হোম /খবর /দক্ষিণবঙ্গ /
সুতলি-কৌটো বোমা থেকে কার্তুজ-রিভলভার, সবই মেলে বুদ্ধ পূর্ণিমার এই মেলায়

সুতলি-কৌটো বোমা থেকে কার্তুজ-রিভলভার, সবই মেলে বুদ্ধ পূর্ণিমার এই মেলায়

বুদ্ধ পূর্ণিমায় বাবা বুড়োরাজের পুজো মানেই পূর্বস্থলীর জামালপুরে কয়েক দিন আগে থাকতেই সাজো সাজো রব পড়ে যায়। তার রেশও থাকে কয়েকদিন। হুগলি, নদিয়া মুর্শিদাবাদ ও পূর্ব বর্ধমানের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে অগণিত ভক্ত ভিড় করেন মেলায়।

  • Share this:

#পূর্বস্থলী: ফি বছর অস্ত্র বিক্রি হয় এই মেলায়। সুতলি বোমা থেকে কৌটো বোমা, কার্তুজ থেকে রিভলভার-মেলে সবই। সেই অস্ত্রের টানে আসেন বহু মানুষ। কিন্তু করোনা ভাইরাসের সংক্রমণের জেরে পূর্ব বর্ধমানের পূর্বস্থলী দুই ব্লকের জামালপুরে বাবা বুড়োরাজের পুজো অনুষ্ঠিত হল নিতান্তই অনাড়ম্বরভাবে। পুজো উপলক্ষে এবার মেলা বন্ধ। দোকান পাট বসেনি। তাই হল না অস্ত্রের কারবার। শুধুমাত্র কয়েক জন ভক্তের উপস্থিতিতে ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে শুধুমাত্র নিয়ম মেনে পুজো হচ্ছে।

বুদ্ধ পূর্ণিমায় বাবা বুড়োরাজের পুজো মানেই পূর্বস্থলীর জামালপুরে কয়েক দিন আগে থাকতেই সাজো সাজো রব পড়ে যায়। তার রেশও থাকে কয়েকদিন। হুগলি, নদিয়া মুর্শিদাবাদ ও পূর্ব বর্ধমানের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে অগণিত ভক্ত ভিড় করেন মেলায়। আত্মীয় পরিজনে প্রতিটি বাড়ি ভরে ওঠে। নাগরদোলা, পুতুল নাচ থেকে রকমারি নানান স্টলে ভরে ওঠে মেলা চত্ত্বর। পুজো ও মেলায় অশান্তি রুখতে আলাদা করে পুলিশ মোতায়েন করতে হয়। এবার সব শুনশান। পাঁচশো বছরেরও প্রাচীন বুড়োরাজের এই পুজো। বুদ্ধ পূর্ণিমার এই পুজোয় এক দিনে এক হাজারেরও বেশি ছাগ বলি হয়। বহু ভক্ত মানসিক পূরণ করেন। এবার এই মন্দিরে একটি ছাগ বলিও হয়নি। অন্যন্যবার শুধুই ভক্তের ভিড় দেখা যায়। গ্রীষ্মের দাবদাহ উপেক্ষা করে বহু মাইল পায়ে হেঁটে আসেন ভক্তরা। এবার জনশূন্য রাজপথ।

বুড়োরাজের মেলার আর এক আকর্ষন অস্ত্র কেনাবেচা। বহু বছর ধরে গোপনে এই কারবার চলে আসছে। সুতলি বোমা থেকে কার্তুজ, রিভলভার হাত বদল হয় পুলিশের নজরের আড়ালে। ভিড় নেই। তাই দেখা নেই সেই কারবারিদের। মেলায় অন্ধকার খুঁজে নিয়ে চলে গাঁজায় টান। পাঁপড় ভাজার স্টলের পেছনে কুন্ডলী পাকিয়ে ওঠে ধোঁওয়া। মাটির কলকে দু-হাতের তালুর ফাঁকে রেখে ধোঁয়ায় বুক ভরে নেন  ভক্তরা। নাগরদোলার কিছু দূরে বসে জুয়ার আসর। তেলে ভাজায় কামড় দিতে দিতে চলে জুয়া। এক রাতে জুয়ায় ওড়ে বহু লক্ষ টাকা। কেউ লাখপতি বনেন, কেউ ভিখাড়ি হয়ে বাড়ি ফেরেন। আজ সবই স্মৃতিকথা। মন্দির কমিটির সদস্যরা জানিয়েছেন, এবার যে আড়ম্বরের সঙ্গে পুজো হবে না জানাই গিয়েছিল। সেভাবে পুজো হলে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা যেত না। তাই মেলা বাতিলের কথা পুলিশকে আগেই জানিয়ে দেওয়া হয়েছিল। এদিন শুধুমাত্র নিয়ম মেনে পুজো হচ্ছে। গুটিকয়েক ভক্ত ছাড়া কাউকেই ঢুকতে দেওয়া হয়নি। ভক্তরাও পরিস্থিতি বিচার করে ভিড় করেননি।

Saradindu Ghosh

Published by:Shubhagata Dey
First published:

Tags: Bardwan purbasthali buroraj pujo, Corona Pandemic