#কলকাতা:কোভিডের কারণে গত কয়েক মাস ধরেই স্কুলের প্রধান ফটকটা এভাবেই বন্ধ। কৃষ্ণনগরের সেন্ট জন হাই স্কুল। সেদিনও বন্ধই ছিল কৃষ্ণনগরের সেন্ট জন স্কুলের মূল ফটক। কিন্তু কৃষ্ণনগর এলে একবার না একবার এই স্কুলের সামনে আসতেনই বাঙালির অতি প্রিয় ফেলুদা।ড্রাইভারকে গাড়ির গতি কমিয়ে দিতে বলে জানলার কাঁচ নামিয়ে অপলক দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকতেন স্কুল বাড়িটার দিকে। সত্যজিতের অপু হয়তো বা মনে মনে ফিরে যেতেন তাঁর ফেলে আসা ছেলে-বেলার দিনগুলোয়। মফস্বল শহরের এই স্কুলেই তো প্রথম পাঠ বাঙ্গালীর অতি প্রিয় ক্ষিদদার। কোন না কোন কাজে কৃষ্ণনগর এলে ঠিক সময় বার করে সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় তাই চলে আসতেন স্কুলের সামনে।বাবা মোহিত কুমার চট্টোপাধ্যায়ের পেশা পরিবর্তনের কারণে কৃষ্ণনগরের সেন্ট জন স্কুল শিক্ষার পাঠ শেষ করা হয়নি সৌমিত্র বাবুর। স্থানীয় মানুষজনের বক্তব্য, বড় জোর পঞ্চম কী ষষ্ঠ শ্রেণী পর্যন্ত এই স্কুলে পড়াশোনা করেছিলেন কিংবদন্তি। তবু জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত কৃষ্ণনগর সেন্ট জন স্কুলের প্রতি সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের টান ছিল অমোঘ।বয়সের তুলনায় সৌমিত্র বাবুর থেকে কিছুটা ছোটই হবেন। কিংবদন্তি অভিনেতার বন্ধু স্থানীয় কৃষ্ণনগরের নাট্যকর্মী শিবনাথ ভদ্র বলছিলেন,"একবার তো কৃষ্ণনগরের নাট্যমেলায় এসে ফেরার পথে স্কুলের সামনে গাড়ি থেকে রাস্তায় নেমেও পড়েছিলেন। স্কুলের মূল ফটক বন্ধ দেখে পাশের ছোট গেট দিয়ে ঢুকতে গিয়েও কী ভেবে যেন দাঁড়িয়ে পড়লেন। পাশের ভাঙা পাঁচিলটা দেখিয়ে সেদিন সৌমিত্র বাবু বলেছিলেন, জানো এটার উপর উঠে বসে থাকতাম আমরা।"বন্ধ স্কুল গেটের সামনে কিছুটা সময় দাঁড়িয়ে থেকে গাড়িতে উঠে ছিলেন সৌমিত্র বাবু। গাড়ি চলতে শুরু করেছিল নিজের নিয়মে। কৃষ্ণনগর থেকে কলকাতার অভিমুখে। রাস্তার বাকি সময়টা আর কথা বলেননি সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়। হয়তো নিজের সঙ্গেই ডুবে গিয়েছিলেন স্মৃতির সরণীতে। কিংবদন্তি টাইম মেশিনে চড়ে ফিরে গিয়েছিলেন তার ফেলে আসা ছেলে-বেলার দিনগুলোতে। কৃষ্ণনগরই যে জানে কিংবদন্তির প্রথম সবকিছু।
Published by:Akash Misra
First published:
নিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।