#কলকাতা:নার্স মানে পেল্লাই ইনজেকশন নিয়ে ধেয়ে আসছেন। বা বেজায় ধমক দিচ্ছেন। কিংবা যন্ত্রণায় কাতর রোগীর মাথায় নরম হাত রাখছেন। ছবির পর্দায় নার্সদের খানিক এমনটাই আমরা দেখে এসেছি। আন্তরজার্তিক নার্সেস দিবসে ছবিওয়ালারা তাঁদের কেমন গোড়েছেন একবার দেখে নেওয়া যাক।ধপধপে সাদা পোশাক। আটোসাটো করে বাঁধা চুল। সাজগোজের লেশ মাত্র নেই। নেই বাহারি জামাকাপড়। তবুও কেমন যেন স্নিগ্ধ। অসুখে কাবু হয়ে হাসপাতের চৌহদ্দি পার করলেই, তাঁরা আমাদের হাত ধরেন। অবিরাম সেবা করেন। হাসপাতালে ভর্তি হলে আমরা দিনে ঠিক কতবার কারণে-অকারণে তাঁদের ডাকি বলুন তো। নার্স, সিসটার যাই বলে সম্বোধন করি, তাঁরা আমাদের নিজের কেউ না হয়েও ভারী আপনজন। আন্তর্জাতিক নার্সেস দিবসে সেলুয়েডের নার্সদের সঙ্গে পরিচয়টা সেরে ফেলা যাক।৭০ mm-এর পর্দার নার্সদের কথা বলতে গেলে সবার আগে মনে পড়ে যায় রাধাকে। ‘দীপ জ্বেলে যাই’-এর সুচিত্রা সেন। রাধা মানসিক রোগীদের সেবা করতে করতে উজার করে দেয় নিজের সবটুকু। বন্ধু কিংবা প্রেমিকা হয়ে সুস্খ করে তোলে রুগীদের। সুস্থ হয়ে নিজের জীবনে ফিরে যায় তাঁরা। রাধাকেও ভুলে মনে থাকে না তাদের। ছবির শেষে রাধা মানসিক রোগে আক্রান্ত হয়। পেশেন্টের সেবা করতে গিয়ে মানসিক ভাবে জড়িয়ে পড়ে সে। এমন এক নার্সের ভূমিকায় সুচিত্রা সেন অনবদ্য। তাঁর সাবলীল অভিনয় দর্শকের চোখে জল এনে দেয়।
‘দীপ জ্বেলে যাই’এর পরিচালক অসিত সেন ছবিটিকে হিন্দিতেও বানিয়েছেন। হিন্দি ছবির নাম খাঁমোশি। নার্সের চরিত্রে ওয়াহিদা রহেমান। রাজেশ খান্না- ওহাহিদা রহেমানের পেসেন্ট নার্স রসায়ন পর্দায় ম্যাজিক সৃষ্টি করে। ছবিটি বেশ জনপ্রিয় হয়। তবে এই ছবির গানের ঘোর থেকে এখনও বেরোতে পারেননি দর্শক।
‘দিল অপনা প্রিত পারাই’ ছবিতে মীনা কুমারী নার্সের ভূমিকায় অভিনয় করেছেন। নার্সদের মধ্যে যে সহজাত মাতৃত্ব থাকে, তা সুন্দর ভাবে ফুঁটিয়ে তুলেছেন তিনি। ‘প্রেম পত্র’ ছবিটিতে নার্সের চরিত্রে সাধনা বেশ ভাল। উত্তম-সুচিত্রা অভিনীত ‘সাগরীকা’ছবিটির রিমেক বলা চলে ‘প্রেম পত্র’। বাংলা ছবিটি যে বেশি মনে দাগ কাটে তাতে সন্দেহ নেই।অমিতাভ বচ্চনের ‘অগ্নিপথ’ছবিটিতে অ্যাকশন-ড্রামা, প্রতিশোধ, প্লট, সাবপ্লটে ভর্তি। তারই মধ্যে নার্স মেরি ও বিজয় দিনানাথ চৌহনের মিষ্টি প্রেম, দর্শকের মনে আরাম দেয়। নার্স হিসেবে বেস মানিয়েছিল মাধবীকে।নার্স, ডাক্তার, রোগী এই কথা গুলো বললেই একটা হাসি মুখ, দু’টো উজ্জ্বল চোখ ভেসে ওঠে। করোনার এই মৃত্যু মিছিলেও সে যেন আমাদের দিকে তাঁকিয়ে বলছে বাবু মশাই আই হেট টিয়ার্স। আনন্দ। রাজেশ খান্নার মতো অবাধ্য রোগীকে সামলাতে পারেন ললিতা পওয়ারের মতো একজন শক্ত মেট্রনই। ছবিতে তাঁদের দু’জনের সব ক’টা দৃশ্যই আইকনিক।নার্স বা সিসটার বলতে যে চিত্রটা আমদের চোখের সামনে ভেসে ওঠে, সেটাকে ভেঙে চুরমার করে দিয়েছেন গুজারিস-এর ঐশ্বর্য রাই বচ্চন। ডিনাইর পোশক, ট্রেন্ডি গয়না পরেন তিনি। লাল লিপস্টিকে মোড়া লাস্যময়ী ঠোঁট দু’টো দেখে তাঁকে নার্স সচর আচর কেউ বলবেন না।নার্স বা সিসটারদের কথা যখন হচ্ছে তখন ব্রাদাররা বাদ যান কেন। ছবিওয়ালারা তাঁদেরকে নিয়েও ছবি বানিয়েছেন। দোস্তানা-র দেশি গার্লকে শুধু মনে রাখলে হবে। একবার মনে করে দেখুন তো অভিষেক বচ্চনের পেশা কী ছিল? তিনি ছিলেন পুরুষ নার্স। তবে খুব মহত উদ্দেশ্য নিয়ে এই পেশা বেছে নিয়েছিলেন তিনি, এমনটা নয়।কোবিড 19 রুখতে দিন রাত লড়ে যাচ্ছেন ডাক্তার, নার্সরা। নিজের জীবন বিপন্ন করে চলাচ্ছেন সংগ্রাম। মহামারীর সময় তা হয়তো আমাদের চোখে খানিক বেশি পড়ছে। তবে গোটা বছরই প্রাণ হাতে নিয়ে এই কাজটাই করে থাকেন তাঁরা। শুধুমাত্র আন্তর্জাতিক নার্সেস দিবসে নয়। সেলুলয়েডের পর্দায় নয়। তাঁদের প্রতি কৃতজ্ঞ তাকতে হবে সারা জীবন।
Published by:Akash Misra
First published:
নিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।