#কলকাতা: চার্টার্ড অ্যাকাউন্টেন্ট অমিত আগরওয়াল চেয়েছিল স্ত্রী-সহ শ্বশুরবাড়ির গোটা পরিবারকেই খুন করতে। সেজন্য কাঁকুড়গাছিতে শ্বশুরের ফ্ল্যাটে সব রকম প্রস্তুতি নিয়েই এসেছিল সে। এবার পুলিশ খতিয়ে দেখছে অমিতের মোবাইল ফোন ৷
ইতিমধ্যেই অমিতের মোবাইল আনলক করল পুলিশ৷ অমিতের পকেট থেকে মিলেছিল মোবাইল৷ অস্ত্র সরবরাহকারীর সঙ্গে কবে,কখন কথা এই সব বিষয়ে মোবাইল ঘেঁটে জানতে চায় পুলিশ৷ নম্বরের‘সিডিআর অ্যানালিসিস’-র কাজ শুরু ৷ বিমানবন্দর এলাকা থেকেই কি অস্ত্র পান নাকি ফুলবাগান থেকে অস্ত্র পান অমিত এই একাধিক প্রশ্ন ঘিরে রয়েছে ধোঁয়াশা ৷কারণ বন্দুক পাওয়াটা মোটেই সহজ বিষয় নয় ৷ একাধিক সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখছে পুলিশ৷ ফুটেজ দেখতে বিমানবন্দরের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে৷ ল্যাপটপ ব্যাগপ্যাকেই খুন করার মারণাস্ত্র ডেলিভার করা হয়৷
এদিকে এর আগে অমিতের কাছে থাকা 7 mm পিস্তলের ম্যাগজিন যেমন ভর্তি ছিল, তেমনই গুলি ভর্তি আরেকটি ম্যাগাজিনও সঙ্গে নিয়ে এসেছিল অমিত। যদিও শ্বশুর পালিয়ে যাওয়ায় শেষমেশ তার পরিকল্পনা পুরোপুরি সফল হয়নি।
সোমবার সন্ধ্যায় কাঁকুড়গাছির রামকৃষ্ণ সমাধি রোডে শ্বশুরবাড়িতে গিয়ে প্রথমে শাশুড়িকে গুলি করে খুন করে অমিত। তারপর নিজেও আত্মঘাতী হয়। পুলিশ জানিয়েছে, অমিতকে এলোপাথাড়ি গুলি চালাতে দেখে শ্বশুর পালিয়ে যাওয়ায় তিনি প্রাণে বেঁচে যান। ফলে অমিতের পরিকল্পনা পুরোপুরি সফল হয়নি। পুলিশ জানতে পেরেছে, নিজের শ্যালককেও কাজের বাহানায় শ্বশুরের ফ্ল্যাটে ডেকেছিল অমিত। যদিও তিনি লকডাউনের কথা বলে না আসায় প্রাণে বেঁচে গিয়েছেন।
কিন্তু শ্বশুরবাড়ির লোকেদের উপর অমিতের এমন কি রাগ ছিল যে কারণে তাদের গোটা পরিবারকেই খুন করার পরিকল্পনা করেছিল অমিত? তাই এখন ভাবাচ্ছে ফুলবাগান থানা পুলিশকে। তবে প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান, স্ত্রীকে দমিয়ে রাখা স্বভাবের অমিত কখনই মেয়েদের স্বাধীনতার বিশ্বাস করত না। নিজের স্ত্রী শিল্পাকে চাকরি করতে দিত না। সব সময় ঘরের কাজেই ব্যস্ত রাখতে পছন্দ করত। যদিও শিল্পা ঠিক উল্টোটা চাইতেন। তিনি স্বনির্ভর হতে চেয়েছিলেন ৷ চাকরি করতে চেয়েছিলেন। এই বিষয় নিয়েই স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে বিবাদ চলছিল। যাতে ইন্ধন জোগানোর অভিযোগ শ্বশুর বাড়ির লোকদের বিরুদ্ধে। দুই বিপরীত চিন্তাধারার মানুষ একসঙ্গে না থাকতে পেরে অমিত বিবাহ বিচ্ছেদের মামলা দায়ের করে। যদিও বিচ্ছেদ চায়নি শিল্পী। বিবাহ বিচ্ছেদের মামলা করার পর ছেলে কার কাছে থাকবে তা নিয়েও গোলমাল ছিল। অমিত ছেলেকে তার কাছে রাখতে দিতে চাইছিল। স্ত্রী শিল্পী ও তার পরিবার তাতে রাজি ছিল না। তাতেও স্ত্রী ও শ্বশুরবাড়ির লোকেদের উপর রাগ জন্মায় অমিতের। সব মিলিয়ে তাই শুধু স্ত্রী নয় গোটা শ্বশুরবাড়ির লোকদের উপর রাগ জন্মেছিল অমিতের। সে কারণেই শ্বশুরবাড়িতে সবাইকে খুন করে নিজে আত্মঘাতী হওয়ার পরিকল্পনা করেছিল অমিত।
এই ঘটনায় খুনি নিজেই আত্মঘাতী হওয়ায় খুনের কারণ খুঁজতে সমস্যায় পড়তে হচ্ছে পুলিশকে। তবে প্রাথমিক তদন্তেই জোট খুনে ব্যবহৃত অস্ত্র নিয়ে। বেঙ্গালুরুতে স্ত্রীকে খুন করে কলকাতায় বিমানবন্দরে নামার পর কোথা থেকে 7mm পিস্তল জোগাড় করল অমিত, তাই ভাবাচ্ছে তদন্তকারীদের। সেজন্য কলকাতা বিমানবন্দরের সিসিটিভি ফুটেজ যেমন খতিয়ে দেখা হবে। তার পাশাপাশি কলকাতায় নামার পর কার কার সঙ্গে অমিত কথা বলেছে তাও জানার চেষ্টা করবে পুলিশ। মোবাইলের কল ডিটেলসের সেই সূত্র ধরেই অস্ত্র সরবরাহকারী খোঁজ মিলবে বলে আশাবাদী তদন্তকারীরা। তাতেই জট কিছুটা খুলতে পারবে বলে মনে করছেন তারা। পাশাপাশি ৬৭ পাতার সুইসাইড নোট খুটিয়ে পড়লেও এই ঘটনার কিনারা করা সহজ হবে বলেই মনে করছে তদন্তকারীরা।
নিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।
Tags: Kankurgachi Murder, Murder Case