#বুখারেস্ট: ঘাড়ের কাছে একটা কামড়। সব রক্ত শুষে নেবে সে ! অনেকে বলেন গল্প কথা, অনেকের কাছে আবার জীবন্ত ইতিহাস। ড্রাকুলা মানেই ভয়ে গা ছমছম করা কাহিনী। দক্ষিণ-পূর্ব ইউরোপের দেশ রোমানিয়া গিয়েছেন, অথচ ড্রাকুলা দুর্গে প্রবেশ করেননি এমন পর্যটক বিরল। কোভিড মহামারী রুখতে সেই দুর্গকে এবার অভিনব কায়দায় ব্যবহার করল রোমানিয়া সরকার। দুর্গের প্রবেশ পথে দাঁড়িয়ে ড্রাকুলা। অদৃশ্য শত্রু করোনা ভাইরাসকে খতম করতে ইয়াবড় সিরিঞ্জ তাঁর হাতে। দেখলেই যে কেউ চমকে উঠবে।
কিন্তু আদতে এই দুর্গে চলছে টিকাকরণ কর্মসূচি। সরকারি উদ্যোগে এখানেই চলছে রোমানিয়ানদের প্রতিষেধক দেওয়ার কাজ। আগাম নাম নথিভূক্তিকরণ না করেই মে মাসের প্রত্যেক শুক্র, শনি ও রবিবার টিকা নিতে পারবেন পর্যটকরা। পাশাপাশি, টিকা নিলে মিলবে প্রবেশ মূল্যে বিশেষ ছাড়ও। ব্রাম স্টোকারের আইকনিক উপন্যাসই এমন উদ্যোগের পিছনে অনুঘটকের কাজ করেছে বলে অনেকেই মনে করছেন। সে যাই হোক, টিকাকরণ কেন্দ্র হিসেবে ড্রাকুলা দুর্গ ইতিমধ্যেই বেশ জনপ্রিয় হয়েছে।
প্রতিদিনই বহু মানুষ এখানে এসে প্রতিষেধক নিচ্ছেন বলে স্থানীয় প্রশাসন সূত্রে খবর। কোভিডের বাড়বাড়ন্ত ইউরোপের এই ছোট্ট দেশটিতে কিছু কম নয়। তথ্য বলছে, এ পর্যন্ত ১০ লক্ষেরও বেশি মানুষ আক্রান্ত। মৃত্যুর সংখ্যা পৌঁছে গিয়েছে ২৯ হাজারের ঘরে। আর সেকারণেই কোভিড মহামারী রুখতে দ্রুত টিকাকরণ কর্মসূচি সম্পন্ন করতে চায় রোমানিয়া সরকার। আগামী সেপ্টেম্বরের মধ্যে তাঁরা এক কোটি মানুষকে প্রতিষেধক দেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করেছে।
কিন্তু, টিকা নিতে বহু মানুষের অনীহা সরকারকে ভাবাচ্ছে। তাই টিকাকরণ নিয়ে সচেতনতা বৃদ্ধিতে একাধিক পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি, অভিনব কিছু পরিকল্পনাও গৃহীত হয়েছে। তারই অন্যতম ড্রাকুলা দুর্গকে টিকাকেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার করা। রোমানিয়ার বিখ্যাত শহর বুখারেস্ট। সেখান থেকে ১৭০ কিমি উত্তরে কার্পেথিয়ান পাহাড়। তার পাদদেশে ঘন জঙ্গল।
সেই পাহাড়ের চূড়ায় অবস্থিত ড্রাকুলা দুর্গ। এই ঐতিহাসিক দুর্গের সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে মধ্যযুগীয় অত্যাচারের নির্মম ইতিহাস। সেটা ৫০০-৬০০ বছর আগের কথা। কথিত, ওই পাহাড়ে এক অত্যাচারী শাসক ছিলেন। তাঁর নাম ভলাদ। ক্রুসেড নামক ধর্মযুদ্ধে তিনি অবশ্য অটোমানদের বিরুদ্ধে লড়েছিলেন। তবে ইতিহাসকে কাজে লাগিয়ে টিকাকরণ প্রক্রিয়ার এই অভিনব কায়দা অবশ্য নজর টেনেছে।
নিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।