#কলকাতা: করোনাভাইরাস কতদিন পর্যন্ত এ দেশে সংক্রমণ ছড়াবে তার জন্য একটি 'প্রেডিকশন সিস্টেম' বা আগাম ধারণার জন্য একটি মডেল তৈরি করলেন আইআইটি খড়গপুরের কম্পিউটার সায়েন্স বিভাগের এক অধ্যাপক। মূলত এই মডেলের মাধ্যমে আগামী দিনে স্বাস্থ্য, শিল্প, অর্থনীতির পাশাপাশি শিক্ষা সংক্রান্ত বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে সহযোগিতা করতে পারে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। এই মডেলকে একটি লজিস্টিক মডেল হিসেবে ব্যাখ্যা করছেন অধ্যাপকরা।
এই মডেলের মাধ্যমে IIT খড়গপুরের কম্পিউটার সায়েন্স ও ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক দাস দেখাতে চেয়েছেন আগামী দিনে কিভাবে করোনাভাইরাস সংক্রমণ ছড়াতে পারে। যদিও একটা নির্দিষ্ট সময়ের পর করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ একটা সমান্তরাল গ্রাফে পৌঁছাবে অন্তত এমনই বলা হচ্ছে এই গবেষণাতে। এই গবেষণার জন্য দেশের নির্দিষ্ট কিছু জায়গার এবং বিশেষত যে রাজ্যগুলি সবথেকে বেশি আক্রান্ত হচ্ছে সেই রাজ্যগুলির মধ্য থেকে মহারাষ্ট্র,তামিলনাড়ু, দিল্লি,গুজরাট, উত্তর প্রদেশ, রাজস্থান, পশ্চিমবঙ্গ এবং মধ্যপ্রদেশের তথ্য নিয়ে এই গবেষণা বা সমীক্ষা চালানো হয়েছে। এ প্রসঙ্গে অধ্যাপক দাস জানিয়েছেন, ‘ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার জন্য এই মডেল ব্যবহার করা যেতে পারে ।’
এই মডেলের মাধ্যমে গবেষণাতে গবেষকরা দেখাচ্ছেন বর্তমানে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ একটা নির্দিষ্ট জায়গায় বা স্থিতাবস্থা বজায় রাখবে না। এই সংক্রমণ স্পষ্টভাবেই দেখাচ্ছে যে এই ভাইরাস এই দেশে আরো অনেক মাস থাকতে চলেছে। এই প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে অধ্যাপক দাস জানাচ্ছেন, " আমাদের গবেষণা দেখাচ্ছে ভারতে এখনো পর্যন্ত করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ একটা সমান্তরাল জায়গায় পৌঁছাতে অনেক সময় লাগবে। সেই সমানতরাল জায়গায় পৌঁছাতে ন্যূনতম সময় লেগে যেতে পারে সেপ্টেম্বর মাসের শেষ দিকে। এই ভাইরাস কোনওভাবেই কোনও রিজিয়নকে স্বস্তি দেবে না আমাদের বাস্তবকে মানতে হবে। তাই আমাদের এখন প্রয়োজনীয় রূপরেখা তৈরি করতে হবে যাতে এই ভাইরাসের মোকাবিলা করা সম্ভব হয়।"
এই গবেষণার প্রেক্ষিতে আইআইটি খড়গপুর এর অধিকর্তা অধ্যাপক ভিরেন্দ্র কুমার তিওয়ারি বলেন, " আমরা এখন একটা অনিশ্চিত কালো বক্সের মধ্যে বাস করছি যেখানে আমরা জানি না যে আমাদের জীবন কীভাবে এগোবে এবং কিভাবে আমাদের পরিকল্পনা করতে হবে। সে ক্ষেত্রে এই ধরনের স্ট্যাটিস্টিকাল মডেল আমাদের অনেকটাই সহযোগিতা করবে ভবিষ্যতে প্ল্যান বা পরিকল্পনা করতে। এই মডেলের মাধ্যমে সহযোগিতা হবে আমাদের পঠন পাঠন বিশেষত সেমিস্টার পরীক্ষা নেওয়ার ক্ষেত্রে এবং বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের রূপরেখা নির্ধারণের ক্ষেত্রে।"
দেশজুড়ে ক্রমশই করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ একদিকে লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে। সোমবার পর্যন্ত গোটা দেশজুড়ে করনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে ৪ লক্ষ ২৫ হাজারেরও বেশি। যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য ভাবে মহারাষ্ট্র ১ লক্ষ ৩০ হাজারেরও বেশি আক্রান্ত হয়েছে করোনা ভাইরাসে। তবে আক্রান্ত হওয়ার পাশাপাশি সুস্থ হয়ে বাড়ি ফেরার সংখ্যাটাও অনেক বেশি কেন্দ্রীয় পরিসংখ্যান যা বলছে। তারই মধ্যে আইআইটি খড়গপুরের এই গবেষণা অন্তত অনেকটাই দিশা দেখাতে পারে বলে মনে করছে এই শিক্ষা-প্রতিষ্ঠানের গবেষকরা। সে ক্ষেত্রে সেপ্টেম্বরের শেষের আগে কোন ভাইরাসের সংক্রমণ ছড়ানোর প্রবণতা কমবে না আর এই গবেষণা অনেকটাই এই সংক্রমণ মোকাবিলাতে সহযোগিতা করবে বলেই মত বিশেষজ্ঞদের একাংশের।
সোমরাজ বন্দ্যোপাধ্যায়
নিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।
Tags: Corona, Coronavirus, IIT KHARAGPUR