলুই মানসিকভাবে অসুস্থ। শারীরিক সক্ষমতাও তেমন নেই। তিনিও ভাল হাঁটতে পারেন না। ফলে রান্নাবান্না থেকে শুরু করে বাড়ির সমস্ত কাজ করতে হয় বাবা অষ্ট দোলুইকেই। যেদিন দিনমজুরির কাজে যান সেদিন ভোরবেলা উঠে বাড়ির কাজ সেরে তাঁকে বের হতে হয়।

 

কিন্তু দিনমজুরির অনিয়মিত উপার্জনে দু'বেলা দু'মুঠো খাবারও ঠিকমতো যোগাড় হয় না তাঁদের। তাই বাবার পাশে দাঁড়িয়েছেন প্রতিবন্ধী শ্যামলী। সে বাড়িতে বসে বসে কাপড়ে পাথর বসানোর কাজ করে। শ্যামলী বলে, 'আমরা খুবই গরীব। বাবার তেমন উপার্জন নেই। তাই আমি বাড়িতে কাপড়ে জরির কাজ করি। এক ঠাকুমা আমাকে বাড়িতে কাপড় পৌঁছে দিয়ে যায়। কাজ শেষ হলে আবার নিয়ে চলে যায়। এক একটা কাপড় পিছু ৭০ টাকা পাই। ওই কাজ করতে আট দিন লেগে যায়।'

বাবা অষ্ট দোলুই বলেন, 'ও অনেক কষ্ট করে ওই কাজটা করে। তবুও যেটুকু পয়সা আছে সেটুকুই আমাদের কাছে অনেক। আমারও শারীরিক সক্ষমতা কমছে। তাই ওই টাকাটুকুও আমাদের অনেক উপকারে লাগে।' অষ্টবাবু আরও জানান, 'মেয়ে যখন প্রথম অসুস্থ হয়ে পড়ে তখন অনেক জায়গায় ডাক্তার দেখিয়েছিলেন। কিন্তু কিছু বিশেষ উপকার হয়নি। এমনকি পরে কলকাতার পিজি হাসপাতালে মেয়েকে নিয়ে গিয়েছিলেন। চিকিৎসকরা নাকি জানিয়েছিলেন আট হাজার টাকা খরচ হবে। তাও হাঁটাচলার ক্ষমতা ফিরে পাবে কিনা নিশ্চয়তা নেই। ওই টাকাটা যোগাড় করাও তাঁদের কাছে দুঃস্বপ্নের ব্যাপার ছিল। তাই আর মেয়ের চিকিৎসা করে উঠতে পারেননি।'

আরও পড়ুন,  অপেক্ষা আর ১ দিন, তৈরি হচ্ছে মহালক্ষ্মী যোগ! 'ভাগ্যবদল' হবে এই ৪ রাশির

আরও পড়ুন, বিরোধী নয়, পঞ্চায়েতে এই কাঁটাই বিঁধবে তৃণমূলকে? আশঙ্কা খোদ মমতার গলায়

প্রতিবেশী যুবক কাজি আমানত বলেন, 'ওরা খুবই ভাল মানুষ। কিন্তু দারিদ্র আর অসুস্থতায় খুব সমস্যার মধ্যে রয়েছেন। নিজের প্রতিবন্ধকতা সত্ত্বেও শ্যামলী যেভাবে বাবা-মায়ের পাশে দাঁড়িয়েছে তা সত্যিই ভাবা যায় না। বাড়িতে বসে বসেই সে তার সাধ্যমত উপার্জনের পথ খুঁজে নিয়েছে। এটা খুবই ভাল লাগছে। আমরা পাড়ার মানুষজন ওনাদের পাশে আছি। শ্যামলীর প্রতিবন্ধী কার্ড করানোর জন্য আমরা যোগাযোগ করেছি। সেই কার্ড তৈরি হয়ে গেলে ওদের অনেকটাই আর্থিক সুরাহা হবে।'SUVOJIT GHOSH

Published by:Suvam Mukherjee
First published:

Tags: Hooghly