হোম /খবর /দেশ /
গবেষক পড়ুয়াদের জন্য অনুপ্রেরণা! করোনা মুক্ত হয়েই প্লাজমা দান গবেষক ছাত্রীর

গবেষক পড়ুয়াদের জন্য অনুপ্রেরণা! করোনা মুক্ত হয়েই প্লাজমা দান IICB এর গবেষক ছাত্রীর

কয়েক মাস ধরে প্লাজমা দান করে যাচ্ছেন পুলিশ,স্বাস্থ্যকর্মী থেকে শুরু করে চিকিৎসকরা। কিন্তু এবার সেই প্লাজমাদাতার তালিকায় যুক্ত হল ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ কেমিক্যাল বায়োলজির গবেষক ছাত্রী দেবশ্রী বসাকের নাম।

  • Last Updated :
  • Share this:

#কলকাতা: নজিরবিহীন ঘটনা এর সাক্ষী হল কলকাতা। এই প্রথম করোনামুক্ত হয়ে এক গবেষক ছাত্রী নিজের প্লাজমা দান করলেন। গত কয়েক মাস ধরে প্লাজমা দান করে যাচ্ছেন পুলিশ,স্বাস্থ্যকর্মী থেকে শুরু করে চিকিৎসকরা। কিন্তু এবার সেই প্লাজমাদাতার তালিকায় যুক্ত হল ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ কেমিক্যাল বায়োলজির গবেষক ছাত্রী দেবশ্রী বসাকের নাম। উত্তর কলকাতার আহিরীটোলা বাসিন্দা দেবশ্রী  গত ২২ জুলাই করোনাভাইরাসের পজিটিভ রিপোর্ট আসে। শুধু তার নয়, পরিবারের আরও এক সদস্যের করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়। যদিও বাড়িতেই আইসোলেশনে থেকে গত ১৩ অগাস্ট করোনার বিরুদ্ধে লড়াই করে জয়ী হন। তারপরের দিন থেকেই ল্যাবে গবেষণার কাজে শুরু করে দেন। সেই গবেষণার কাজ করতে করতেই প্লাজমা দেওয়ার আগ্রহ তৈরি হয় এই তরুণীর।

শুক্রবারই মেডিকেল কলেজে প্লাজমা দিয়েছেন করোনা জয়ী এই গবেষক ছাত্রী। দেওয়ার পর বাড়িতে বসেই দেবশ্রী বলে, " আমি অধ্যাপক ডক্টর শিল্পক চট্টোপাধ্যায়ের অধীনে গবেষণা করছি। উনি আমায় উৎসাহ দেন প্লাজমা দেওয়ার জন্য। প্রথমে ভয় পেয়েছিলাম যদি কোনভাবে ইনফেকশন হয়। কিন্তু তারপর দেখলাম প্লাজমা দেওয়ার মাধ্যমে অনেকেই সুস্থ হয়ে যাচ্ছেন। তাই আমার মনে হল এই প্লাজমা দেওয়ার মাধ্যমে যদি অন্য কেউ সুস্থ হয়ে ওঠেন তাহলে সেটা অনেকটাই ভালো লাগার জায়গা তৈরি করবে।" অবশ্য এই প্লাজমা দেওয়া নিয়ে দেবশ্রীর  পরিবারের কিছুটা ভয় হলেও গবেষক ছাত্রী নিজেই পরিবারের সেই ভয় কাটিয়ে দেন। এ প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে দেবশ্রী বলে " আমার বাবা ভয় পেয়েছিলেন। ইনফেকশনের সম্ভাবনা আছে এই মনে করে তাদের মধ্যে আতঙ্ক ছিল। কিন্তু তারপর তা কেটে গিয়েছে।"

কাউন্সিল অফ সাইন্টিফিক অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিয়াল রিসার্চ এর অধীনে বেলেঘাটা আইডি হাসপাতাল এ বর্তমানে চলছে পরীক্ষামূলক প্লাজমা থেরাপি। মূলত করোনা জয়ীদের রক্ত থেকে আলাদা করে নেওয়া হচ্ছে প্লাজমা। ওই প্লাজমায় করোনাকে কাবু করার জন্য উপযোগী অ্যান্টিবডি রয়েছে,  এই ধারণা থেকেই প্লাজমা থেরাপি শুরু হয়েছে। গত কয়েক মাস ধরে প্লাজমা থেরাপি ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল চলছে।সম্প্রতি গবেষণায় ধরা পড়েছে কলকাতা প্লাজমা থেরাপিতে অনেককেই পিছনে ফেলে দিয়েছে। যদিও এই চাল পুরো শেষ হতে আরও এক মাস সময় লাগবে বলেই দাবি করছেন গবেষকরা।কিন্তু এই ট্রায়ালের মধ্যেই একজন গবেষক ছাত্রী প্লাজমা দেওয়াতে অনেকটাই সচেতনতা ফিরছে বলে মনে করছেন প্লাজমা থেরাপি মুখ্য গবেষক তথা ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ কেমিক্যাল বায়োলজির অ্যাসোসিয়েট প্রফেসর দীপ্যমান গঙ্গোপাধ্যায়। তিনি বলেন " এখন সচেতনতা এবং প্রচারমূলক কর্মসূচির ফলে অনেকেই প্লাজমা দেওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করছেন। এখনও পর্যন্ত ৪০ জন প্লাজমা দিয়েছে যা আমাদের কাছে পরিসংখ্যান রয়েছে। আরও ৫০ থেকে ৬০ জন আগ্রহ প্রকাশ করেছে।"

তবে প্লাজমা দেওয়ার নিরিখে অন্তত প্রথম কোনও গবেষক ছাত্রী এই পদক্ষেপ নিলেন এমনটাই দাবি করছেন প্লাজমা থেরাপি ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের সঙ্গে যুক্ত গবেষকরা। এ প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ কেমিক্যাল বায়োলজির অধ্যাপক দীপ্যমান গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, ‘আমার অন্তত মনে পড়ছে না এর আগে প্লাজমা দেওয়ার জন্য কোনও গবেষক ছাত্রী এগিয়ে এসেছে । আগামী দিনে প্লাজমা দেওয়ার আগ্রহ আরও বাড়বে বলেই দাবি দীপ্যমানবাবুর। অন্যদিকে প্লাজমা দেওয়াতে খুশি দেবশ্রী ও তার পরিবার।

সোমরাজ বন্দ্যোপাধ্যায়

Published by:Elina Datta
First published:

Tags: Coronavirus, Plasma Donation