#স্টকহোম: কোভিড ১৯-এ আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে, এমন রোগীদের ফুসফুসে জেলির মতো একটি পদার্থ পাওয়া গিয়েছে। চিকিৎসকেরা অনুমান করছেন এই জেলিই করোনা রোগের চিকিৎসায় নতুন দিগন্ত খুলে দেবে। সুইডেন বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক আরবান হেলম্যান জানিয়েছেন যে, ইতিমধ্যে চিকিৎসাপদ্ধতি নিয়ে ভাবা শুরু হয়েছে, যাতে ফুসফুসের মধ্যে এই জেলি তৈরির প্রক্রিয়ার গতিকে ধীর করে তোলা যায় অথবা জেলি ভেঙে উৎসেচক তৈরি করা যায়। আপাতত সেই চেষ্টা চলছে তাঁদের দলে।
কোভিড ১৯-এ আক্রান্ত গুরুতর অসুস্থ রোগীর ফুসফুসের স্ক্যান করে ফুসফুসের মধ্যে সাদা ছোপ-ছোপ দাগ খেয়াল করা গিয়েছে। মৃত রোগীদের ময়নাতদন্তে ফুসফুসে খোঁজ পাওয়া গিয়েছে জেলির মতো এক তরলের। জলে ডুবে মৃত্যু হলে ফুসফুসের চেহারা যেমন হয়, কোভিডে মৃত্যুর পরেও অনেকটা সেরকম হয়েছে।
সাম্প্রতিক এই গবেষণাটি প্রকাশিত হয়েছে বায়োলজিক্যাল কেমিস্ট্রি জার্নালে। গবেষণা বলছে জেলির মতো ওই তরলে হ্যালুরোনান রয়েছে। স্বাভাবিক সুস্থ মানব দেহে সংযোগকারী কলা হিসেবে কাজ করে হ্যালুরোনান। ক্ষত সারানোর কাজে প্রাথমিক ভাবে ব্যবহার করা হয় এটি। আবার বিউটি ইন্ডাস্ট্রিতে লিপ অগ্মেন্টেশনের (ঠোঁট মোটা করা) কাজেও ব্যবহার করা হয় এটি। হ্যালুরোনানের অণু জল ধরে রাখার কাজ করে। কোভিড ১৯-এ আক্রান্ত রোগীর ফুসফুসেও স্বভাবতই জল জমে গিয়ে শ্বাসযন্ত্র বিকল হয়ে মৃত্যু ঘটে।
বর্তমানে হ্যালুরোনান তৈরির গতি কমাতে চিকিৎসকেরা ব্যবহার করছেন হাইমারক্রোমোন ড্রাগ। হ্যালুরোনানকে ভেঙে দেওয়ার কাজটিও করতে সক্ষম এই উৎসেচক। সম্প্রতি গবেষণায় ধরা পড়েছে যে, হাসপাতালে ভর্তি হওয়া কোভিড-রোগীদের ক্ষেত্রে বাড়ছে ডিপ ভেইন থ্রম্বোসিস অথবা ভেনাস থ্রম্বো এম্বলিজম (ভিটিই)- এর সম্ভাবনা।
দেহের ভেতরের ধমনীতে রক্ত জমাট বেঁধে গেলে সেই গুরুত্বর অবস্থাকে বলে ডিপ ব্রেন থ্রম্বোসিস। এই জমাট বাঁধা রক্ত ঢুকে পড়ে ফুসফুসে। তবে সাম্প্রতিক গবেষণায় দেখা গিয়েছে যে হাসপাতালের জেনারেল ওয়ার্ডে থাকা রোগীদের ভিটিই-এর ঝুঁকি ৫ থেকে ১১ শতাংশ। অথচ গুরুতর অসুস্থ থাকা হাসপাতালের বাকি কোভিড-রোগীদের ক্ষেত্রে সেই ঝুঁকি ১৮ থেকে ২৮ শতাংশ। গবেষণাটি প্রকাশিত হয়েছে রিসার্চ অ্যান্ড প্র্যাক্টিসেস ইন থ্রম্বোসিস অ্যান্ড হিমোস্ট্যাসিস জার্নালে।
নিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।
Tags: Coronavirus