#বর্ধমান: বর্ধমান শহরে করোনা আক্রান্ত হয়ে আরও দুজনের মৃত্যু হল। এই ঘটনায় শহর জুড়ে নতুন করে আতঙ্ক ছড়িয়েছে। এই নিয়ে বর্ধমান শহরে ছ’জন বাসিন্দা করোনা আক্রান্ত হয়ে মারা গেলেন। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে শহরের বাসিন্দাদের যথাসম্ভব ঘরে থাকার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। খুব প্রয়োজন ছাড়া বাইরে না বেরনোই ভালো বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। চিকিৎসা–সহ জরুরি প্রয়োজনে একান্তই বাইরে বের হতে হলে মাস্ক বা ফেস কভারে মুখ ঢাকার পরামর্শ দিয়েছেন তাঁরা।
শহরে এমনিতেই টানা লকডাউন চলছে। একের পর এক ব্যক্তির মৃত্যু হওয়ায় বাইরে বাসিন্দাদের বিশেষ দেখা যাচ্ছে না। রাস্তাঘাট শুনশান রয়েছে। এদিন বর্ধমানের বাজারগুলোতে বাসিন্দাদের ভিড় ছিল খুবই কম। বর্ধমান শহরের সাত ও চোদ্দ নম্বর ওয়ার্ডে করোনা আক্রান্ত হয়ে দুজনের মৃত্যু হয়েছে। তাঁরা জ্বর ও শ্বাসকষ্ট–সহ করোনার উপসর্গ নিয়ে বর্ধমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন। শুক্রবার তাঁদের মৃত্যু হয়। মৃত্যুর পর তাঁদের করোনার রিপোর্ট পজিটিভ এসেছে। করোনা আক্রান্ত হয়েই তাঁরা মারা গিয়েছেন বলে জেলা প্রশাসন জানিয়েছে।
এছাড়াও বর্ধমান শহরে নতুন করে আরও দশ জন করোনা আক্রান্ত হয়েছেন। এই নিয়ে এই শহরে নব্বই জনেরও বেশি বাসিন্দা করোনা আক্রান্ত হলেন। এছাড়াও শহরের অনেকের দেহেই করোনার উপসর্গ মিলেছে বলে জানা গিয়েছে। তাঁরা নিজেদের উদ্যোগে বর্ধমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে গিয়ে লালারসের নমুনা জমা দিচ্ছেন।
এমনিতেই বর্ধমানে বেশ কয়েকজন চিকিৎসক করোনা আক্রান্ত হয়েছেন। করোনা আক্রান্ত পুলিশ কর্মী অফিসারদের সংখ্যা দিন দিন বেড়েই চলেছে। বর্ধমান মহিলা থানার পাঁচ জন কর্মী ও অফিসার করোনা পজিটিভ হয়েছেন। তার ওপর আক্রান্ত হচ্ছেন সাধারণ বাসিন্দারাও। মৃতদের অধিকাংশই মাঝবয়সী বলে জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে। বর্ধমানের কালীবাজার এলাকায় এক ব্যক্তির করোনা আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছিল। মৃত্যুর কয়েকদিন আগে তিনি পূর্ব বর্ধমান জেলা পরিষদ গিয়েছিলেন। তাছাড়া বর্ধমান জেলা পরিষদের সহকারি সভাধিপতি দেবু টুডুর নিরাপত্তারক্ষীও করোনা আক্রান্ত হয়েছেন। এসবের জেরে সাত দিন পূর্ব বর্ধমান জেলা পরিষদ ভবন বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। জেলা পরিষদ করোনা মুক্ত রাখতে কড়া পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছিল। জেলা পরিষদের একদিকের প্রবেশপথ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। এছাড়াও সাধারণের গতিবিধির ওপর কড়া নজরদারি ব্যবস্থা করা হয়েছিল। তারপরও নিরাপদ মনে না হওয়ায় বন্ধ রাখা হয়েছে জেলা পরিষদ ভবন। জেলা পরিষদের সভাধিপতি শম্পা ধারা জানান, শহর জুড়ে লকডাউন চলছে। সব সরকারি ও বেসরকারি অফিস বন্ধ রাখা হয়েছে। সে জন্যেই বন্ধ রয়েছে জেলা পরিষদ। আমরা ঘর থেকেই জেলার বিভিন্ন কাজকর্মের ওপর নজর রাখছি।
Saradindu Ghosh