#নয়াদিল্লি: করোনার থাবায় কাঁপছে গোটা বিশ্ব। দিন দিন বাড়ছে মৃত ও আক্রান্তের সংখ্যা। ভ্যাকসিন নিয়েও চলছে বিস্তর গবেষণা। ক্রমবর্ধমান সংক্রমণ রুখতে প্রতিটি দেশ প্রাণপণ চেষ্টা চালাচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, করোনা ভাইরাসের উপসর্গ কিংবা আক্রমণের ধরন যদি যথাযথ ভাবে চিহ্নিত করা যায়, তা হলে খানিকটা হলেও সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে আনা যাবে।
এ দিকে কোভিড-১৯ দ্রুত তার চরিত্র বদল করছে। এক মানুষ থেকে অন্য মানুষে বয়স, লিঙ্গ কিংবা শরীরে থাকা কোনও গুরুতর রোগের উপর নির্ভর করে এই ভাইরাস তার আক্রমণের পদ্ধতিও বদলে নিচ্ছে। তবে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই একটি চেনা ছকেই শরীরে বাসা বাঁধছে এই মারণ ভাইরাস। মানব শরীরে করোনার এই আক্রমণের পদ্ধতি থেকেই এটিকে অন্য কোনও ফ্লু বা ভাইরাল ফিভার থেকে আলাদা করা যেতে পারে। সম্প্রতি সাউথ ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের এক সমীক্ষায় এমনই তথ্য জানা গিয়েছে। সেখানকার বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, করোনার উপসর্গকে যদি বোঝা যেতে পারে তা হলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি নিজেকে দ্রুত আইসোলেশনে রাখতে সক্ষম হবেন। এর ফলে সংক্রমণের মাত্রাও কমতে পারে। এ ক্ষেত্রে ভাইরাসের আক্রমণ ও শরীরে তার ক্রমবিস্তার নিয়ে একটি সুনির্দিষ্ট ধরনের কথা বলেছেন তাঁরা।
বিশেজ্ঞরা জানাচ্ছেন, বিস্তর পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর দেখা গেছে, কোনও করোনা আক্রান্ত ব্যক্তির ক্ষেত্রে প্রথমেই বেশ জ্বর দেখা যায়। কিন্তু সাধারণ জ্বর হলে সে ক্ষেত্রে প্রথমে সাধারণত সর্দি-কাশি হয়। তার পর জ্বর হয়।
করোনা ও সাধারণ জ্বরের মধ্যে কী পার্থক্য
বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, ফ্লু অর্থাৎ কোনও ভাইরাল জ্বরে অনেক সময় একের বেশি উপসর্গ দেখা যায়। কখনও অল্প-বিস্তর সর্দিকাশি, গা হাত-পা ব্যথা হয়। তবে করোনার ক্ষেত্রে এই আক্রমণের ধরন একটু আলাদা। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তরফে করোনা রোগীদের নমুনা পরীক্ষা ও তার পর্যবেক্ষণের পর করোনার উপসর্গগুলিকে কয়েকটি ধাপে ভাগ করা হয়েছে।
১. এক্ষেত্রে করোনা-আক্রান্ত ব্যক্তির প্রথমে জ্বর হবে।২. তার পর সর্দি-কাশি ও পেশিতে ব্যথা শুরু হবে।৩. এর সঙ্গে বমি ও পেট খারাপও শুরু হতে পারে।৪. শেষের দিকে শ্বাসকষ্টের সমস্যা শুরু হয়।
তবে মাথায় রাখতে হবে এই উপসর্গগুলি চূড়ান্ত নয়। কারণ যত দিন যাচ্ছে করোনা ভাইরাসও অপ্রত্যাশিত ভাবে শরীর ভেদে তার চরিত্র বদলাচ্ছে। নতুন অনেক উপসর্গ দেখা যাচ্ছে শরীরে। অনেক সময় কোনও উপসর্গই দেখা যাচ্ছে না। কিন্তু করোনা সংক্রমণ হচ্ছে। অনেক ক্ষেত্রে আবার মৃদু উপসর্গও দেখা যাচ্ছে। যেমন বুকে ব্যথা, গন্ধ না থাকা এগুলিও করোনার লক্ষণ হতে পারে।
তবে উপসর্গ ও ভাইরাসের বিস্তারের ধরন সম্পর্কে প্রাথমিক ধারণা থাকলে, কিছুটা হলেও এই মারণ সংক্রমণের গতিবিধি নিয়ন্ত্রণ সম্ভব হবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। পাশাপাশি, রোগ নির্ণয় ও তার নিরাময়ে বাড়তি সুবিধা পাওয়া যাবে। উপসর্গগুলি জানা থাকলে একেবারে শুরু থেকে যাবতীয় সচেতনতা অবলম্বন করা যাবে। কিছুটা হলেও ভাইরাসের ক্ষতিকর প্রভাব প্রতিহত করা যাবে।