রাজ্যে কেন্দ্রীয় দল আশা নিয়ে চরম সংঘাত। রাজ্যের করোনা পরিস্থিতি প্রশ্নে কেন্দ্র-রাজ্য সংঘাত চরমে উঠেছে। করোনা যুদ্ধে কেন্দ্র রাজ্য। রাজ্য তথ্য গোপন করছে আক্রমণ দিলীপের। রাজ্যের বিরুদ্ধে পাল্টা টোপ বিজেপি রাজ্য সভাপতির। রাজ্য কেন্দ্রীয় দল নিয়েই রাজ্য রাজনীতিতে কালবৈশাখী। কেন্দ্র-রাজ্যের দুই শাসক দলের মধ্যে তরজা একেবারে তুঙ্গে।
রাজ্যের সাত জেলায় করোনা পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে সোমবার বঙ্গে পৌঁছয় কেন্দ্রের দুই প্রতিনিধি দল। নিয়ে কেন্দ্র-রাজ্য সংঘাত তুঙ্গে। একদিকে প্রশাসনিক চাপান-উতোর আর একদিকে রাজনৈতিক তরজা ।
সোমবারই মুখ্যমন্ত্রী প্রশ্ন তোলেন কীসের ভিত্তিতে রাজ্যে কেন্দ্রীয় দল? কেন কেন্দ্রীয় দলের আসা নিয়ে নবান্ন কে ঠিক সময়ে জানানো হয়নি । এই সুরেই মঙ্গলবার সরব হয় তৃণমূল। লোকসভায় তৃণমূলের দলনেতা সুদীপ বন্দোপাধ্যায় বলেন যে, দিল্লির প্রতিনিধিরা আগে পৌঁছে যাচ্ছে তারপর মুখ্যমন্ত্রী জানতে পারছেন এটা দুর্ভাগ্যজনক। কেন্দ্রের প্রতিটি কর্মসূচি মেনে চলছে রাজ্য। সাত জেলায় গিয়ে কেন্দ্রের দল কী দেখবে? কেন্দ্রীয় দল পাঠানো কী উদ্দেশ্যে? আলোচনা করলেই বিরোধ হতো না। পাল্টা বিজেপির দাবি কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দল পাঠানো নিয়ে রাজ্যকে মোটেই অন্ধকারে রাখা হয়নি।
বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের দাবি 'হয়তো আগে জানলে এয়ারপোর্টে আটকাত। আটকাতে না পেরে কষ্ট পাচ্ছেন। আলোচনা আগেও করেছে আলোচনা করতে চাইলে ওঁরাই করেন না। কী কারণে এসেছে চিঠিতে তো সবই লেখাই আছে।'
রাজ্যসভায় তৃণমূলের দলনেতা ডেরেক ও ব্রায়ান অভিযোগ করেছেন রাজ্য যেখানে করোনার বিরুদ্ধে লড়ছে, কেন্দ্র সেখানে রাজ্যের বিরুদ্ধে লড়ছে । ডেরেকের প্রশ্ন , ' এটা কি যুক্তরাষ্ট্রীয় পরিকাঠামো ?'
পাল্টা দিলীপের বক্ত্যব্য,
'এনাদের একটা নিজস্ব স্টাইল আছে রাজনীতিতে। টাকা পয়সা চাই যখন তখন যুক্তরাষ্ট্রীয় পরিকাঠামোর অধিকারের প্রশ্ন ওঠে। যেই কেন্দ্র হিসাব চাইবে বা কি ঘটছে জানার চেষ্টা করবে বা চিঠি দেবে বা ডেকে পাঠাবে তখন যুক্তরাষ্ট্রীয় পরিকাঠামোর বাহানা দিয়ে এরা সমস্যা এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করবে। এমন মনোভাব যেন পশ্চিমবঙ্গ ভারতের বাইরে। ভারতবর্ষেরআইন সংবিধান সুপ্রিম কোর্ট এখানে চলবে না। মিথ্যাচার ফাঁস হয়ে যাওয়ার ভয় পাচ্ছে রাজ্য। লড়াই,অসহযোগিতা রাজ্য করছে। রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে রাজ্যের লড়াই। এখানকার অধিকার নেব কিন্তু দায়িত্ব পালন করব না। এই ওদের মনোভাব। '
সোমবার প্রধানমন্ত্রী কে লেখা চিঠিতে মুখ্যমন্ত্রী করা দাবির সুর ধরেই লোকসভায় তৃণমূলের দলনেতা সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন উত্তরবঙ্গের পরিস্থিতি সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে উত্তরবঙ্গ থেকে কোন ও উদ্বেগজনক খবর নেই উত্তরবঙ্গ নিরাপদে আছে । তারই পাল্টা দিয়েছেন দিলীপ ঘোষ, তিনি বলেন
'উত্তরবঙ্গে কেন ওয়েস্টবেঙ্গল মেডিকেল কলেজকে বন্ধ করা হয়েছে। ওখানকার চিকিৎসক-নার্স ও অন্যান্যরা অসুস্থ হয়েছে আলিপুরদুয়ারের মানুষ মারা গিয়েছে তার টেস্ট না করে রাতের অন্ধকারে কবর দিতে যাওয়া হয়েছিল। সাধারণ মানুষ গাড়ি পুড়িয়ে পুলিশকে পিটিয়েছে, পুলিশ জঙ্গলে লুকিয়েছে। এটা কি সুস্থতার লক্ষণ?' প্রশ্ন দিলীপ ঘোষের।
রাজ্যে কেন্দ্রীয় দল পাঠানোর পিছনে পদ্ম শিবিরের রাজনীতি দেখছে তৃণমূল । রাজ্যসভায় তৃণমূলের দলনেতা ডেরেক ও ব্রায়ানের প্রশ্ন, পশ্চিমবঙ্গ থেকে গুজরাট, উত্তরপ্রদেশে সংক্রমণ বেশি হওয়া সত্ত্বেও সেখানে কেন প্রতিনিধিদল পাঠাচ্ছে না মোদি সরকার। রাজ্য বিজেপি শাসিত বলে? এর পাল্টায় দিলীপ ঘোষ জানিয়েছেন যে অন্যান্য রাজ্যে নিয়ম-কানুন মানা হচ্ছে বলেই প্রতিনিধি দল পাঠানোর প্রয়োজন হয়নি। এখানে কেউ লকডাউন মানছে না। অন্যদিকে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয় বলেছেন এ ধরনের প্রশ্ন তোলা বোকামি ছাড়া আর কিছুই নয়। অযথা রাজনীতি করছে তৃণমূল।
করোনা লকডাউনে স্তব্ধ দেশ। তবে কেন্দ্র রাজ্যের দুই শাসকদল একেবারে রণং দেহি। একে অপরকে নিশানা করে তাদের সুর সপ্তমে।
DEBAPRIYA DUTTA MAJUMDAR
নিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।
Tags: Coronavirus, Dilip Ghosh