#কলকাতা: গাফিলতির চরম নিদর্শন। কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দল-কে নিয়ে হাসপাতাল কর্মীদের ব্যস্ততার মাঝেই এমআর বাঙ্গুর থেকে কিছুক্ষণের জন্য উধাও একজন করোনা পজিটিভ আক্রান্ত। বৃহস্পতিবার বেলা তখন ১টা হবে। কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দল হাসপাতালের এক ওয়ার্ড থেকে অন্য ওয়ার্ডে ঘুরে ঘুরে দেখছেন। পরিদর্শন করছেন। স্বাস্থ্যকর্মী, পুলিশ, স্বাস্থ্য আধিকারিকের ছয়লাপ রাজ্যের অন্যতম করোনা চিকিৎসা কেন্দ্র। জীবাণুমুক্ত করা হচ্ছে গোটা হাসপাতাল চত্বর। এরই মধ্যেই হৈ হৈ করে ওঠেন কয়েকজন হাসপাতাল কর্মী। "সরে যান, সরে যান! করোনা পজিটিভ পেশেন্ট!"
আতঙ্কে হুড়োহুড়ি শুরু হয়ে যায়। উপস্থিত মানুষজন হাসপাতালের ফুটপাত ছেড়ে একলাফে রাস্তায় নেমে গিয়েছেন। তখনই দেখা গেল, বাঙ্গুর হাসপাতাল লাগোয়া দেশপ্রাণ শাসমল রোডের ফুটপাত ধরে ধীর পায়ে হাঁটছেন চেক টি-শার্ট পরিহিত এক প্রৌঢ়। হাসপাতাল কর্মীদের চোখে পড়ার পর তাদের ডাকাডাকি ও তৎপরতাতেই রাজপথ লাগোয়া ফুটপাত ছেড়ে হাসপাতালের পথ ধরেন প্রৌঢ়। কত নম্বর বেড? প্রশ্নের উত্তরে অস্ফুট গলায় বেড নম্বরও বলেন। কোথায় গেছিলেন? "এই এখানে একটু বেড়াচ্ছিলাম।"
এরপর আর কথা বাড়ানো যায়নি। হাসপাতাল কর্মীরাই ভেতরে নিয়ে যান প্রৌঢ়কে। শরীরে জীবাণু মুক্ত স্প্রে করে এমারজেন্সি গেট দিয়েই ভেতরে নিয়ে যাওয়া হয় প্রৌঢ়কে।হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ এ বিষয়ে সরাসরি কোনো মন্তব্য করতে রাজি হয়নি নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মী বলেন, "শুনেছি এক করোনা আক্রান্তকে বেসরকারি একটি গাড়ি হাসপাতালের বাইরে নামিয়ে দিয়ে চলে যায়। সেই থেকে একটা বিভ্রান্তি হয়েছে।"
তাহলে প্রশ্ন হাসপাতালে নবাগত করোনা আক্রান্তকে হাসপাতাল কর্মীরা প্রথম দর্শনেই চিনলেন কী করে? প্রৌঢ়কে ভেতরে ঢোকানোর পর পুরো হাসপাতাল চত্বর জীবাণুমুক্ত করা হল কেন? ঘটনা যাই হোক! দিনে দুপুরে শহরের রাজপথে ঘুরে বেড়াচ্ছেন করোনা পজিটিভ রোগী। সেটাও আবার খোদ কলকাতার বুকে! হাসপাতালে নাকের ডগায়! বিষয়টা ভাবার মতো! ভাবানোর মতো!
PARADIP GHOSH