#কলকাতা: দু'চোখ জুরে স্বপ্ন ছিল কলকাতা শহর দেখার। শুনেছিলেন এই শহরের মানুষের চলা-বলা একেবারে অন্য রকম। বড় বড় বাড়ি আর প্রচুর গাড়ি। স্বামী মনতোষ দাস কর্মসূত্রে অনেক দিন ধরেই কলকাতায়। স্বামী সামান্য অসুস্থ শুনেই তাই চলে এসেছিলেন পুনম দেবী। কিন্তু সব চিন্তা এক পলকে পাল্টে দিয়েছে করোনা ভাইরাস। শহরবাসীর গাড়ির হর্ন আর লোকের কোলাহল নেই। অগত্যা কলকাতায় আটকে পড়েন পুনম দেবী। আজ প্রায় ৭০ দিন আটকে থাকার পর অবশেষে বাড়ি ফিরতে পারলেন তিনি।
বিহারের বাড়িতে রেখে আসা সন্তানদের জন্য মন কেমন করত পুনমদেবীর। শুধুই এই দম্পতিই নন, তাঁদেরই পরিচিত প্রায় ১৫০ জনের বেশি এভাবেই শহরে আটকে রয়েছে। লাগাতার তাঁরা চেষ্টা করেছেন বিহারে যাওর। সম্ভব হয়নি, বারবার বলা হয়েছে সরকারের কাছে নিয়ম মেনে আবেদন করতে। কিন্তু কী ভাবে করতে হবে আবেদন,সেটাও জানতেন না তাঁরা। জানতেন শুধুমাত্র বাড়ির ঠিকানা।
লকডাউনের প্রথমদিন থেকেই একটি মানুষকে পাশে পেয়েছিলেন ওঁরা। তাঁর নাম বিকাশ জয়সওয়াল। রান্নার বিভিন্ন সামগ্রী দিয়ে সাহায্য করেছেন। ইতিমধ্যে কর্মহীন হয়েছেন মনোতোষষ। বিকাশবাবুই শুরু করেন সরকারি নিয়ম মেনে বাড়ি ফেরানোর কাজ। শুধু মনোতোষদেরই নয়, অন্য যাঁরা চেয়েছিলেন বাড়ি যেতে, তাঁদের নাম ও লিখে নেন তিনি।
সেই সব আবেদন করে সোমবার হাতে এল ছাড়পত্র। নিয়ম অনুযায়ী ত্রিশ জনের বেশি একটি বাসে যেতে পারবেন না। তবে জায়গা পেয়েছেন মনোতোষ পুনম। ধীরে ধীরে জায়গা পাবেন অন্যরাও। ধর্মতলায় একটি বাসে ত্রিশ জনকে থার্মাল স্ক্যান করে তাদের বাসে তুলে দিলেন বিকাশ জয়সওয়াল।
ওঁদের মুখে শেষ বিকেলে হাসি, অবশেষে ফিরতে পারছেন। বিকাশবাবুকে ধন্যবাদ জানানোর ভাষা নেই ওঁদের কাছে। তবে বিকাশবাবুর মন খারাপ, চোখের কোণে জল৷ বললেন, অনেকদিন ছিল তো, পরিবারের লোক হয়ে গিয়েছিলে ওঁরা।
নিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।
Tags: Coronavirus, COVID-19, Lockdown, Migrant labour