#কলকাতাঃ হাসপাতালের স্বাস্থ্যকর্মীদের 'অপরাধ' তাঁরা শুধুমাত্র মাস্ক না পরার কারণ জানতে চেয়েছিলেন। বলেছিলেন, মাস্ক না পরলে যে হাসপাতালে ঢুকতে দেওয়া হবে না। এই 'অপরাধে' দুই স্বাস্থ্যকর্মীর কপালে জুটল জুতোপেটা। সঙ্গে অশ্রাব্য গালিগালাজ। এক মহিলা চিকিৎসক সেই দৃশ্য দেখে প্রতিবাদ করলে, তাঁকে অশ্রাব্য ভাষায় গালিগালাজ করা হয় বলে অভিযোগ। এখানেই শেষ নয়, হাসপাতালে ভাঙচুরও চালান হয় বলে অভিযোগ।
ঘটনাটি কলকাতার পশ্চিম বন্দর থানা এলাকার। কলকাতা পুরসভার ৮০ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা বিনোদ ও বিবেক তিওয়ারি নামে দুই ব্যক্তি বৃহস্পতিবার সকালে এলাকার প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ওষুধ আনতে যাচ্ছিলেন। হাসপাতালে ঢোকার মুহূর্তেই স্বাস্থ্যকর্মীরা মুখে মাস্ক না দেখে ওই দুই যুবকে আটকায়। তাঁরা জানান, মাস্ক না পরলে কোনওমতেই হাসপাতালের ভেতরে ঢুকতে দেওয়া হবে না। শুধু এটুকু বলার পরই বিনোদ আর বিবেক তিওয়ারি বচসা জুড়ে দেয় স্বাস্থ্য কর্মীদের সঙ্গে। তাঁদের দাবি, এই পাড়াতেই তারা থাকে। তাই পাড়ার মধ্যে মাস্ক পরার কোনও প্রয়োজন নেই। ফলে পরতে পারবেন না।
স্বাস্থ্যকর্মীরাও তাঁদের সিদ্ধান্তে অনড় থাকেন। জানিয়ে দেন, মাস্ক না পরলে হাসপাতালে ঢুকতে দেওয়া হবে না। এর পরেই বচসা গড়ায় হাতাহাতিতে। মাস্ক না পরা ওই দুই ব্যক্তি স্বাস্থ্যকর্মীদের গায়ে হাত তোলে। চলতে থাকে অশ্রাব্য ভাষায় গালিগালাজ। এই দৃশ্য দেখে এক মহিলা চিকিৎসক প্রতিবাদ করতে এগিয়ে এলে তাকে লক্ষ্য করেও ওই দুই অভিযুক্ত গালিগালাজ করতে থাকে। রণে ভঙ্গ না দিয়ে তাঁদের পরবর্তী লক্ষ্য হয় হাসপাতাল। ওই দুজনই হাসপাতালে জানালার কাঁচ ভেঙে দেয় বলে অভিযোগ। এর কিছু সময় পর পুলিশের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বিনোদ আর বিবেকের বিরুদ্ধে পশ্চিম বন্দর থানায় অভিযোগ দায়ের করে। সরকারি কাজে বাধাদান, হুমকি দেওয়া, সরকারি সম্পত্তি নষ্ট করার দায়ে ওই দুই জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। ধৃতদের শুক্রবার আদালতে তোলা হবে।
কেন্দ্রীয় সরকার যেখানে অর্ডিন্যান্স জারি করে মহামারি আইনে বদল আনতে উদ্যোগী হয়েছে, সেখানে এ ধরনের ঘটনা বুঝিয়ে দিচ্ছে মানুষের মধ্যে করোনা সম্পর্কে এখনও কতটা সচেতনতার অভাব। যে কারণে জনস্বাস্থ্যের জন্য মাস্ক পরতে বলার পরও স্বাস্থ্যকর্মী, পুলিশকর্মীদের হেনস্তার শিকার হতে হচ্ছে। গোটা দেশেই যখন লাফিয়ে বাড়ছে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা, বাড়ছে মৃত্যু, সেখানে এরপরে কবে মানুষ সচেতন হবে সেটাই সবথেকে বড় প্রশ্ন!
SUJOY PAL