#ওঙ্কার সরকার, কলকাতা: একটিই ঘর৷ তাতে চারজনের বাস৷ এই ঘরেই লালিত হয়েছে ভাই বোনের জীবনে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার স্বপ্ন৷ যে স্বপ্নের অর্থ শুধু জীবনে অর্থ উপার্জন নয়, বরং নিজের মতো দুঃস্থ পড়ুয়াদের পাশে দাঁড়ানোর সংকল্প৷
ভবানীপুরের ৪বি মাধব চ্যাটার্জী লেনের এই এক ফালি ঘরের বাসিন্দা সাথী শুক্লা এবার ৪৯০ নম্বর পেয়ে উচ্চ মাধ্যমিকে নবম স্থান দখল করেছে৷ এবারের উচ্চ মাধ্যমিকের মেধা তালিকায় জায়গা করে নিয়েছে মোট ২৭২ জন ছাত্রছাত্রী৷ কিন্তু নিজের জীবনযাপনের লড়াইয়ের জন্যই তাদের মধ্যে আলাদা করে উজ্জ্বল সাথী৷
আরও পড়ুন: পাশের হারে শীর্ষে পূর্ব মেদিনীপুর! কলকাতার ফলাফল কেমন? চমকে দেওয়া রেজাল্ট...সাথীর বাবা সন্তোষ শুক্লা হাওড়ার একটি সুতোর দোকানে কাজ করেন৷ তিনি পরিবারের একমাত্র রোজগেরে৷ সাথীর দাদা বিএসসি নিয়ে পড়ছে৷ মা গৃহবধূ৷ সামান্য আয়ে চার জনের সংসার চালিয়ে সাথীর জন্য আলাদা করে গৃহশিক্ষক রাখা সম্ভব হয়নি সন্তোষবাবুর পক্ষে৷ স্কুলের শিক্ষকদের সহযোগিতা এবং নিজের অদম্য জেদে ভর করেই উচ্চ মাধ্যমিকের মেধা তালিকায় জায়গা করে নিয়েছে খালসা হাইস্কুলের বাণিজ্য বিভাগের ছাত্রী সাথী৷ সাথীর প্রথম ভাষা ছিল ইংরেজি৷
আরও পড়ুন: ঐতিহাসিক মেধাতালিকা, উচ্চমাধ্যমিক ফলাফলে প্রথম দশে ২৭২ জন! দেখুন কোন জেলা এগিয়েপরীক্ষার ফল ঘোষণার পরই তাই সাথীর পরিবার এবং প্রতিবেশীদের মধ্যে খুশির হাওয়া৷ কতটা প্রতিকূল পরিস্থিতিতে সাথী পড়াশোনা করেছে, সেই কাহিনি সবার মুখে মুখে৷ একটি মাত্র ঘরে কোনওরকমে দিন কাটে সাথী এবং তাঁর বাবা-মা- দাদার৷ সাথী যখন খাটে বসে পড়াশোনা করত, দাদা বসত নীচে৷ আর সাথী নীচে বসলে, খাটে বসার সুযোগ হত দাদার৷
নিজে এই লড়াইয়ের মুখোমুখি হয়েই তাই ভবিষ্যতের লক্ষ্য স্থির করার ক্ষেত্রে একটু ব্যতিক্রমী সাথী৷ বাণিজ্য বিভাগের ছাত্রী, তাই সাথীর লক্ষ্য ভবিষ্যতে বড় কোনও কর্পোরেট সংস্থায় চাকরি করা৷ নিজের পরিবারের হাল ধরার পাশাপাশি চাকরি করে দুঃস্থ পড়ুয়াদেরও পাশে দাঁড়াতে চায় সাথী৷ তাই উচ্চ মাধ্যমিকের সাফল্যেই থেমে না থেকে নিজের লক্ষ্যে পৌঁছনোকেই পাখির চোখ করেছে সে৷
নিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।