#কলকাতা: আগামিকাল, সোমবার রাজ্য জুড়ে বন্ধ থাকবে রেশন দোকান। গত দু'মাস ধরে একাধিক মানুষ রেশন দোকান মুখী হয়েছেন। তাই রেশন দোকান স্যানিটাইজ করতে হবে বলে জানিয়েছে খাদ্য দফতর। এর জন্য রাজ্যের ২১ হাজার রেশন দোকান বন্ধ থাকবে সোমবার। খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক আজ, রবিবার এই কথা জানিয়েছেন। অন্যদিকে বুধবার পর্যন্ত বন্ধ রাখা হবে খাদ্য দফতরের বিভিন্ন গুদাম। ইতিমধ্যেই দফতরের পক্ষ থেকে এই সিদ্ধান্তের কথা জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক জানিয়েছেন, গোটা রাজ্যের বিভিন্ন রেশন দোকানে বহু মানুষ ভিড় করেছেন।
সামাজিক দুরত্ব বজায় থাকলেও বা মাস্ক পরলেও সংক্রমণের আশঙ্কা পুরোপুরি উড়িয়ে দেওয়া যায় না। তাই দোকানগুলিকে পুরোপুরি স্যানিটাইজ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। দোকান বন্ধ না করে এই কাজ করা সম্ভব নয়। চলতি মাসের রেশন তুলে নিয়েছেন গ্রাহকরা। তাই সমস্যা হবে না বলে একদিন বাছাই করা হয়েছে।
এছাড়া খাদ্য দফতরের গুদামে যেহেতু প্রচুর লরি চালক আসেন তাই গুদামগুলিও স্যানিটাইজ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। গ্রাহকদের সাথে খারাপ ব্যবহার করলেই পড়তে হবে শাস্তির মুখে। আরও একবার জানিয়ে দেওয়া হল খাদ্য দফতরের তরফ থেকে। মুর্শিদাবাদের ঘটনার পড়ে নড়েচড়ে বসেছিল রাজ্যের খাদ্য দফতর। অভিযোগ রেশন ডিলারের পরিবারের বিরুদ্ধে। তার খারাপ আচরণের জেরেই ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন গ্রামবাসীরা। খাদ্য দফতরের তরফ থেকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছিল, ভবিষ্যতে রাজ্যের কোনও প্রান্ত থেকে যদি এমন অভিযোগ আসে তাহলে তার বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ইতিমধ্যেই খাদ্য দফতর জেলাওয়ারি রিপোর্ট তৈরি করেছে। সেখানে উঠে এসেছে উত্তর ২৪ পরগণায় সব চেয়ে বেশি শো-কজের ঘটনা ঘটেছে।
খাদ্যমন্ত্রীর নিজের জেলায় ৮২ জন রেশন ডিলারকে শো-কজ করা হয়েছে। পিছিয়ে নেই দক্ষিণ ২৪ পরগণা। সেখানে শো-কজ করা হয়েছে ৬৪ জনকে। তারপর আছে নদীয়া। সেখানে ৫৩ জনকে শো-কজ করা হয়েছে। মুর্শিদাবাদ জেলায় শো-কজ করা হয়েছে ৪৯ জনকে। উত্তর দিনাজপুর জেলায় শো-কজ করা হয়েছে ৩৪ জনকে। পূর্ব মেদিনীপুর করা হয়েছে ২৭ জনকে। রেশন নিয়ে সবচেয়ে কম অভিযোগ এসেছে ঝাড়গ্রাম থেকে। এখানে মাত্র ১ জন রেশন ডিলারকে শো-কজ করা হয়েছে। হাওড়ায় ৫ ও কালিম্পং জেলায় ৬ রেশন ডিলারকে শো-কজ করা হয়েছে।
সবচেয়ে বেশি রেশন ডিলার সাসপেন্ড হয়েছে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলায়। সেখানের ১৮ জনকে সাসপেন্ড করা হয়েছে। নদিয়া ও মুর্শিদাবাদ জেলায় ১১ জন করে রেশন ডিলারকে সাসপেন্ড করা হয়েছে। কলকাতা, আলিপুরদুয়ার, কোচবিহার, দার্জিলিং, কালিম্পং ও ঝাড়গ্রাম জেলায় কাউকে সাসপেন্ড করতে হয়নি। জরিমান আদায় হয়েছে আলিপুরদুয়ার জেলা থেকে। ১০ জনের থেকে জরিমানা আদায় হয়েছে। জলপাইগুড়ি জেলায় ৬ রেশন ডিলারের থেকে জরিমানা আদায় করা হয়েছে। মোট ১০ রেশন ডিলারকে গ্রেফতার করা হয়েছে। দুই ২৪ পরগনায় দু'জন করে ডিলার গ্রেফতার।
এছাড়া জলপাইগুড়ি, মুর্শিদাবাদ, নদিয়া, পশ্চিম মেদিনীপুর ও পুরুলিয়া জেলায় একজন করে ডিলার গ্রেফতার হয়েছে। অশান্তি পাকানোর দায়ে গ্রেফতার করা হয়েছে ৫১ জনকে। খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক জানিয়েছেন, "যাদের শো-কজ করা হয়েছে তাদের বেশিরভাগের বিরুদ্ধে অভিযোগ খারাপ ব্যবহারের। একই অভিযোগ বারবার এসেছে অনেকের বিরুদ্ধে। এই অবস্থা চলতে থাকলে দফতর তাদের সরিয়ে দেবে।" ইতিমধ্যেই বিভিন্ন জেলায় আধিকারিকদের নামানো হয়েছে পরিস্থিতি দেখার জন্য। এখনও পর্যন্ত এই মাসে ৮ কোটি ৮৩ লক্ষের বেশি মানুষ রেশন পেয়ে গিয়েছেন। মোট ৬৯২টি অভিযোগের তদন্ত চলছে।
Abir Ghoshal
নিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।
Tags: Coronavirus