#নয়াদিল্লি: ভারতে সম্ভবত করোনার দ্বিতীয় টেউ আছড়ে পড়বে না৷ যদিও বা আসে, তাহলে তার ব্যাপকতা থাকবে প্রথমের থেকে অনেকটাই কম৷ এমনটাই মনে করছেন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা৷ দেশে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ১ কোটি পার করার দিনেই এক স্বস্তির বিবৃতি এল৷
ভারতে দৈনিক সংক্রমণের নিম্নগতি দেখা যাচ্ছে৷ কোভিড আক্রান্তের সংখ্যার পাশাপাশি অতিমারিতে মৃত্যুর সংখ্যাও প্রতিদিন কমছে৷ সংবাদ সংস্থা পিটিআই-কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বিশিষ্ট ভাইরাসবিদ ডাক্তার শহিদ জামিল জানিয়েছেন, সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝি সময় করোনার যে দাপট দেখা গিয়েছিল, সেই তুলনায় ভারতে দৈনিক সংক্রমণের গ্রাফ ক্রমেই নিম্নগামী৷
শহিদ জামিল বলছেন, "এই মুহূর্তে আমরা দেখছি প্রতিদিন গড়ে ২৫,৫০০ জন আক্রান্ত হচ্ছেন৷ কিন্তু তখন সংখ্যাটা ছিল ৯৩ হাজার৷ আমার মনে হয় সবচেয়ে খারাপ যা দেখার দেখে নিয়েছি৷ কিন্তু ভবিষ্য়তে একটা ছোট করোনার ঢেউ দেখতে পারি৷ যেমনটা গত নভেম্বরের শেষের দিকে দেখেছি৷ আমার মনে হয় না করোনার দ্বিতীয় ঢেউ আমরা দেখতে পাব৷ উৎসবের মরসুম (দসেরা থেকে দিওয়ালি) ও একটা রাজ্য নির্বাচন কাটিয়ে দিলাম৷ কিন্তু উল্লেখযোগ্য ভাবে করোনার কোনও লাফ দেখিনি৷"
তাঁর আরও সংযোজন, "দ্বিতীয় জাতীয় সেরোসার্ভের দেখলে বোঝা যাবে, সেসময় নিশ্চিত ভাবে আক্রমণের সংখ্যা ১৬ গুন ছিল৷ সেটা না কমলে ভারতে আজ আক্রান্তের সংখ্যা ১৬০ মিলিয়ন হয়ে যেত৷ এটাও খেয়াল করে দেখা গিয়েছে যে, জনসংখ্যার বৃহত্তর অংশ সুরক্ষিত হয়ে গিয়েছে এবং করোনা সংক্রমণকে ভেঙে দিয়েছে৷"
জামিল আরও জানিয়েছেন, "অরক্ষিত এবং সংবেদনশীল ব্যক্তিরা সংক্রামিত হতে থাকবেন। যদি অনাক্রম্যতা এক বছর বা তারও কম স্থায়ী হয়, তবে আমাদের সামনের কয়েক বছর নিয়মিত বিরতিতে ছোট ছোট করেনার ঢেউ সামলাতে হবে। কিন্তু ভাল টিকা এটিকে কার্যকরভাবে নিয়ন্ত্রণ করবে৷"
বিশিষ্ট রোগশয্যাসম্বন্ধীয় বিজ্ঞানী ডাক্তার গগণদীপ কাং বলছেন করোনা সংক্রমণ প্রথমবারের মতো এতো দ্রুত বেগে হবে না৷ তাঁর বক্তব্য, " আমার মনে হয় না, করোনার প্রভাব নিয়ে এত চিন্তা করার কিছু থাকবে৷ আমাদের হার্ড ইমিউনিটি তৈরি হয়ে গিয়েছে৷ কিছু পর্যায় সুরক্ষা মেনে চলললেই সংক্রমণ প্রথমবারের মতো এত দ্রুত হারে বাড়বে৷ করোনার ঢেউ ততটা বড়ও হবে না৷"
বিখ্যাত হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ ডাক্তার কেকে আগরওয়াল জানিয়েছেন দেশের ৩০-৪০ শতাংশ মানুষ করোনায় আক্রান্ত হননি৷ তিনি এই বিষয়ে বলছেন, "সমস্ত সম্ভাবনার কথা ভেবেই বলছি, ভারতে হয় তো করোনার দ্বিতীয় ঢেউ আছড়ে পড়বে না৷ সেটা হলেও ৫০১টি নতুন রূপে হবে৷ যার মধ্যে দু'টির বর্ণনা পেয়ে গিয়েছি৷ একটি ইংল্যান্ডের দক্ষিণে ও অন্যটি দক্ষিণ আফ্রিকায় দেখা গিয়েছে৷ ভারত এই মাসের শেষ দিক থেকেই যদি টিকাকরণ কর্মসূচি শুরু করে দেয় এবং৩০ কোটি মানুষকে টিকা দিতে পারলে আমরা ২৫ মার্চের মধ্য়ে করোনাকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারব৷"
ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অফ মেডিক্যাল রিসার্চের এপিডেমিওলজি অ্যান্ড কমিউনিকেবল ডিজিসেস শাখার প্রধান সমীরণ পাণ্ডা জানাচ্ছেন, রাজ্যের ভিত্তিতে করোন রূপ ভিন্ন৷ তিনি বলছেন, "অধিকাংশ রাজ্যেই করোনাকে কার্যকরী ভাবে নিয়ন্ত্রণ করা হয়েছে৷ কিন্তু কিছু রাজ্যে সচেতন হয়ে আমাদের খেয়াল রাখতে হবে৷ প্রতি রাজ্যের চিত্র আলাদা৷"
নিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।
Tags: Coronavirus, COVID19