#হুগলি: কোন্নগর ঘোষাল বাড়ির পুজো শেষ হল। রীতি মেনে দশমীতে এয়ো স্ত্রীরা পান্তা ইলিশ খেয়ে প্রতিমা বরণ করেন।দমশীর সকাল থেকে শুরু হয় ঠাকুর বরনের তোড়জোড়।দুপুরে পরিবারের সবাই উপস্থিত হয়ে ঠাকুর বরনে অংশ নেন।ঠাকুর বরণ শেষে হয় সিঁদুর খেলা।এরপর গঙ্গার ঘাটে হয় প্রতিমা বিসর্জন।
ঘোষাল বাড়িতে নরসিংহ মূর্তি পুজো হয়।তবে এবারই প্রথম এই পুজো হবে কিনা তা নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছিল। ঘোষালদের দালানে ঠাকুর তৈরি করেন মৃৎশিল্পী। চারদিনের পুজো শেষে দশমীর দিন সকালে হয় বরন। ঘোষালদের বাড়ির এয়ো স্ত্রীদের দশমীর দিন বরণ করার রীতি আজও রয়েছে। আলতা সিঁদুর পরে পান্তার সঙ্গে ইলিশ খেয়ে বরণ করে স্বামীর মঙ্গল কামনায়। ঠাকুরের কাছে প্রার্থনা করে এয়ো তার আমিষ খাওয়াটা যেন বন্ধ না হয়।
এর পিছনেও রয়েছে ইতিহাস। একসময় স্থানীয় বাঘখালে ঘন জঙ্গল ছিল।সেখানে বাঘ থাকত।তা থেকেই ওই জায়গার নাম হয় বাঘ খাল।বাঘখালে জোড়া নৌকায় চাপিয়ে মাঝ গঙ্গায় নিয়ে গিয়ে বিসর্জন দেওয়া হত প্রতিমা।রাতে সেই বিসর্জন দেওয়ার সময় একজনকে বাঘে টেনে নিয়ে যায়।তারপর থেকে দিনের আলোয় বিসর্জন দেওয়া হয়।এক সময় বড়ে গুলাম আলি, হেমন্ত মুখোপাধ্যায়রা ঘোষাল বাড়িতে গান গেয়ে গেছেন।
শোনা যায় সম্রাট আকবরের কাছ থেকে সনদ পেয়ে পেয়ে আশুতোষ ঘোষাল কোন্নগর অঞ্চলে জমিদারি পত্তন করেন।সে সময় থেকে দুর্গা পুজো শুরু হয়।সেসময় বারোয়ারী পুজোর প্রচলন ছিল না তাই বাড়ির পুজোকেই বারোয়ারীর রূপ দিতে ব্রিটিশ সরকার সাড়ে সাত শ টাকা অনুদান ধার্য করেছিল ঘোষালদের পুজোর জন্য। দীর্ঘ দিন সেই টাকা পেয়ে এসেছেন ঘোষালরা।সেই টাকা ঘোড়ার গাড়িতে করে ট্রেজারি থেকে নিয়ে আসা হত। পাড়া শুদ্ধ সবাইকে খাইয়ে পুজোর খরচ করেও টাকা বেঁচে যেত সেই সময়। এখন সাড়ে সাত শ টাকার মূল্য কমেছে। তাই বিগত কয়েক বছর ধরে সেই টাকা আর নিয়ে আসেন না ঘোষালরা।পরিবার বড় হয়েছে,অনেকেই বাইরে থাকেন, তবু পরিবারের সবার সঙ্গে মিলিত হতে হাজির হন পুজোর সময়।ঐতিহ্য আর পরম্পরার টানে।
রাহী হালদার
নিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।
Tags: Durga Puja 2022, Hooghly, Konnagar