#পূর্ব বর্ধমান : বিয়েবাড়িতে হানা পুলিশের। ভরদুপুরে সবাই যখন খাওয়া দাওয়ায় ব্যস্ত তখনই বাড়ির সামনে এসে দাঁড়ালো পুলিশ। চিন্তিত কনেপক্ষ। উদ্বেগ চোখেমুখে। কি ব্যাপার! কেউ কি কিছু অপরাধ ঘটিয়ে ফেলেছে তাদের অজ্ঞাতে! আশ্বস্ত করেন পুলিশের কর্মী অফিসাররাই। এই করোনা আবহে নিয়ম মেনে বিয়ের অনুষ্ঠান হচ্ছে কিনা তা দেখতেই তাদের আসা বলে জানান তাঁরা। ততক্ষণে মুখ মাস্কে ঢেকেছেন সকলেই। যাঁরা মধ্যাহ্ন আহার করছিলেন তাঁরা ঠিক কি করবেন ভেবে উঠতে পারছিলেন না। সকলকেই আশ্বস্ত করেন পুলিশ অফিসাররা। রবিবার এমনই ঘটনা ঘটলো পূর্ব বর্ধমানের ভাতার থানার মুরাতিপুরে। স্বাস্থ্যবিধি মেনে বিয়ে হচ্ছে কিনা খতিয়ে দেখতে বিয়েবাড়িতে হাজির হয়েছিল ভাতার থানার পুলিশের কর্মী আধিকারিকরা।
এই করোনা আবহে বিয়ের অনুষ্ঠানে ছাড় দেওয়া হয়েছে। তবে পঞ্চাশ জনের বেশি জন সমাগম করা যাবে না বলে জানিয়েছে রাজ্য সরকার। সেই নির্দেশ মেনে জেলায় বিয়ের অনুষ্ঠান শুরুও হয়েছে। অনেকেই ভিড় এড়াতে নিমন্ত্রিতদের সংখ্যায় ব্যাপক কাটছাঁট করেছেন। যেখানে আশি জন বরযাত্রী আসার কথা সেখানে আসছে ত্রিশ জন। একই নিয়ম কন্যাযাত্রীদের ক্ষেত্রেও। অন্য সময় সপরিবারে সবান্ধবে নিমন্ত্রণ হতো। সেখানে নিমন্ত্রিতের সংখ্যা পরিবারপিছু একজন করা হচ্ছে। পরিস্থিতির কথা বিচার করে সেসব হাসিমুখে মেনেও নিচ্ছেন অনেকেই। অনেক জায়গায় আবার রাতে ভিড় না বাড়িয়ে স্হানীয়দের মধ্যাহ্ন ভোজ করিয়ে ম্যানেজ করা হচ্ছে। রাতের জন্য শুধু কন্যাযাত্রী বা বরযাত্রী ও আত্মীয়দের জন্য আয়োজন থাকছে।
তেমনই বিয়ের আসর বসেছে পূর্ব বর্ধমান জেলার ভাতারের মুরাতিপুর গ্রামে। সেই গ্রামের বাসিন্দা শেখ ইনসানের বোনের বিয়ে। বাড়ির সামনে বিয়ের গেট করা হয়েছে। তার পাশেই চলছিল খাওন দাওন। সেখানেই ভরদুপুরে পৌঁছয় পুলিশ। পুলিশের কর্মী অফিসাররা আয়োজন ঘুরে দেখেন। এরপর সচেতন থাকা সহ স্বাস্থ্য বিধি মেনে চলার পরামর্শ দেন।পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, অনেকেই আবার পঞ্চাশ জনের বদলে অনেক বেশি নিমন্ত্রিণ করছেন। সেখানে সামাজিক দূরত্ব বজায় থাকছে না। মাস্কও ব্যবহার করা হচ্ছে না। তার ফলে করোনা সংক্রমণের আশঙ্কা থেকে যাচ্ছে। সে ব্যাপারে সচেতন করতেই এই পরিদর্শন। সবাই যাতে মাস্ক পরে থাকেন, নির্দিষ্ট দূরত্ব বজায় রেখে যাতে খাবারের টেবিল পাতা হয়, একসঙ্গে যাতে অনেকে ভিড় না করে সেই পরামর্শই দেওয়া হল।
পাত্রীর দাদা শেখ ইনসান জানান, পুলিশ প্রশাসনের কাছে কেউ ভুল বার্তা পাঠিয়েছিল। তাই পুলিশ আয়োজন খতিয়ে দেখতে এসেছিল। পুলিশ আধিকারিকরা দেখে গেলেন। বেশ কিছু পরামর্শও দিয়ে গেলেন। আমরা প্রশাসনের পরামর্শ মেনেই এই বিবাহের অনুষ্ঠান শেষ করব।
Saradindu Ghosh