#নয়াদিল্লি:নাম আর্চি সিং। বয়স মাত্র ২২ বছর। এই প্রজন্মের আরও অনেকের মতোই সোশ্যাল মিডিয়ায় দারুণ ভাবে সক্রিয় থাকেন তিনি। তাঁর ইনস্টাগ্রাম হ্যান্ডেলে চোখ রাখলে দেখা যায় নানা মুহূর্তের সম্ভার। যেখানে কখনও বা অনাবৃত কাঁধে লাল-পাড় সাদা শাড়ির আঁচল ফেলে, তৃতীয় নয়ন নিয়ে দেবীর রূপে ধরা দেন আর্চি। কখনও বা পার্বত্য প্রদেশে কলরোল তুলে বয়ে যাওয়া নদীতীরে তাঁকে দেখা যায় বিকিনির সাজে!
জোর গলায় সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন আর্চি- তাঁকে মেয়ে বলেই গণ্য করতে হবে! প্রথমত, তিনি ভিতর থেকে নিজেকে মেয়ে বলে মনে করেন, সেই নারীসত্ত্বারই জয়গান করে থাকে তাঁর পোশাক এবং প্রসাধনী। দ্বিতীয়ত, অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে তিনি পুরুষ থেকে নারীতে রূপান্তরিত হয়েছেন, সে-ও প্রায় অনেক দিনই, এর পরেও তাঁকে নারী হিসেবে মেনে না নেওয়ার তো কোনও কারণ থাকে না!
যদিও প্রথাগত সৌন্দর্য প্রতিযোগিতার বিচারকেরা সে কথায় আমল দেওয়ার প্রয়োজন বোধ করেননি। আর্চি জানিয়েছেন যে একবার এক সৌন্দর্য প্রতিযোগিতায় নাম দিতে গেলে তাঁকে ফিরিয়ে দেওয়া হয়। ওই বিচারকরা তাঁকে ট্রান্সজেন্ডারের বেশি আর কিছু ভাবতে চাননি! কিন্তু নিজগুণে এই আর্চিই মিস ট্রান্স ইন্ডিয়ার তকমা জয় করে নিয়েছেন। এ বার কলম্বিয়ায় যে মিস ইন্টারন্যাশনাল ট্রান্স সৌন্দর্য প্রতিযোগিতার আসর বসছে, সেখানে অংশগ্রহণ করতে চলেছেন তিনি।
যদিও এই লড়াই সহজ ছিল না। আর্চির কথায়- একেবারে ছোট থেকেই তাঁর নিজেকে মেয়ে ছাড়া অন্য কিছু মনে হয়নি। তাই ১৮ বছর বয়সে এসে সব দ্বিধা ত্যাগ করেন তিনি, নিজের ওরিয়েন্টেশনের কথা জানিয়ে দেন পরিবারকে। আর্চির সৌভাগ্য যে তাঁর পরিবার ব্যাপারটাকে মেনে নিয়ে লড়াইতে তাঁর পাশেই থাকে।
বাকিটা আপাতত ইতিহাস। মডেলিংয়ের দুনিয়ায় নতুন বাঁক তৈরি করা আর্চি এ বার বিশ্বদরবারে তাঁর মতো মানুষদের গল্পটা বলতে চান! তিনি এক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সঙ্গে হাত মিলিয়ে ট্রান্সজেন্ডারদের উন্নতিকল্পে যে কাজ শুরু করেছিলেন, সেটাই জিততে পারলে আরও পোক্ত হবে বলে দাবি তাঁর!