#কোচবিহার : রাজ আমলে প্রতিষ্ঠিত কোচবিহার বড় দেবী। কোচবিহার জেলার দুর্গাপূজা বলতে বড় দেবীর পুজো সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ এবং ঐতিহ্যবাহী। এই পুজোর রীতিনীতি রয়েছে প্রচুর, তার মধ্যে প্রথম এবং প্রধান রীতি হল ময়না কাঠেরশক্তি পুজো। শুক্রবার কোচবিহার মদনমোহন বাড়ির ডাঙ্গর আই মন্দিরে শক্তি পূজার মাধ্যমে বড় দেবীর পূজার সূচনা হল এদিন। শক্তি অর্থাৎ মেরুদন্ড, বিশেষ প্রজাতির কাঠ থেকে এই মেরুদন্ড নির্মাণ করা হয় বড় দেবীর প্রতিমার। ময়না কাঠের মাধ্যমেই তৈরি হয় বড় দেবীর প্রতিমা। এই কাঠের মধ্যে মন্ত্রের মাধ্যমে শক্তি স্থাপন করেন বর্তমান রাজপুরোহিত হীরেন্দ্রনাথ ভট্টাচার্য। সম্পূর্ণ পুজো সম্পন্ন করতে সময় লাগে দু ঘন্টার বেশি। প্রথমে ফল ও ফুল দিয়ে শক্তি দন্ড কে বোধন করা হয়। তারপর স্নান করিয়ে নতুন বস্ত্র পড়ানো হয়। এরপর শক্তি দন্ড ডাঙ্গর আই মন্দির থেকে নিয়ে যাওয়া হয় মদনমোহন মন্দিরে। সেইখানে একমাস যাবত পুজো চলে এই শক্তি দণ্ডের। এই পূজোর বিষয়ে রাজ পুরোহিত বলেন, \"এই পুজোয় বলি প্রথা প্রচলিত আছে। মূলত শক্তি পুজোয় রক্তের প্রয়োজন হয় সেই রাজ আমলের রাজ বিধি মেনেই।
বর্তমানে এখানে পায়রা বলি দেওয়া হয়। একমাস পুজো হওয়ার পরে এই কাঠ চলে যায় মায়ের প্রতিমার মেরুদণ্ড হিসেবে স্থাপিত হতে। এই কাঠের ওপর ভিত্তি করেই গোটা বড় দেবীর মূর্তিটি তৈরি করা হয়। কোচবিহারের ঐতিহ্য তথা রাজ গৌরবের প্রতীক এই বড় দেবীর পুজা। মদনমোহন বাড়ি থেকে এই শক্তি দন্ড নিয়ে যাওয়া হয় বড় দেবী মন্দিরে। সেখানেই নির্মাণ হয় বড় দেবীর প্রতিমার। শ্রাবনের শুক্লা অষ্টমী তিথিতে পুজো হয় ময়না এই ময়না কাঠের দন্ডের। এই পুজো কে বলা হয় যুগচ্ছেদন পুজো।
আরও পড়ুনঃ ঝুঁকির খেয়া পারাপার অব্যাহত কোচবিহারে!
তারপর কৃষ্ণ অষ্টমীতে দেবী বাড়িতে পুজো শুরু করা হয় বড় দেবীর বাড়িতে। রাধা অষ্টমী তিথিতে বড় দেবীর মন্দিরে নিয়ে যাওয়া হবে ময়না কাঠের দন্ড। তারপরে দুর্গা পুজোর সময় পুজো হবে বড় দেবীর।\" বড় দেবীর পুজো আদতে কবে শুরু করা হয়েছিল তা বলা প্রায় একপ্রকার অসম্ভব। তবে আনুমানিক প্রায় ৫৪৫ বছর আগে এই পুজোর সূচনা করেছিলেন কোচবিহারের তৎকালীন মহারাজা। স্বপ্নাদেশ পাওয়ার পর বড় দেবীর মূর্তির পাথর খুঁজে পান কোচবিহারের মহারাজা। তারপর থেকেই নিয়ম-নীতি ও নিষ্ঠা সহকারে এই পুজো হয়ে আসছে দেবী বাড়ির মন্দিরে।
আরও পড়ুনঃ বেহাল দশা শিশুদের খেলার পার্ক ও মুক্ত মঞ্চের! দ্রুত সংস্কারের দাবি স্থানীয়দের
মদনমোহন বাড়িতে প্রতিষ্ঠিত ভবানী মূর্তির আদলেই তৈরি করা হয় বড় দেবীর প্রতিমা। এক সময় জঙ্গলে ঘেরা কোচবিহারে ময়না কাঠের সেরকম অভাব ছিল না। কিন্তু সম্প্রতি এই কাঠের কিছুটা অভাব দেখা দিয়েছে। বর্তমানে এই পুজোর সমস্ত বিষয় পরিচালনা করে দেবোত্তর ট্রাস্ট বোর্ড। তাই তারা এই কাঠের সমস্যা মেটাতে ময়না গাছের চারা লাগানোর উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন।
Sarthak Pandit
নিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।
Tags: Cooch behar