#মুম্বই:কোনও কোনও সময়ে বেকারত্বকে শুধুই মেনে নিতে হয় ভবিষ্যতের জন্য উৎকণ্ঠায় না থেকে। আনন্দ ভাস্কর যখন স্ত্রীর প্রেরণায় চাকরি ছেড়ে গান বাঁধায় মন দিয়েছিলেন, তখন সামনে কোনও ভবিষ্যতই ছিল না। কীভাবে সঙ্গীত জগতে পা রাখবেন তাও জানা ছিল না। শুধু অপার বিশ্বাস ছিল নিজের উপর।
মির্জাপুর সিজন টু-র সাফল্যের পর হঠাৎ তুবড়ির গতিতে এসেছে সাফল্য। "মজার ব্যাপার কি জানেন, অনেকেই ভাবছেন এটা আমার প্রথম কাজ। কিন্তু তা নয় একেবারেই। যাই হোক, এখন সবাই নামটা অন্তত জানতে পারছে। " বললেন আনন্দ।
কিন্তু নিজের কৃতিত্ব নয়। পুরোটাই তাঁর স্ত্রীকে ডেডিকেট করেছেন আনন্দ। "বলতে পারেন, আমি মিউজিক ডিরেক্টর হয়েছি আমার স্ত্রীর অদম্য উৎসাহের জন্য। না হলে হয়ত একজন কর্পোরেট চাকুরিজীবী হয়েই জীবন কাটত। যেদিন ও আমার কাছে এসে বলল, "ডোন্ট ওয়রি, আই উইল পান দ্য ফ্যামিলি আনটিল ইউ বিকাম আ সাকসেসফুল কম্পোজার। এখনও কানে বাজে ওর কথাগুলো!" বলতে বলতে চিকচিক করে উঠল চোখের কোণ।
কর্ণাটকি শাস্ত্রীয় সঙ্গীতের ট্রেনিং শেষ করে হিন্দুস্থানী শাস্ত্রীয় সঙ্গীতে দীক্ষা নিতে শুরু করেন তিনি। অনেক গুরুর কাছেই শিখেছেন তিনি। পাশাপাশি পপ, জ্যাজ, হিপহপ সঙ্গীতেও সমান আগ্রহ ছিল তাঁর। চর্চা করতেন নিয়মিত। 2015 সাল থেকে বিজ্ঞাপনের জিঙ্গল তৈরি করতে শুরু করলেন। হাজারেরও বেশি কাজ করেছেন তিনি। কাজ করেছেন চারটি বড়পর্দার ছবিতে। বাগী-টু তে প্লেব্যাক গেয়েছিলেন। গানটা সুপারহিট হলেও তাঁর নাম কেউ জানতে পারল না। গেয়েছিলেন মিশন মঙ্গল ছবিতে সাবাশিয়াঁ গানটিও।
কিন্তু মির্জাপুর সিরিজের প্রথম সুযোগ পেলেন দশ দশটি গান কম্পোজ করার। মুন্না rap টাও তিনি নিজেই করেছেন।
" আমি এর জন্য এ আর রহমান স্যরের প্রতি কৃতজ্ঞ। ওঁর সঙ্গীত আমি একলব্যের মতো অনুসরণ করি। শেখার চেষ্টা করি। আমি মনে করি, প্রতিভার আগে ডেজিকেশন জরুরি। কীভাবে নিজেকে সঁপে দেবেন, আত্মসমর্পণ করবেন, তার উপরেই দাঁড়িয়ে আছে সাফল্যের মনুমেন্ট। " জানালেন আনন্দ ভাস্কর।
পাশাপাশি চালিয়ে যাচ্ছেন নিজের ব্যান্ড 'আনন্দ ভাস্কর কালেকটিভ'। যখন কিছুই ছিল না, তখন এই ব্যান্ডই ছিল জীবনের মূলমন্ত্র। আজও শিকড়চ্যুত হইনি।" স্বীকার করলেন তিনি।
সামনে অনেক কাজ। দম ফেলার সময় নেই। একটি বড়পর্দার ছবির মিউজিকে হাত দিয়েছেন। আবার কাজ শুরু করলেন তেলুগু ও মালয়ালম ইন্ডাস্ট্রিতে। কাজ করছেন 'বম্বে বেগম' নেটফ্লিক্স সিরিজেও।