হোম /খবর /পশ্চিম বর্ধমান /
"সবার ওপর মনুষ্যত্ব, তাহার উপর নাই"

West Burdwan News : রোজা ছেড়ে হিন্দু বন্ধুর পারলৌকিক ক্রিয়া মুসলিম ব্যক্তির

X
title=

স্বজনহারা হিন্দু বন্ধু যোগেন্দ্রর মুখাগ্নি করেন শামসুদ্দীন। তারপর হিন্দু শাস্ত্র অনুযায়ী তার পালন, পারলৌকিক ক্রিয়া এবং শ্রাদ্ধানুষ্ঠানও করলেন তিনি।

  • Share this:

    রানীগঞ্জ, পশ্চিম বর্ধমান : রমজান (Ramzan)মাসে তিনি রোজা(Roja) রাখেন নি। উল্টে ১৩ দিন ধরে সমস্ত আচার-আচরণ মেনে পালন করেছেন হিন্দু বন্ধুর পরলৌকিক ক্রিয়া। তিনি বাস্তবে ফুটিয়ে তুলেছেন বিদ্রোহী কবি নজরুলের দুটি লাইন, - 'মোরা একই বৃন্তে দুটি কুসুম, হিন্দু-মুসলমান।' অকপটে স্বীকার করেছেন, আমি কোন ধর্ম নিয়ে জন্মাইনি। আমি জন্মেছি একজন পুরুষ মানুষ হয়ে। তাই মানবিকতা আমার কাছে প্রধান ধর্ম। আর এভাবেই রানীগঞ্জের(Ranigunj) গির্জা মোড় এলাকায় ধর্মীয় সম্প্রীতির(Communal Harmony) এক অনন্য নজির গড়লেন মহম্মদ শামসুদ্দীন। স্বজনহারা হিন্দু বন্ধু যোগেন্দ্র প্রসাদের পরলৌকিক ক্রিয়া সম্পন্ন করেছেন মুসলিম ধর্মাবলম্বী শামসুদ্দীন।  হিন্দু রীতি মেনে তিনি করেছেন মাথা মুন্ডন,  পিন্ডদান। আবার স্থানীয় বাসিন্দাদের খাওয়ানোর ব্যবস্থা করা হয়েছিল সেখানে অন্যান্যদের তরফে পাওয়া আর্থিক সহযোগীতায়।হুগলির(Hooghly) মগরার (Mogra)বাসিন্দা যোগেন্দ্র প্রসাদ দীর্ঘদিন ধরে কর্মরত ছিলেন রানীগঞ্জের গীর্জা পাড়া মোড় বাসস্ট্যান্ডে। সেখানেই থাকতেন তিনি। তার আশ্রয় ছিল আইএনটিটিইউসির শ্রমিক বিশ্রামাগার। বছর ৫৫ এর যোগেন্দ্র প্রসাদ হঠাৎই অসুস্থ হয়ে পড়েন। তারপর মৃত্যু হয় তার। কিন্তু স্বজনহারা যোগেন্দ্রর পরলৌকিক ক্রিয়া কীভাবে সম্পন্ন হবে, সে বিষয়ে যখন কোনও দিশা পাওয়া যাচ্ছিল না, তখনই এগিয়ে আসেন তার মুসলিম বন্ধু মহম্মদ শামসুদ্দীন। বিদ্রোহী কবির জেলাতেই ধর্মীয় সম্প্রীতির অনন্য নজির গড়ে যোগেন্দ্র প্রসাদের পরলৌকিক ক্রিয়া সম্পন্ন করলেন তিনি।স্বজনহারা যোগেন্দ্রর মুখাগ্নি করেন শামসুদ্দীন। তারপর হিন্দু শাস্ত্র অনুযায়ী তার পালন, ক্রিয়া এবং শ্রাদ্ধানুষ্ঠানও করলেন তিনি। যদিও আর্থিক সহায়তার হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন স্থানীয়দের অনেকেই। হিন্দু শাস্ত্র অনুসারে, মাথা মুন্ডন থেকে শুরু করে পিন্ডদান, সবই হয়েছে শামসুদ্দীনের হাত ধরে। তার সঙ্গে ছিল ভুরিভোজের আয়োজন। ডাল, ভাত , সবজি, মাছ, মিষ্টি সহ একাধিক পদ ছিল যোগেন্দ্র প্রসাদের শ্রাদ্ধানুষ্ঠানে।এই ব্যাপারে শামসুদ্দীন বলেছেন, এই কাজ করতে পেরে তিনি গর্বিত। মানবতার জন্য তিনি এই কাজ করেছেন। একজন বন্ধু হয়ে বন্ধুর পাশে দাঁড়িয়েছেন মাত্র। বন্ধুত্বের দায়িত্ব পালন করেছেন। স্থানীয় বাসিন্দারাও বলছেন, যখন ধর্মের নামে নানারকম রাজনীতি চলছে, তখন এই ঘটনা সমাজের কাছে এক বার্তা বন করবে যা মানুষের সঙ্গে মানুষের সম্প্রীতি, ধর্মীয় সম্প্রীতির এক অনন্য নজির হয়ে থাকবে।

    নয়ন ঘোষ

    First published:

    Tags: West burdwan