#কলকাতা: সব কাজ কী আর শেষ হয়? হয়তো হয় না, যে মানুষটি ছিলেন অভিনয়ের জন্য পাগল, যেই মানুষটি হাসপাতালে যাওয়ার আগেও শ্যুটিং ফ্লোরে নিয়মিত হাজিরা দিয়েছেন, সেই মানুষটি এতদিন যা দিয়েছেন ভারতীয় চলচ্চিত্র তা অপরিসীম ৷ আর তাই তো তাঁর চলে যাওয়াতে অসম্পূর্ণ কাজগুলো আরও বেশি বেশি করে আপন হয়ে উঠবে ৷১৭ মার্চ ৷ করোনার আবহের আগে তখনও বন্ধ হয়নি ছবির শ্যুটিং ৷ ঠিক সেই সময় শ্যুটিং করছিলেন সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় ৷ ছবির নাম ‘অভিযান’৷ অভিনেতা ও পরিচালক পরমব্রত চট্টোপাধ্যায় এই নামেই তৈরি করছিলেন সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের বায়োপিক ৷ তবে করোনার কারণে ছবির শ্যুটিং আটকে যায় ৷ তবে ফের শ্যুটিং শুরু হয় জুলাইয়ের শেষ সপ্তাহে ৷ শ্যুটিং ফ্লোরে মাস্ক পরেই নিয়মিত উপস্থিত থাকতেন সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় ৷ লাইট, অ্যাকশন, সাউন্ডের আওয়াজে সব কিছু ভুলে তিনি পরিচালকের বাধ্য অভিনেতা ! এই ছবির শ্যুটিং শেষ করে যেতে পেরেছেন সৌমিত্র ৷ অভিযান ছবিতে সৌমিত্রের চরিত্রে দেখা যাবে যিশু সেনগুপ্তকে ৷ তবে বাকি রয়ে গেল তাঁকে নিয়ে বানানো এক তথ্যচিত্র ৷ এই তথ্যচিত্র রয়ে গেল অসম্পূর্ণ-ই !
এক সাক্ষাৎকারে সৌমিত্র বলেছিলেন, অপুর সংসার ছবিতে প্রথমবার নাকি সৌমিত্রকে নিতেই চাননি সত্যজিৎ রায় ৷ পরে অবশ্য সৌমিত্রকেই সবচেয়ে পছন্দ হয় তাঁর ৷গল্পের বই থেকে সোজা যেন সিনেমার পর্দায় এসে দাঁড়ান সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় ৷ সত্যজিতের তৈরি ফেলুদা চরিত্র যেন তাঁকে ভেবেই লিখেছিলেন ৷ সত্যজিতের আঁকা ফেলুদার ইলাস্ট্রেশনও অবিকল যেন সৌমিত্রের মতোই ৷ তাই তো বাঙালি সৌমিত্র ছাড়া ফেলুদা হিসেবে কাউকেই মানিয়ে নিতে পারেন না ৷সিনেমাটা বড্ড ভালোবাসতেন তিনি ৷ তাই হয়তো করোনা কালেও শ্যুটিং ফ্লোরে যাওয়ার জন্য ছটফট করতেন ৷ এই বয়সেও ভালো ছবিতে অভিনয় করার জন্য খিদে ছিল ষোলোয়ানা ৷ তাই তো এই বয়সেও একের পর এক বক্স অফিসে সুপারহিট সব ছবি ৷ ‘বেলাশেষে’, ‘ময়ূরাক্ষী’, ‘বসু পরিবার’, ‘সাঁঝবাতি’, ’ তার প্রমাণ ৷সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের প্রয়াণে স্বাভাবিকভাবেই ভারতীয় সিনেমার এক অধ্যায়ের শেষ ৷ বাংলা সিনেমার অপূরণীয় ক্ষতি ৷
নিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।
Tags: Soumitra Chatterjee