#কলকাতা: করোনা পরিস্থিতিতে ত্রস্ত দেশ। ভয় জাঁকিয়ে বসেছে এরাজ্যের মানুষের মনেও। এই অবস্থাতে আগে থেকেই যুদ্ধের প্রস্তুতি হিসেবে ওষুধ জমানো শুরু করছেন অনেকে। আর তারই ফল-রাজ্যজুড়ে ওষুধের আকাল। অবস্থা এমনই যে সাধারণ ভিটামিন সাপ্লিমেন্টের জন্যেও দোকানে দোকানে ঘুরতে হচ্ছে। স্বাস্থ্যকর্মী থেকে ওষুধ ব্যবসায়ী সকলেই এই আকালকে কৃত্রিম সংকট বলছেন। কিন্তু কেন কৃ্ত্রিম, এই সংকটের পিছনে কারা?
পাইকারি ওষুধের সব থেকে বড় বাজার ক্যানিং স্ট্রিটের একটি হোলসেল দোকানের কর্ণধার রাকেশ সংভি বলছিলেন, "যে পরিমাণ ওষুধ নিয়মিত আসছে, তার থেকে অনেক বেশি পরিমাণ ওষুধ আগেভাগে কিনে মজুত করে রাখায় বাজারে অত্যধিক চাহিদা বেড়ে গেছে। বহু দোকানকে আমরা সাপ্লাই করতে পারছি না"
বাজারে অমিলের তালিকায় রয়েছে ডক্সিল্যামাইন গ্রুপের ওষুধগুলি।কলকাতা-সহ বহু জেলাতেই দেখা নেই আইভারমেসটিন গ্রুপের ওষুধ। বহু জায়গায় পাওয়া যাচ্ছে না অ্যাজিথ্রোমাইসিন অ্যান্টিবায়োটিকও। খাস কলকাতাতেই ভ্যানিশ জিঙ্ক সালফেট বা ভিটামিন-সি সাপ্লিমেন্ট। কলকাতার অন্যতম পুরনো ওষুধের দোকান মহাত্মা অ্যান্ড কোং-এর কর্ণধার অঙ্কিতার রায় জানালেন, "জিঙ্ক সালফেট বা ভিটামিন সাপ্লিমেন্ট এক পাতাও নেই, বহু লোক এসে খালি হাতে ফিরে যাচ্ছেন। আগে থেকে একটু বেশি করে আইভারমেসটিন তুলেছিলাম, সেগুলিই আছে। আর ডক্সিল্যামাইন গ্রুপের তো অনেকগুলি ওষুধ হয়, সব রকম ওষুধই এখন শেষের পর্যায়ে। এর পর কী হবে জানি না। আসলে অন্য সময়ে যে দ্রুততায় ওষুধ পাই, এখন তা পাচ্ছি না, কিছু ডিস্ট্রিবিউটার কমিশনও কম দিচ্ছে। চাহিদা আর যোগানে একটা অসামঞ্জস্য তৈরি হচ্ছে।
এই সমস্যা কিন্ত শুধু শহর কলকাতায় নয়, জেলায় জেলায় ছবিটা একই।কৃত্রিম চাহিদা তৈরি হচ্ছে সর্বত্র। এত প্রচুর পরিমাণে ওষুধ বাড়িতে লোকজন কিনে রাখছে, যাদের সত্যিকারের প্রয়োজন,তারা পাচ্ছেন না। বিশেষত খারাপ অবস্থা দুই চব্বিশ পরগণার।
বেঙ্গল কেমিস্ট এন্ড ড্রাগিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে সম্পাদক শঙ্খ রায়চৌধুরী বলছেন, "রাজ্যজুড়ে এই ওষুধ গুলো সত্যিই অমিল। আমাদের সংগঠনের আওতায় থাকা বহু ওষুধের দোকানে এই ওষুধগুলো পাওয়া যাচ্ছে না।" তিনিও মেনে নিচ্ছেন, বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই অনেকেই অযথা আতঙ্কিত হয়ে বাড়িতে এই সমস্ত ওষুধ সংগ্রহ করে মজুত রাখছেন। এই সমস্যার সমাধান কী ভাবে হবে তা অবশ্য কেউই বলতে পারছেন না। আতঙ্ক আর মৃত্যুভয়ে ভোগা মানুষ যদি প্রতিবেশীর কথাও ভাবে, তবেই একমাত্র সমস্যার সমাধান হতে পারে, বলছেন জনস্বাস্থ্য আন্দোলনের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিরা।
নিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।
Tags: Coronavirus, COVID19, Medicine crisis