হোম /খবর /দক্ষিণবঙ্গ /
নরমুণ্ড নিয়ে সন্ন্যাসীদের উদ্দাম নাচ! করোনার দাপটে বন্ধ এবার গা শিউরে ওঠা দৃশ্য

নরমুণ্ড নিয়ে সন্ন্যাসীদের উদ্দাম নাচ! করোনার দাপটে বন্ধ এবার গা শিউরে ওঠা দৃশ্য

মেলা কমিটির সদস্যরা বলছেন, এবার করোনা ঠেকাতে গাজন উৎসব বাতিল করেছি আমরা। মরার মাথা নিয়ে খেলা দেখতে অনেকেই ভিড় জমাতেন।

  • Last Updated :
  • Share this:

#বর্ধমান: নরমুণ্ড নিয়ে সন্ন্যাসীদের নাচ! তা দেখতে উৎসাহীদের ভিড়ে জমজমাট কুড়মুন। এবার আর সে দৃশ্য দেখা গেল না।করোনা সংক্রমণ ঠেকাতে লক ডাউনের জেরে এবার বন্ধ বর্ধমানের কুড়মুনের ঐতিহ্যবাহী গাজন উৎসব। চৈত্র মাসের ২৯ তারিখ ভোরে  কলকাতা সহ রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে কয়েক হাজার মানুষ ভিড় জমান কুড়মুন গ্রামে। মৃত ব্যক্তির মাথা নিয়ে  শিব ভক্ত সন্ন্যাসীদের নাচ এখানের বিশেষ আকর্ষণ। কুড়মুনের শিব মন্দিরের সামনে ভিড় করেন রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা হাজার হাজার পুরুষ মহিলা। করোনার জেরে এবার শুনশান কুড়মুন। ভিড় নেই ইশানেশ্বর শিবের গাজনে।

মেলা কমিটির সদস্যরা বলছেন, এবার করোনা ঠেকাতে গাজন উৎসব বাতিল করেছি আমরা। মরার মাথা নিয়ে খেলা দেখতে অনেকেই ভিড় জমাতেন। ইশানেশ্বর মন্দিরেও বহু মানুষের ভিড় হতো। এখন কোনও রকম ঝুঁকি নিতে চাইনি আমরা। পুজো হচ্ছে নিয়ম মেনে। কিন্তু সেটা জন সমাগম ছাড়াই। এখন সবাই ঘরে থাকুক সেটাই আমরা চাই।

বর্ধমানের কুড়মুন ও সোনা পলাশি গ্রামের গাজন উৎসব পাঁচশো বছরের পুরানো। পাঁচ দিন ধরে উৎসব চলে। কুড়মুন গ্রামে বাবা ইশানেশ্বর ও সোনাপলাশি গ্রামে বুড়োশিবের গাজন ঘিরে এলাকা উৎসব মুখর হয়ে থাকে।

২৫ চৈত্র শুরু হয় উৎসব। সেদিন অনেকে সন্ন্যাসী হন।  ২৭ চৈত্র ঠাকুরকে গ্রামে ঘোরানো হয়। ২৮ তারিখ মধ্যরাতে অর্থাৎ  ২৯ চৈত্রের ভোরে  মৃতের মাথার খুলি নিয়ে খেলা শুরু হয়। সেই খেলা শেষ হলে নীলপুজো শুরু হয়।  ৩০ চৈত্র চড়ক। পয়লা বৈশাখ সন্ন্যাসীদের খাওয়ানো হয়। বিশাল মেলা বসে। ঘরে ঘরে আত্মীয়রা আসেন। বাদাম ভাজা, পাঁপড় ভাজা, জিলিপি, কাঠিভাজার দোকান বসে লাইন দিয়ে। নাগরদোলা, আইসক্রিম, ঘুগনির মজা নেন বাসিন্দারা। কাতারে কাতারে ভিড় করেন উৎসাহীরা।সেই ভিড় এড়াতেই এবার গাজনের মেলা বন্ধ। সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতেই উৎসব বাতিল করেছেন বাসিন্দারা। তাদের এই উদ্যোগে খুশি দেওয়ানদীঘি ও শক্তিগড় থানার পুলিশও।

মন্তেশ্বর থানার দেনুড় গ্রামেও এবার করোনা রুখতে গাজন বাতিল করা হয়েছে। এখানেও  ভোলানাথকে জল থেকে তুলে গ্রামে ঘোরানো হতো। এরপর তাকে নিয়ে যাওয়া হয় দীননাথ তলার শিব মন্দিরে। সেখানে নীলপুজোর পরে বসে চড়কের মেলা। এবারে করোনার সংক্রমণ  ছড়িয়ে পড়া আটকাতে চড়ক মেলা বন্ধ রাখা হয়েছে। বাসিন্দারা জানিয়েছেন, প্রথা মেনে পুজো হবে। তবে জন সমাগম আটকাতে যাবতীয় উৎসব বন্ধ রাখা হয়েছে।

Saradindu Ghosh

Published by:Elina Datta
First published:

Tags: Corona, Corona outbreak, Corona state lock down, Coronavirus, COVID-19, Gajon utsav