#নাগপুর: করোনা ভাইরাস আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ার পর দেশের অন্য রাজ্যের মতো মহারাষ্ট্রে ঘোষণা করা হয়েছে লকডাউন। সেখানে সমস্ত দোকানপাট তো বন্ধই, পাশাপাশি বন্ধ সমস্ত যানবাহন, ট্রেন চলাচল। প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণার পর থেকে আরও কড়া হাতে লকডাউন কার্যকর করা হচ্ছে মহারাষ্ট্রে। কিন্তু এই নির্দেশের গেরোয় পড়ে আটকে পড়েছিলেন মহারাষ্ট্রের চন্দ্রপুর এর শ্রমিক নরেন্দ্র শেলকে। নাগপুর থেকে তাই বাধ্য হয়ে তিনি ১৩৫ কিলোমিটার পথ হেঁটে এলেন। দু’দিনের এই যাত্রাপথে পেটে পড়ল না দানাপানি। শুধু জল খেয়ে এই বিপুল পথ পার করতে চাইলেন। শেষে পুলিশ তাঁকে পথের ধারে অসুস্থ অবস্থায় উদ্ধার করল, পৌঁছে দিল বাড়িতে।
করোনা আতঙ্কের কারণে সারাদেশেই এভাবে বিভিন্ন জেলা ও রাজ্য থেকে নিজের বাড়ি ফেরার জন্য উদগ্রীব হয়েছেন অসংখ্য অসংগঠিত ক্ষেত্রের কর্মচারীরা। তাঁদের মধ্যে দৈনিক মজুরও রয়েছেন অনেকেই। মহারাষ্ট্রের এই ঘটনা তেমনই এক উদাহরণ। নরেন্দ্র শেলকে নামে ওই শ্রমিক, যেদিন লকডাউন ঘোষণা হয় সেদিন কোনওমতে সন্ধ্যের পর পুনেতে নিজের কর্মক্ষেত্র থেকে মহারাষ্ট্রের জাম্ভ গ্রামে ফেরার জন্য বেরিয়ে পড়েছিলেন। তিনি কিন্তু পুনে থেকে শেষ ট্রেন ধরে এসে পৌঁছতে পেরেছিলেন নাগপুরি পর্যন্তই। তারপর বন্ধ হয়ে গিয়েছিল সব। তাই বাধ্য হয়ে বাকি পথ হেঁটে বেরোনোর প্রতিজ্ঞা নিয়েই বেরিয়ে পড়েছিলেন।
নাগপুর নাগভিদ রোড ধরে মঙ্গলবার রাত্রি থেকে নিজের চন্দ্রপুর গ্রামের উদ্দেশ্যে হাঁটতে শুরু করেছিলেন তিনি। দু’দিন ধরে সামান্য খাবারটুকু জোটেনি তাঁর, শুধু জল খেয়ে এই রাস্তা পার করার চেষ্টা করছিলেন তিনি। কিন্তু কিন্তু নাগপুর থেকে ১৩৫ কিলোমিটার দূরে সিন্দেওয়াহি এসে তাঁর শরীর অসুস্থ হয়। রাস্তার ধারে তাঁকে অসুস্থ অবস্থায় দেখতে পান পুলিশকর্মীরা। তাঁরা জিজ্ঞাসা করেন, তিনি এভাবে কারফিউ ভঙ্গ করে কেন ঘুরছেন? তখনই তিনি পুরো ঘটনাটা জানান। পুলিশ সঙ্গে সঙ্গে তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে চিকিৎসকরা তার প্রাথমিক চিকিৎসা করে সুস্থ ঘোষণা করার পর, তাঁকে খাবার পৌঁছে দেন স্থানীয় থানার ইন্সপেক্টর নিশিকান্ত রামটেকে। তারপর সেখান থেকে ব্যবস্থা করে দেন একটি গাড়ির। গাড়ি করে প্রায় ২৫ কিলোমিটার পথ অতিক্রম করে নিজের বাড়িতে পৌঁছে যান শেলকে। তাঁকে আপাতত ১৪ দিনের হোম কোয়ারেন্টাইনে করে রাখা হয়েছে। প্রশাসন তাঁর স্বাস্থ্যের দিকে নজর রাখছে।