#ওয়াসো: একবার করোনা সংক্রমণ হলে রোগীর শরীর ফের করোনাভাইরাস আক্রমণ করতে পারে কি না, সেই নিয়ে বিগত বেশ কিছু মাস ধরে গবেষণা করছেন বিশেষজ্ঞরা। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে প্রথম এমন একটি কেস ধরা পড়ে। ২৫ বছরের যুবকের পর পর দু'বার সংক্রমণ হয়। এর পর সারা পৃথিবীতে হাতে গোনা কয়েকটি একই রকম কেস পাওয়া গিয়েছে। কিন্তু এত অল্প কেস থেকে কোনও সিদ্ধান্তে পৌঁছনো সম্ভব নয় বলে জানিয়ে দিয়েছেন বিজ্ঞানীরা। তবে কোভিড ১৯-এর নতুন করে সংক্রমণের সম্ভাবনা মাথায় রেখেই সরকারের উচিত করোনা বিধি নির্ধারণ করা, এটুকু বার বার বলা হচ্ছে।
প্রথমত, এটা স্পষ্ট যে নতুন করে সংক্রমণের সম্ভাবনা বলেই দেয় হার্ড ইমিউনিটি বলে কিছু হয় না। একাধিক বার কোভিড ১৯ সংক্রমণের অর্থ প্রথম বার ভাইরাস আক্রমণের পর সুস্থ হয়ে ওঠার সময়ে রোগীর শরীরে যে রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরি হয়েছে, তা নিখুঁত নয়।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নেভাদায় প্রথম যে যুবকের পুনর্সংক্রমণ হয়, তাঁকে পরীক্ষা করে চিকিৎসকেরা নানা রকম অনুমান করেছেন। প্রথম সম্ভাবনা, দ্বিতীয় বারের জন্য খুব বেশি পরিমাণে করোনাভাইরাসের সংস্পর্শে এসেছিলেন তিনি। অথবা দ্বিতীয় বারের সংক্রমণ আরও অনেক বেশি শক্তিশালী করোনা ভাইরাস দ্বারা হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
হংকং, ইকুয়েডর, বেলজিয়াম এবং নেভাদার পুনর্সংক্রমণের ঘটনা নিয়ে বিশেষজ্ঞদের গবেষণাটি এই সপ্তাহেই প্রকাশিত হয়েছে ল্যানসেট ইনফেকশস ডিজিজ জার্নালে।
কোভিড ১৯ ভাইরাস নিয়ে বিজ্ঞানীদের পূর্ব অভিজ্ঞতা না থাকায় একই চরিত্রের অন্য ভাইরাসের ধর্ম থেকে সিদ্ধান্তে আসতে চাইছেন ভাইরোলজিস্টরা। লিয়া ভ্যান ডার হোয়েক আমস্টার্ডামের এক অভিজ্ঞ ভাইরোলজিস্ট। মানবদেহকে আক্রমণ করতে পারে, এমন আরও চার রকমের করোনা ভাইরাসকে নিয়ে গবেষণা করছেন লিয়া। ৩০ বছরের বেশি বয়স, এমন দশজনের উপরে পরীক্ষা করে লিয়া সিদ্ধান্তে এসেছেন ওই ভাইরাস দ্বারা একাধিকবার সংক্রমিত হতে পারে মানুষ। পরীক্ষা চলাকালীন একজন রোগী ১৭ বার সংক্রমিত হয়েছিলেন। এএফপি কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে লিয়া তাই বলেন, কোভিড ১৯ ভাইরাস সম্ভবত একই চরিত্রের!
সোমবার গবেষক দল নেদারল্যান্ডের এক রোগীর ঘটনা সামনে এনেছেন। ৮৯ বছরের ওই রোগী ক্যানসারে আক্রান্ত ছিলেন। দ্বিতীয়বার কোভিড ১৯-এ আক্রান্ত হয়ে তাঁর মৃত্যু হয়। আগে থেকে ক্যানসারে ভোগার জন্য ওই রোগীর রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা প্রথম থেকেই দুর্বল ছিল। সেই অবস্থায় দ্বিতীয়বার সংক্রমণের ধাক্কা সামলাতে পারেনি দুর্বল শরীর। অর্থাৎ একবার কোভিড ১৯ সংক্রমণের সঙ্গে সঙ্গে দেহ যে হার্ড ইমিউনড হচ্ছে না, সেই প্রমাণ মিলেছে।
একবার ভ্যাকসিন বেরিয়ে গেলেই যে সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে, তেমনটাও মনে করছেন না বিজ্ঞানীরা। লিয়ার অনুমান, ভ্যাকসিন আবিষ্কার হলেও বার বার নিতে হতে পারে তা। আর এ এমন এক ভাইরাস, সভ্যতার সঙ্গে এ থেকেই যাবে, কোথাও মিলিয়ে যাবে না, সাফ বলছেন তিনি!
নিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।
Tags: Coronavirus, Coronavirus vaccine