#নয়াদিল্লি: ভারতের করোনা পরিস্থিতি ঠিক কেমন? ঘরে ঘরে এই নিয়ে আলোচনা। পরিসংখ্যানকে সামনে রেখে খতিয়ে দেখা যাক পরিস্থিতির প্রকৃত ছবিটা।
এই মুহূর্তে ভারতে করোনা আক্রান্তের হিসেব প্রতি ১০ লক্ষে ৬ হাজার ৭৩১ জন। মার্কিন যুক্তরাস্ট্রে প্রতি দশ লক্ষে করোনা আক্রান্ত হচ্ছেন ৪০ হাজার জন, ব্রিটেনে সংখ্যাটা ২৩ হাজার ৩৬১, ব্রাজিলে ২৯ হাজার ১২৯ জন, ইতালিতে ২৫ হাজার ৪৫৬ জন।
আসা যাক মৃত্যুর কথায়। ২৮ নভেম্বর পরিসংখ্যান দেখলে দেখা যাবে ভারতে প্রতি দশ লক্ষ মানুষে মারা যাচ্ছেন ৯৮ জন। অন্য দিকে সংক্রমণের শীর্ষে থাকা দেশ আমেরিকায় এই মৃত্যুর সংখ্যাটা দশ লক্ষে ৮১৩, ব্রাজিলে দশ লক্ষে ৮০৫ জন, ইতালিতে ৮৮৮ জন। অর্থাৎ এই সব দেশগুলিতে ৮-৯ গুণ এগিয়ে আছে ভারতের তুলনায় সংক্রমণে মৃত্যুর নিরিখে।
সেপ্টেম্বর মাসে সর্বোচ্চ সংক্রমণ হার প্রত্যক্ষ করেছিল ভারত। সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝি দৈনিক সংক্রমণ ৯৭ হাজার ছাড়িয়ে যায়। সেখান থেকে ধাপে ধাপে সংক্রমিতের সংখ্যা নামতে নামতে দেখা যাচ্ছে ভারতে এই মুহূর্তে দৈনিক সংক্রমণ হাজারের মধ্যে ঘোরাফেরা করছে। -নভেম্বর সংক্রমিত হয়য়েছিলেন হাজার ভারতীয়।
করোনার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে ভারতের তৎপরতাটা ঠিক কেমন ছিল? চিনে এই সংক্রমণ শুরু হওয়ার দশ দিনের মধ্যেই ভারত আন্তর্জাতিক যাত্রীদের স্ক্যানিং শুরু করে। জানুয়ারি প্রথম কোভিড আক্রান্ত ব্যক্তি এ দেশে আসেন। এর পর ধাপে ধাপে সংক্রমণ বাড়তে থাকে। সেই সময় হু এর সমালোচনার মুখে পড়লেও, ভারতের তরফে আরটিপিসিআর পদ্ধতিতে কোভিড পরীক্ষা শুরু করার যাবতীয় প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছিল তড়িঘড়ি।
মার্চের শুরুতে প্রধানমন্ত্রী হোলির উৎসবে যোগদান না করার আহ্বান জানান সকলকে। ধাপে ধাপে মাস্ক পরে জনসমক্ষে আসার নিয়ম চালু হয়। প্রধানমন্ত্রী নিজেও জনপরিসরে মাস্ক পরেই এসেছেন।
তখন একটু একটু করে ছড়াচ্ছে সংক্রমণ। করোনা সংক্রমিতের সংখ্যা যখন ৫০০, প্রধানমন্ত্রী লকডাউন ঘোষণা করে দেন। লকডাউনের মধ্যেই কেন্দ্র তৎপর হয়েছে স্বাস্থ্যব্যবস্থা ঢেলে সাজাতে। তৈরি হয় ১৫ হাজার ৩৬২ টি কোভিড কেন্দ্র, তৈরি হয় ১৫ লক্ষ ৪০ হাজার আইসোলেশান বেড, ২ লক্ষ ৭০ অক্সিজেন সাপোর্ট, ৭৮ হাজার আইসিইউ বেড ও ৩২ হাজার ৪০০ ভেন্টিলেটর। মনে রাখতে হবে গত ৭০ বছরে এই হাসপাতালগুলিতে ভেন্টিলেটর ছিল মাত্র ১২ হাজার। এই সময়ে ৩ কোটি ৭০ লক্ষ N95 মাস্কও বিতরণ করেছে ভারত সরকার। কেনা হয়েছে ১ কোটি ৬লক্ষ পিপিই কিট।
এই সময়েই প্রধানমন্ত্রী উদ্যোগে জনতা কার্ফুর সূচনা। তিনি ভারতকে এক দিনের স্বেচ্ছা কার্ফুর মধ্য দিয়ে গোটা বিশ্বের সামনে নজির রাখতে অনুরোধ করেন। ঘটেও তাই। এরপর লম্বা সময় চলেছে লকডাউন। গোটা পর্বটাই নেতৃত্ব দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। ধাপে ধাপে শুরু হয়েছে আনলক পর্ব অর্থাৎ লকডাউন তোলার পালা।
এই বিষয়ে সন্দেহ নেই, প্রধানমন্ত্রীর যোগ্য নেতৃত্বই বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি মেনে পর্যাপ্ত পরীক্ষা, সামাজিক দূরত্ববিধি পালনের মাধ্যমে করোনাকে যথাসম্ভব আটকানো গিয়েছে। বিশ্বের বহু দেশের তুলনায় ভারতের অবস্থা অনেকটাই ভালো। পাশাপাশি বলতে হবে গরিব কল্যান প্যাকেজের কথাও। সেই অনুদানে উপকৃত হয়েছেন দেশের নয় কোটি কৃষক। ২০ কোটি মহিলার অ্যাকাউন্টে পৌঁছে দেওয়া হয় ৩১ হাজার কোটি টাকা।
এর পাশাপাশি ভারতের জিডাস বায়োটেক, ভারত বায়োটেক ও সেরাম ইন্সটিটিউট শুরু করে ভারতের ভ্যাকসিন অভিযান। আপাতত ভারতের দুটি ভ্যাকসিন তৈরি হচ্ছে প্রতিদিন একটু একটু করে। পাশাপাশি ভ্যাকসিন সরবরাহ ও উৎপাদনে ভবিষ্যতে ভারত বড় ভূমিকা পালন করবে বলে মনে করা হচ্ছে।
নিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।
Tags: Coronavirus, COVID-19