#কলকাতা: লকডাউনের দীর্ঘ সময় এবং আনলকের সময়ও প্রতিনিয়ত অসংখ্য রোগী দেখেছেন ফুয়াদ হালিম। এরপরই গত কয়েকদিন আগেই তাঁর শারীরিক সমস্যা দেখা দেয়। পরপর দু’বার তিনি করোনা পরীক্ষা করান। দু’বারই রিপোর্ট নেগেটিভ আসে, তারপরেও তাঁর শ্বাসকষ্ট হওয়ায় চেষ্ট এক্স–রে করা হয়। সিটি স্ক্যান–সহ অন্যান্য প্রয়োজনীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হয়। সেখানেই ফুসফুসে সংক্রমণ ধরা পড়ে। এরপরই তাঁকে সোমবার মিন্টো পার্কের বেলভিউ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। মেডিসিন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক রাহুল জৈনের তত্ত্বাবধানে আইসিইউতে ভর্তি করা হয় তাঁকে। এরপর হাসপাতালে তাঁর আরও দু’বার করোনা পরীক্ষা করা হয়,সেই দুবারই রিপোর্ট নেগেটিভ আসে। চিকিৎসকরা তাও আরও নিশ্চিত হওয়ার জন্য পঞ্চমবার করোনা পরীক্ষা করার সিদ্ধান্ত নেন। আর সেই রিপোর্ট বৃহস্পতিবার রাতে এলে দেখা যায় ফুয়াদ হালিম করোনা পজিটিভ। অর্থাৎ করোনা আক্রান্ত হয়েছেন চিকিৎসক ফুয়াদ হালিম। তবে এরই সঙ্গে তাঁর ভাইরাল নিউমোনিয়া চিহ্নিত করেছেন চিকিৎসকরা। তবে এই মুহূর্তে তাঁর শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।
ফুয়াদ হালিম। পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভার প্রবাদপ্রতিম টানা ২৯ বছরের স্পিকার সিপিএম নেতা আব্দুল হালিম এর পুত্র। নিজেও সিপিএম দলের সদস্য। গত লোকসভা নির্বাচনে হেভিওয়েট ডায়মন্ড হারবার কেন্দ্র থেকে সিপিএমের হয়ে ভোটে দাঁড়িয়েছিলেন আর বিপুল ভোটে তৃণমূলের অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে হেরেছিলেন। তাতে কী? তিনি যে হার না মানা এক চিকিৎসক। তাই রাজনৈতিক পরাজয় মানুষের কাছ থেকে তাঁকে দূরে সরিয়ে দেয়নি। বরং গরিবের জন্যে ভাবনা বেড়েছে তাঁর। করোনা-লকডাউন বিধ্বস্ত এক রাজ্যের রাজধানী শহরে বসে চিকিৎসক, ফুয়াদ হালিম তাঁর নিজস্ব হাসপাতালে মাত্র ৫০ টাকায় সাধারণ মানুষের ডায়ালিসিস করার ব্যবস্থা করেছেন।
১২ বছর আগে ফুয়াদ হালিম, তাঁর পরিবার, দেশ বিদেশে ছড়িয়ে থাকা বন্ধু-বান্ধবদের নিয়ে পার্ক স্ট্রিটের পাশের কিড স্ট্রিটের এমএলএ হোস্টেলের বিপরীতে বাড়ির পাশেই হাসপাতাল গড়েন। কলকাতা স্বাস্থ্য সংকল্প। মূলত গরিবের হাসপাতাল। শুরু হয়েছিল সাড়ে 500 টাকা দিয়ে ডায়ালিসিস করা। পরে কমিয়ে লকডাউনের আগে পর্যন্ত মাত্র ৩৫০ টাকায় ডায়ালিসিস হত এই হাসপাতালে। কিন্তু লকডাউন ঘোষণা হতেই তিনি ভাবেন, যাতায়াতের তেমন সুযোগ কোথায় এখন? আসতে-যেতেই যে অনেক টাকা বেরিয়ে যাবে মানুষগুলোর! সিদ্ধান্ত নেন কমানো হবে ডায়ালিসিসের খরচ।
ভোটের লড়াইয়ে হেরে গেলেও অসংখ্য মানুষের মুখে হাসি ফোটানো চিকিৎসক ফুয়াদ হালিমের অসুস্থতার খবর শুনে তাঁর অসংখ্য রোগীরা চিন্তিত হয়ে পড়েছেন। তবে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন আশঙ্কার কোনও কারণ নেই। করোনা চিকিৎসার নির্দিষ্ট নিয়ম মেনে আরও কয়েকদিন পর্যবেক্ষণে থাকতে হবে চিকিৎসক ফুয়াদ হালিমকে।
ABHIJIT CHANDA
নিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।
Tags: Coronavirus