#বর্ধমান: লকডাউনের জেরে এখন বন্ধ জারবেরা রফতানি। ফেলে দিতে হচ্ছে হাজার হাজার টাকার জারবেরা ফুল।পূর্ব বর্ধমানের রায়নার নন্দনপুরের গ্রিন হাউস থেকে এদিন ফেলে দেওয়া হল ৯ হাজার জারবেরা। প্রায় ৭০ হাজার টাকারও বেশি ফুল এদিন নষ্ট হল বলে জানিয়েছেন নার্সারির মালিক গুণধর সাহানা। তিনি জানালেন, ‘‘প্রতিদিন হাজার পিস করে জারবেরা হয়। একটির দাম এখন আট টাকা। কত লোকসান হচ্ছে বুঝে নিন। কলকাতায় জারবেরা পাঠানো যাচ্ছে না। বর্ধমানেও এখন তার চাহিদা নেই। তাই তা তুলে ফেলে দিতে বাধ্য হচ্ছি।’’
বর্ধমান থেকে কলকাতা হয়ে দুবাই পাড়ি দেয় জারবেরা। হল্যান্ডের ফুল হিসেবে বিশ্বজোড়া পরিচিতি জারবেরার। সেই জারবেরাই বর্ধমান থেকে পাড়ি জমায় দুবাইয়ে। বিয়ের মরশুমে এক একটা ফুলের ১৫ টাকা পর্যন্ত দাম মেলে। সেই জারবেরা এখন ফেলে দেওয়া ছাড়া উপায় থাকছে না।
রাজ্যের শস্যগোলা বলে পরিচিত পূর্ব বর্ধমান জেলায় ধান, আলু সহ অন্য সব্জি চাষ পুরো মাত্রায় হলেও ফুল চাষে এই জেলার দক্ষিণ দামোদর এলাকা অনেকটাই পিছিয়ে । তারই মধ্যে ব্যতিক্রম ঘটিয়েছেন রায়না ২ ব্লকের উচালন পঞ্চায়েতের নন্দনপুর গ্রামের বাসিন্দা গুনধর সাহানা । চাষী পরিবাবের ছেলে গুণধরবাবু ইঞ্জিনিয়ারিং নিয়ে পড়াশুনা করেছেন । নিজের ফ্যাক্টরিও আছে । তা সত্বেও তাঁর চাষ নিয়ে নতুন কিছু একটা করার উৎসাহ ছিল অনেকদিন ধরেই। শুরু করেন জারবেরা চাষ।
গুণধরবাবু বলেন, জারবেরা ছাড়াও এই ফার্মে জিনিয়া, ১২ মাসের গাঁদা-সহ সব ধরনের ফুলের চাষ হচ্ছে। জারবেরা মূলত নেদারল্যান্ডসের ফুল। সেখানের কম তাপমাত্রা এই ফুল চাষের জন্য উপযুক্ত। এখানে গ্রিন হাউসে তাপমাত্রা কমিয়ে তা চাষ করা হচ্ছে। একটা জারবেরা গাছ থেকে সারা বছর ফুল পাওয়া যায়। এক বার চাষ করলে চার বছর উন্নত মানের ফুল মিলছে। দুটি গ্রিন হাউস তৈরিতে ২৬ লক্ষ টাকা খরচ হয়েছিল। তার মধ্যে ১৩ লক্ষ টাকা সরকারি সাবসিডি মিলেছে।
কলকাতা হয়ে মুম্বই, দুবাইয়ে পাড়ি জমায় বর্ধমানের এই জারবেরা। গুণধরবাবু জানালেন, আমরা কলকাতায় বড়বাজারে ফুল পাঠাই। কিন্তু লক ডাউনের জন্য ফুল পাঠাতে পারছি না। বর্ধমানেও মানুষ গৃহবন্দি। জারবেরার চাহিদা নেই। প্রথাগত চাষের বদলে অন্যরকম চাষের কথা ভাবতে গিয়েই এই উদ্যোগ নিয়েছিলেন গুনধর সাহানা। তাঁর সেই উদ্যান এখন ভরে রয়েছে জারবেরা ফুলে। লক ডাউন উঠে ফুলের বাজার আবার চাঙ্গা হওয়ার অপেক্ষায় এখন গুণধরবাবুরা।
Saradindu Ghosh