#লিডস: করোনা (Coronavirus)-র নতুন স্ট্রেইন নিয়ে যখন নাজেহাল ব্রিটেনবাসী, তখন নিজের জায়গা ব্রিটেন থেকে অনেক দূরে করোনাহীন এলাকায় দিন কাটাচ্ছেন এক যুগল। সেখানে নেই মাস্কের ঝামেলা, নেই স্যানিটাইজারের চাপ। নেই শহরের কোলাহল। রাজনীতি, অর্থের চাপ, করোনা, ভ্যাকসিন- এসব থেকে অনেক দূরে নিজেদের জায়গা খুঁজে নিয়েছেন তাঁরা।
করোনার জেরে লকডাউন শুরু হওয়ার আগেই অজানা জায়গায় ঘুরতে গিয়েছিলেন লিডস এলাকার বাসিন্দা লিউক ও সারা। আয়ারল্যান্ডের একটি নতুন দ্বীপে পৌঁছনোর ঠিক দু'দিন পরই ব্রিটেনে লকডাউন শুরু হয়ে যায়। তার পর সেই দ্বীপেই আটকে পড়েন তাঁরা। সেই মার্চ থেকে আজ পর্যন্ত এই যুগল ওই দ্বীপেই রয়েছেন বহাল তবিয়তে।
তবে, সেই দ্বীপে কিন্তু নেই ইলেক্ট্রিসিটি, নেই পানীয় জলের কানেকশন বা খাবার দোকান। লোকজনের বাড়িঘরও হাতে গোনা। তবে, কেউই সেই বাড়িগুলিতে থাকে না। এই নির্জন দ্বীপে পুরনো টেকনিক কাজে লাগিয়েই নিজেদের বেঁচে থাকার রসদ খুঁজেছেন লিউক ও সারা।লিডস লাইভ-এর রিপোর্ট অনুযায়ী, ১৪ মার্চ এই যুগল আয়ারল্যান্ডের ওয়ে আইল্যান্ডে যান। তার পর ১৬ তারিখ থেকে ব্রিটেনে লকডাউন শুরু হয়। ফলে তাঁরা সেখানেই থেকে যান। নিজেদের জন্য বানিয়ে ফেলেন একটি ছোট্ট ঘর। কয়লা দিয়ে আগুন জ্বালিয়ে রান্না করেন। ঘরের তাপমাত্রাও তাতেই নিয়ন্ত্রণ হয়। রান্নার জন্য রয়েছে গ্যাস বোতল। পাশাপাশি সোলার প্যানেলে আলো জ্বলা, ইলেক্ট্রিক জিনিসে চার্জ হওয়া পুরোটা হয়ে যায়।
রিপোর্ট বলছে, তাঁরা জানিয়েছেন, ওয়ে দ্বীপে থাকতে থাকতে তাঁরা বেশ কিছু জিনিস শিখেছেন।এখনও শিখছেন। মাছ ধরা শিখেছেন লিউক। সেই মাছ বহু দিনের জন্য পুরনো টেকনিকে নুনে চুবিয়ে শুকিয়ে সংরক্ষণ করছেন তিনি। পাশাপাশি বৃষ্টির জল ধরে রাখছেন তাঁরা পান করার জন্য। ঘরের পাশেই একটু কুয়ো থেকে স্নানের জল আনছেন। ফলে খাওয়া বা থাকায় কোনওরকম সমস্যাই তাঁদের হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন তাঁরা।
জানা যাচ্ছে, ওয়ে দ্বীপে যাওয়ার একটাই রাস্তা রয়েছে। নৌকা করে একটি দ্বীপে এসে, সেখান থেকে ব্রিজ পেরিয়ে আরেকটি আয়ারল্যান্ডের মূল দ্বীপে আসা যেতে পারে। যে ক'টা বাড়ি রয়েছে তাতে গরমকালে মানুষজন থাকে। কিন্তু এই সময়ে কেউই থাকে না। এর আগে শীতকালে ১৯৭৪ সালে মানুষ থেকেছিল ওয়েতে। তার পর থেকে ৩৪ বছর বয়সী লিউক ও ৩৬ বছর বয়সী সারা-ই প্রথম পা রাখেন এখানে। আপাতত মনের সুখে প্রকৃতির কোলে নিজেদের ইচ্ছে মতো করে বাঁচছেন এই যুগল!