#কলকাতা: কোভাস পরীক্ষাগার উদ্বোধন ও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীদের ভার্চুয়াল বৈঠকে রাজ্যের দাবি দাওয়ার পাশাপাশি পড়ুয়াদের জন্যেই কেন্দ্রের কাছে আর্জি জানালেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ৷ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির কাছে সরাসরি পরীক্ষা নিয়ে UGC-এর নির্দেশিকা বাতিল ও প্রত্যাহারের আবেদন করেন মুখ্যমন্ত্রী ৷
ভার্চুয়াল বৈঠকে তিনি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে বলেন, ‘করোনা পরিস্থিতিতে ইউজিসি-এর আগের নির্দেশিকা মেনেই এতদিন প্রস্তুতি নিয়েছে রাজ্য ৷ সেই মতো বিজ্ঞপ্তিও দেওয়া হয় ৷ কিন্তু তারপরই চুড়ান্ত বর্ষের পরীক্ষা নেওয়ার জন্য নয়া নির্দেশিকা জারি করে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন ৷ এতে অসুবিধায় পড়বে পড়ুয়ারা ৷ আমি অনুরোধ করছি এই পরিস্থিতিতে ছাত্রদের অসুবিধা না করে ইউজিসি যেন নতুন নির্দেশিকা বাতিল করে এবং আগের নির্দেশিকা মানতে আদেশ দেয় ৷’
এর আগেও UGC-এর নয়া নির্দেশিকা নিয়ে আপত্তি জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে চিঠি লিখেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ৷ ৬ জুলাই ইউজিসি নির্দেশিকা দিয়ে জানিয়েছে, ৩০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজগুলিকে টার্মিনাল সেমিস্টারের পরীক্ষা নিতে হবে । এরই পরিপ্রেক্ষিতে তীব্র আপত্তি ওঠে রাজ্যের শিক্ষামহলে ৷
সমস্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও শিক্ষাবিদদের সঙ্গে কথা বলার পর প্রধানমন্ত্রীকে দেওয়া চিঠিতে মুখ্যমন্ত্রী জানান, "২৯ এপ্রিল ইউজিসি'র তরফে যে গাইডলাইন জারি করা হয়েছে সেটিতে স্পষ্টভাবে জানানো হয়েছে, সেটি একটি অ্যাডভাইজারি। আবার ইউজিসি-র তরফে ৬ জুলাই বলা হয় যে, বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজগুলিকে সেপ্টেম্বরের মধ্যেই টার্মিনাল সেমিস্টার নিতে হবে। বর্তমানে করোনা সংক্রমণ যে হারে বাড়ছে সেই পরিস্থিতির নিরিখে রাজ্যের সমস্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের সঙ্গে আলোচনা করে প্রত্যেকটি বিশ্ববিদ্যালয়কে ২৭ জুন একটি অ্যাডভাইজারি দেওয়া হয় । অ্যাডভাইজারিতে ছাত্র-ছাত্রীদের স্বাস্থ্য ও সুরক্ষার কথা মাথায় রেখে জানিয়ে দেওয়া হয়, ইন্টারন্যাল অ্যাসেসমেন্ট নম্বর এবং আগে হয়ে যাওয়া সেমিস্টারের নম্বরের নিরিখে পডুয়াদের মূল্যায়ন করা হোক। শুধু তাই নয়, অ্যাডভাইজারিতে জানানো হয়েছে, যে সমস্ত ছাত্র-ছাত্রীরা মূল্যায়নে সন্তুষ্ট হবে না, পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে গেলে তাঁদের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলি বিশেষ পরীক্ষার ব্যবস্থা করবে । রাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয় এবং কলেজগুলি রাজ্য সরকারের অ্যাডভাইজারি মেনে ইতিমধ্যেই মূল্যায়নের প্রক্রিয়াও শুরু করেছে। ছাত্র-ছাত্রী ও তাঁদের অভিভাবকরা এই অ্যাডভাইজারির প্রশংসাও করেছেন। সম্প্রতি নতুন করে ইউজিসি'র জারি করা গাইডলাইনে নিরিখে ছাত্র ছাত্রী ও শিক্ষকদের কাছ থেকে আমার কাছে প্রচুর ই-মেল আসছে । সেক্ষেত্রে আমার মনে হয় ইউজিসির এই নতুন গাইডলাইন শুধুমাত্র এ রাজ্যের পড়ুয়াদের নয়, সারাদেশের ছাত্রছাত্রীদের ওপর প্রভাব ফেলবে। আমি ইতিমধ্যেই শুনেছি ইউজিসির এই গাইডলাইন নিয়ে অন্যান্য রাজ্য তাঁদের উদ্বেগের কথা কেন্দ্রীয় সরকারকে জানিয়েছে । আমার তাই আপনার কাছে অনুরোধ যাতে এই গাইডলাইন তাড়াতাড়ি পুনর্বিবেচনা করা হয় এবং দ্রুত ইউজিসির তরফে অ্যাডভাইজারি জারি করা হয়। সেক্ষেত্রে সিদ্ধান্ত কার্যকর করতে রাজ্যের পক্ষে সুবিধা হবে । ছাত্র এবং শিক্ষক সমাজ আমাদের দেশের এবং সারা বিশ্বের সম্পদ। তাঁদের শারীরিক ও মানসিক ভাবে সুরক্ষিত রাখার দায়িত্ব আমাদের। তাদের কোনভাবে হতাশ করাটা ঠিক নয়।"
ওই চিঠি পাঠানোর পর এদিন আরও একবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সামনে UGC-এর নয়া নির্দেশিকা নিয়ে বিবেচনার আবেদন রাখলেন মুখ্যমন্ত্রী ৷