#কলকাতা: লকডাউনে কাহিল গোটা দেশ। সকলের মনে চিন্তা,ভয়, উদ্বেগ। অনেকটা ফাঁকা সময় আর মনের মধ্যে এক রাশ দুশ্চিন্তা। কীভাবে ইতিবাচক থাকতে হয়, সেটাই শিখিয়ে চলেছেন অভিনেত্রী শ্রাবন্তী। নায়িকার কথায়, 'আমি যতটা সম্ভব পজিটিভ থাকার চেষ্টা করি। জীবন একটাই, সেটাকে দুঃখ করে, আক্ষেপ করে শেষ করে দিলে চলবে না।' সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রচন্ড একটিভ নায়িকা। নিত্য নতুন মজার সব ভিডিও পোস্ট করছেন। সময়টাকে সৃজনশীলভাবে কাজে লাগাচ্ছেন শ্রাবন্তী। সোশ্যাল মিডিয়ার কথা উঠতেই শ্রাবন্তী বললেন, 'বাড়িতে বসে কী করব বলো তো। সারাটা দিনই তো ফাঁকা। তাই বিনোদনের মাধ্যমে মানুষের মধ্যে সচেতনতা ছড়ানোর চেষ্টা করছি। বাড়িতে যখন থাকতেই হবে আক্ষেপ না করে বরং নতুন কিছু করুন। অন্য কিছু করুন। এই বার্তাই দেওয়ার চেষ্টা করছি আমি। বাচ্চাদের মত কথা বলে দুটো ভিডিও বানিয়েছি। আসলে আমার বাচ্চা খুব পছন্দ। এরকম ভিডিও বানাতে আমার খুব ভাল লাগে।'
লকডাউনের ঠিক আগে কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায়ের ছবি 'কাবেরির অন্তর্ধান'-এর কাজ করছিলেন শ্রাবন্তী। এই ছবিতে প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়ের বিপরীতে অভিনয় করছেন নায়িকা। শিশুশিল্পী হিসেবে কাজ করেছেন তিনি, তবে নায়িকা হিসেবে এই প্রথম প্রসেনজিতের সঙ্গে কাজ করলেন তিনি। শ্রাবন্তী-প্রসেনজিতের জুটির প্রথম ছবি দেখার জন্য মুখিয়ে রয়েছেন দর্শক। তবে লকডাউনের জন্য ছবির ডাবিং এখনো শেষ হয়নি, জানালেন শ্রাবন্তী। নায়িকার আরও দুটো ছবির কাজও অসম্পূর্ণ রয়েছে। বনি সেনগুপ্তর সঙ্গে 'আজব প্রেমের গল্প' এবং 'বিক্ষোভ' নামে একটি বাংলাদেশের ছবির কাজ বাকি রয়েছে। ডাবিং এর পাশাপাশি 'বিক্ষোভ'-এর একটি গানের শ্যুটিংও এখনো বাকি।
করোনার জন্য কপালে ভাঁজ রয়েছে। তবে সচরাচর এতটা বাড়িতে সময় পান শ্রাবন্তী। তাই সেটাও উপভোগ করছেন তিনি। নায়িকার বাড়ি এখন এক কথায় জমজমাট। দিদি, জামাইবাবু বর, ছেলেকে নিয়ে মন্দ কাটছে না। শ্রাবন্তী বললেন, ' রাতে শোয়ার আগে রোজ এটা ভেবে ক্লান্ত হয়ে যাই যে, কাল আবার রেস্ট নিতে হবে। এটাই যেন একটা বড় কাজ। তাও সকলে মিলে আছি, সময় কেটে যাচ্ছে। ঘুম থেকে সকলেই দেরি করে উঠছি। তারপর চা খেতে খেতে প্রচুর আড্ডা হয়। সকলে মিলে রান্নাবান্না করি। সিনেমা দেখা, ভিডিও করা এসব তো রয়েছে। আর হ্যাঁ সারাদিন খবর দেখছি, এই আশায় যদি কোনো সুখবর মেলে। সবকিছু স্বাভাবিক হয়ে যায়। তার মাঝেই ঘর পরিষ্কার করা, একটু-আধটু ঝারপোঁছ করা, এসব চলছে। বিকেলে কমপ্লেক্সের মধ্যে আমার শারমেও দের নিয়ে একটু হাঁটতে যাই। প্রতিদিন ঠাকুরের কাছে প্রার্থনা করছি যাতে তাড়াতাড়ি সবকিছু ঠিক হয়ে যায়। আমার মত অনেকেই ওয়ার্কিং, তাঁদের নিশ্চয়ই আমার মতোই কাজ ছাড়া পাগল পাগল লাগছে।'
বাড়িতে পরিচারিকারা আসছেন না। তাই সব দায়িত্ব শ্রাবন্তির কাঁধে। তবে রোশান তাঁকে প্রচুর সাহায্য করছেন। নায়িকা জানালেন,'মুখে মাস্ক পরে, বাড়ি থেকে বেরিয়ে জরুরি জিনিসগুলো জিনিসগুলো নিয়ে আসছে রোশান। ও আমাকে প্রচুর সাহায্য করে।' এমনিতে সময় পান না শ্রাবন্তী। এখন বেশ কিছুটা সময় মেলায়, নিজের কুকিং স্কিল গুলো গুলো ঝালিয়ে নিচ্ছেন তিনি। নেট দেখে নিত্যনতুন রান্না করছেন শ্রাবন্তী।
বাড়িতে একেবারেই মন টিকছে না শ্রাবন্তির ছেলের। বন্ধুদের সঙ্গে দেখা হচ্ছে না। তাই তার বেজয় মন খারাপ। ছেলেকে সামলাতে বেশ বেগ পাচ্ছেন নায়িকা। শ্রাবন্তী বললেন, 'আমার ছেলের মতো যাঁরা একেবারেই বাড়িতে থাকতে পারছেন না, তাঁদেরকে বলবো, একটু ধৈর্য ধরুন। ধৈর্য ধরতেই হবে। বাড়িতে না থাকলে এই রোগ আটকানো সম্ভব নয়। সকলেরই অবসাদ হচ্ছে, আমিও যে খুব ভালো আছি তেমনটা নয়। কিন্তু এই রোগের এই একটাই ওষুধ। তাই এটা মেনে নিতে হবে।'
পিছিয়ে পড়া মানুষদের পাশে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছেন শ্রাবন্তী। তিনি বললেন, 'আমি আমার মতো চেষ্টা করছি, যতটুকু করা যায়। রোশান সমস্ত বাজার করলো। কলকাতা পুলিশের সাহায্য নিয়ে আমরা সকলকে চিকেন ভাত খাওয়ালাম। একজন বুড়ো মানুষ খুশি হয়ে আশীর্বাদ করলেন। তাঁর মুখটা দেখে আমার খুব ভালো লাগলো। এসব ছবি আমি কোথাও পোস্ট করিনি। আমি প্রচার চাই না, এই আশীর্বাদ টুকুই আমার প্রাপ্য।
ARUNIMA DEY
নিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।