#কলকাতা: মঙ্গলবার পয়লা বৈশাখের দিনে রীতি মেনে দক্ষিণেশ্বর মন্দিরে পুজো হলেও মন্দির ছিল শুনসান। প্রত্যেক বছরই কয়েক লক্ষ দর্শনার্থীর সমাগম হয় এই দক্ষিণেশ্বর-মন্দিরে। অনেকেই মনে করেন মা ভবতারিণীর পায়ে হালখাতা ছুঁয়ে পুজো করলে অনেক মনকামনাই বা ব্যবসার স্বার্থসিদ্ধি হবে। কিন্তু এবছর ছবিটা কার্যত বিপরীত।
পয়লা বৈশাখের দিন যে ছবি দেখে অভ্যস্ত গোটা দক্ষিণেশ্বর,করোনাভাইরাস ও লকডাউন এবারের সেই ছবিটাই বদলে দিল। মঙ্গলবার সকাল থেকেই কার্যত ফাঁকা গোটা মন্দির চত্বর। যদিও নববর্ষের দিন হালখাতা করার জন্য অনেক ব্যবসায়ী আবার নিজেদেরকে চেপে রাখতে পারিনি দক্ষিণেশ্বর আসার জন্য। মন্দিরের বাইরের গেটে হালখাতা ছুঁয়ে এবং ফুল রেখেই নববর্ষের হালখাতার পুজো অনেকেই সারলেন। তবে মন্দির বন্ধ থাকলেও নিয়ম মেনেই পুজো হয়েছে মা ভবতারিণীর।
এ প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে দক্ষিণেশ্বর মন্দিরের অছি ও সম্পাদক কুশল চৌধুরী বলেন "নিয়ম মেনেই মঙ্গলবার যথারীতি পুজো হয়েছে। সিদ্ধান্ত মোতাবেক কোনও দর্শনার্থীকেই ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না।" নববর্ষের দিন কড়া পুলিশি নজরদারি গোটা মন্দির চত্বর জুড়ে ছিল।
দেশজুড়ে চলছে করানো ভাইরাসে সংক্রমণের ঘটনা। ক্রমশই পাল্লা দিয়ে বেড়ে চলেছে করোনাভাইরাস এ সংক্রমিত সংখ্যা। এ রাজ্যেও পাল্লা দিয়ে বেড়ে চলেছে করোনাভাইরাস সংক্রমণ। তারই মধ্যে নববর্ষ এবার বাড়িতে বসেই কাটানতে মন খারাপ বাঙালির। প্রত্যেক বছরই নববর্ষের দিন পা ফেলার জায়গা থাকে না দক্ষিণেশ্বর মন্দিরে। বলা ভাল আগের দিনের রাত থেকেই একাধিক লাইন পড়ে যায় পুজো দেওয়ার জন্য। অনেকে আবার বাইরেই পূজো সেরে নেন। কিন্তু এই বছর করোনা কেড়ে নিয়েছে এই দৃশ্য। মঙ্গলবার কার্যত শুনশান ছিল দক্ষিণেশ্বর মন্দির।
নববর্ষের দিকেই তাকিয়ে থাকেন পুরোহিতরাও। মন্দিরের বাইরে দাঁড়িয়ে থাকা কয়েকজন পুরোহিত জানাচ্ছিলেন যে ব্যবসায়ীরা নববর্ষের দিন হালখাতার পুজো দিতে আসেন তাদের মধ্যে অনেকেই মন্দিরের ভেতরে যান না মন্দিরের বাইরে কোন জায়গায় পূজারীরা হালখাতার পুজো দেওয়ার ব্যবস্থা করেন। নববর্ষের এই দিনটায় পরে ৫০০ থেকে হাজার টাকা পর্যন্ত রোজগার হয় পুরোহিতদের। তবে শুধু পুরোহিত নয় মন্দিরের কাছেই রয়েছে একাধিক পেড়ার দোকান। নববর্ষের এইদিনের দিকেই অনেকটাই তাকিয়ে থাকেন এই ব্যবসায়ীরা। কিন্তু এবছর কার্যত দোকান বন্ধ থাকায় অনেকটাই অনিশ্চিত এবং আর্থিক সংকটে পড়েছেন এই ব্যবসায়ীরা। এ প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে মিষ্টি ব্যবসায়ী জানাচ্ছিলেন " নববর্ষের দিন পেড়ার দোকানগুলিতে অন্তত ১০ হাজার টাকার প্যারা বিক্রি হয়।" এছাড়াও দোকানদাররা নির্ভর করে থাকেন জবা ফুলের মালা, হালখাতা,নারকেল বিক্রির উপরও। এবারের লকডাউন এর জেরে ফুল ব্যবসায়ীরা কার্যত ক্ষতির মুখে।
তবে মন্দির বন্ধ থাকলেও মঙ্গলবার সকালে অবশ্য কয়েকজন ব্যবসায়ীকে মন্দিরের বন্ধ গেটের সামনে পুজো করতে দেখা গেল। গেটের বাইরে হালখাতা ছুঁয়ে ফুল দিয়ে নিজেরাই পুজো করে নিলেন। এ প্রসঙ্গে এক ব্যবসায়ী বলেন " মন্দিরের গেটে ছুঁয়ে পুজো করে নিলাম। এটাতেই একটা মানসিক শান্তি আছে"।
সোমরাজ বন্দোপাধ্যায়
নিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।
Tags: Dakhineshwar Kali, Lockdown