হোম /খবর /কলকাতা /
করোনামুক্ত বিরল কাওয়াসাকি রোগাক্রান্ত ৪ মাসের শিশু, সুস্থ করে বাড়ি ফেরাল শহরের তিন হাসপাতাল

করোনামুক্ত বিরল কাওয়াসাকি রোগাক্রান্ত ৪ মাসের শিশু, সুস্থ করে বাড়ি ফেরাল শহরের তিন হাসপাতাল

প্রতীকী ছবি

প্রতীকী ছবি

বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের দাবি, বিশ্বে সম্ভবত সে-ই করোনা ও কাওয়াসাকি আক্রান্তদের মধ্যে কনিষ্ঠতম ।

  • Share this:

#কলকাতাঃ গত তিন মাস ধরে করোনা আতঙ্কে কাঁটা রাজ্যবাসী । প্রতিদিন রাজ্য-সহ গোটা দেশে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা পাল্লা দিয়ে বাড়ছে । বাড়ছে মৃত্যু । আর গোদের ওপর বিশফোঁড়ার মত উদয় হয় আমফান । এ রাজ্যের কয়েক লক্ষ মানুষ চূড়ান্ত ক্ষতিগ্রস্ত হয় এই ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে । এত দুঃস্বপ্নের মধ্যেও আশার আলো ।

হুগলির আরামবাগের বাসিন্দা ব্যাঙ্ক কর্মচারী স্বামী-স্ত্রীর পুত্র সন্তান জন্ম হয় ইএম বাইপাস সংলগ্ন মুকুন্দপুর আমরি হাসপাতালে । বাড়ি ফিরে যাওয়ার পর ৩ মাস পর থেকে মাঝে মধ্যেই জ্বর আসছিল শিশুটির । এলাকার চিকিৎসককে দেখানো হয় ।  তবে জ্বর কমছিল না , শেষমেশ ২ রা মে আবার প্রবল জ্বর আসায় দেরি না করে মুকুন্দপুর আমরি হাসপাতালেই নিয়ে আসা হয় শিশুটিকে । ভর্তি হওয়ার পরে তিনি শিশুটির শরীরে গোল চাকা চাকা দাগ দেখতে পান চিকিৎসকরা । সারা শরীরে র‍্যাশ  বেরিয়েছিল শিশুটির । চার মাসের শিশুর চোখ , জিভ , ঠোঁট রক্তজবার মতো লাল হয়ে ওঠে । কর্তব্যরত শিশু বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক সৌম্যব্রত আচার্যের অভিজ্ঞ চোখ ফাঁকি দিতে পারেনি । কাওয়াসাকি ডিজিস নিরূপণ করেন তিনি । সাধারণত ছয় মাসের কম বয়সী শিশুদের ক্ষেত্রে এই রোগ দেখা যায় না। তবে এই শিশুর ক্ষেত্রে এটি দেখা যাওয়ায় চমকে ওঠেন চিকিৎসকরা । দ্রুত চিকিৎসা শুরু হয় ।

কী কারণে এই রোগ হয়, তা নিয়ে এখনও সন্ধান চলছে গোটা বিশ্বে । সাধারণত প্রতি ১০ লক্ষ শিশুর মধ্যে আট থেকে দশ জন এই রোগে আক্রান্ত হয় । জ্বর , সারা গায়ে গোল চাকা চাকা দাগ , রক্ত জমাট বেঁধে সারা শরীরে প্রদাহ হয় । জ্বরের সাধারণ ওষুধে এই রোগ নির্মূল হয় না । সঠিক সময়ে এই রোগ ধরা না পড়লে অচিরে মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে । ১৯৬৭ সালে জাপানের চিকিৎসক টমিসাকু কাওয়াসাকি এই রোগ আবিষ্কার করেন ।

আরামবাগের এই শিশুর কাওয়াসাকি ডিজিস ধরা পড়ার পর চিকিৎসকরা তার করোনা পরীক্ষাও করেন । এবার মাথায় আকাশ ভেঙে পড়ে চিকিৎসকদের । করোনা পজেটিভ রিপোর্ট আসে । তবুও চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করেন চিকিৎসকরা প্রায় দুঃসাধ্য কাজকে সার্থক করে তুলতে কসুর করেননি তাঁরা । করোনা আক্রান্ত হওয়ার পর শিশুটিকে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজে স্থানান্তরিত করা হয় । সেখানকার শিশু বিশেষজ্ঞরাও অসম লড়াই জারি রাখেন । তবে চিকিৎসকদের সাহস এবং কর্তব্য নিষ্ঠা আর শিশুটির মনোভাব এসবের কাছে পরাস্ত হল মারণ করোনা ভাইরাস এবং কাওয়াসাকি ডিজিস ।

সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে যায় চার মাসের শিশু । মৃত্যুকে হেলায় হারিয়ে এই বীরপুরুষ এখন স্বমহিমায় হুগলির আরামবাগের বাড়িতে । করোনা ভাইরাস এবং কাওয়াসাকি ডিজিস , দুই রোগকে হারিয়ে সুস্থ হয়ে ওঠার এই ঘটনা ইন্ডিয়ান পেডিয়াট্রিক অ্যাসোসিয়েশনের জার্নালের অনলাইন ভার্সনে প্রকাশিত হয়েছে । এর আগে ইংল্যান্ডে এরকম একটি ঘটনার সন্ধান পাওয়া গেছে । তবে নজিরবিহীন ঘটনার সাক্ষী থাকল শহর কলকাতা ।

ABHIJIT CHANDA

Published by:Shubhagata Dey
First published:

Tags: A four month old baby, Corona positive, Kawasaki disease