#শিলিগুড়ি: স্বামী সাইকেল ম। শিলিগুড়ি কলেজপাড়ায় ছিল সাইকেল সারাইয়ের দোকান। দৈনিক আয় হতো গড়ে একশো থেকে দেড়শো টাকা। আর স্ত্রী বাড়িতে বাড়িতে পরিচারিকার কাজ করতেন। হাড়ভাঙা পরিশ্রম করে মাসে দেড় থেকে দু'হাজার টাকা উপার্জন করতেন। দু'জনের আয়ে দিব্যি চলছিল সংসার। দিন আনি দিন খাই করে হলেও সংসার চালিয়ে আসছিলেন ওঁরা। কিন্তু সেই চেনা ছন্দই বদলে দিল করোনা৷ ঠিক যেভাবে পৃথিবীর কোটি কোটি মানুষের রোজনামচাই বদলে দিয়েছে এই মারণ ভাইরাস৷
করোনার থাবা গোটা রাজ্যে। এই সময়ে চরম সংকটে দিন কাটছিল শিলিগুড়ির বাসিন্দা সন্টু কর্মকার ও তাঁর স্ত্রী কল্যানীদেবীর। যেখানে দু'জনের আয় হতো মাসে হাজার তিনেক টাকার মতো। তা দিয়েই কোনওরকমে সংসার চালিয়ে আসছিলেন কর্মকার দম্পতি। কিন্তু করোনার ধাক্কায় বন্ধ সাইকেল সারাইয়ের দোকান। লকডাউনের জেরে আয়ের উৎসে ঝাঁপ বন্ধ হয়ে যায়। আর করোনার জেরেই অনেকেই বাড়ির পরিচারিকাদের কাজ ছাড়িয়ে দেয়। ফলে কর্মহীন হয়ে পড়েন তাঁর স্ত্রীও। এবারে দু'বেলা কী খাবেন?
দুশ্চিন্তা তাড়া করে কর্মকার দম্পতিকে। আর তা থেকেই বিকল্প আয়ের ভাবনা মাথায় আসে তাঁদের। স্বামীর ঠেলা ভ্যানকে পুঁজি করে পেশা বদলে ফেলেন কর্মকার দম্পতি। পুজোর ফুল, আমের পল্লব, বেল পাতা বিক্রি করতে শুরু করেন ওঁরা। স্বামীর সাইকেল সারাইয়ের দোকানের সামনেই ফুটপাতে ফুলের ডালি নিয়ে বসেন কল্যানীদেবী। যা আয় হচ্ছে, এখন তা দিয়েই কোনোক্রমে সংসার চলছে। কষ্ট হলেও তা দিয়েই মেটাতে হচ্ছে মুদি দোকানের খরচ থেকে জরুরি প্রয়োজন। এ ছাড়া অন্য কোনো উপায় যে আর নেই!
শুধু এই কর্মকার পরিবারই নয়, শহরের অনেক দিন মজুরেরই পেশা বদলে দিয়েছে মারণ করোনা। কোথাও রিকশাওয়ালা বিক্রি করছেন সব্জি, আবার কোথাও টোটো চালক বিক্রি করছে আনারস! কেউ আবার বিক্রি করছেন মাস্ক বা হ্যান্ড স্যানিটাইজার! সামনে উপায় যে আর নেই! আর তাই পেটের টানে রুটিরুজিতে পরিবর্তন! করোনা দিন দিন বদলে দিচ্ছে শহরের ছবি!
Partha Pratim Dutta
নিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।