#কলকাতা: ২০১৭ সালের ১৬ ডিসেম্বর। কলকাতা হাইকোর্টে ইতিহাসের পাতায় ঢুকে গেল এই দিন। ১৫৫ বছরের ইতিহাসে এই প্রথম শনিবারে হাইকোর্টে মামলার কাজ হল। শুনানি চলল। অংশ নিলেন আইনজীবীরাও। দেশে জমে থাকা মামলার পাহাড় কমাতেই এই নির্দেশ দেয় সুপ্রিম কোর্ট। আইনজীবীদের একাংশের বিরোধীতা উপেক্ষা করেই দৃষ্টান্ত স্থাপন করল কলকাতা হাইকোর্ট।
১৮৬২ সালে পথচলা শুরু। দীর্ঘ ১৫৫ বছরের ইতিহাসে এই প্রথম এমন কোনও শনিবার দেখল কলকাতা হাইকোর্ট। ছুটির পরম্পরা পিছনে ফেলে শনিবার কাজ হল অন্যান্য দিনের মতোই। গথিক স্টাইলের ক্লাসিক্যাল বিল্ডিংয়ে আইনজীবীদের যাতায়াত। আইনি যুক্তি-তর্ক। একেবারে আর পাঁচটা কাজের দিনের মতোই।
১৭ টি ক্রিমিনাল আপিল মামলার শুনানি
বিচারপতি জয়মাল্য বাগচী ও বিচারপতি রাজর্ষি ভরদ্বাজের বেঞ্চে শুনানি
১৭ টির মধ্যে ১৩টি মামলায় নিম্ন আদালতের রায় বহাল থাকে
৪ টি মামলায় নিম্ন আদালতের রায় সংশোধন করল হাইকোর্ট
এর মধ্যে দুটি ক্ষেত্রে খালাস পেলেন অভিযুক্তরা
দুটি ক্ষেত্রে সাজার মেয়াদ ও জরিমানা কম করা হলো
১৭ টি মামলার মধ্যে একটি মামলায় শনিবারই মুক্তির নির্দেশ দেওয়া হয় এক সাজাপ্রাপ্তকে। ১৯৯৮ সালে বীরভূমের কেগড়িয়া গ্রামে খলিলউদ্দিন গরু নিয়ে ঢুকে পড়ে গ্রামেরই অন্য বাসিন্দা জুলমুদ্দিনের উঠোনে। উঠোনে শুকতে দেওয়া ধান নষ্ট হয়ে গিয়েছে অভিযোগে শুরু হয় বচসা।
বচসা চলার সময় জমিরুদ্দিনকে টাঙির কোপ মারে জুলমুদ্দিন ৷ জমিরুদ্দিনকে খুনের ঘটনায় জুলমুদ্দিনকে ১০ বছরের কারাদন্ড দেয় রামপুরহাট জেলা আদালত ৷ সেই ঘটনায় শনিবার শাস্তি কমানোর নির্দেশ দেয় হাইকোর্ট ৷ ইতিমধ্যেই ৭ বছর জেল খাটায় শনিবারই জুলমুদ্দিনকে মুক্তির নির্দেশ দেয় বিচারপতিরা ৷
শনিবার কাজ শুরু হওয়ায় বিচারপ্রার্থীদের সুবিচার পাওয়ার আশা উজ্জ্বল হবে। শনিবার আদালত চলায় আপত্তি তুলেছিল আইনজীবীদের একটি অংশ। তা উপেক্ষা করেই মামলায় অংশ নিয়েছেন অনেক আইনজীবী। এদিন আদালতে আগাগোড়া হাজির ছিলেন রাজ্যের চিফ পাবলিক প্রসিকিউটর শাশ্বতগোপাল মুখোপাধ্যায়ও। রাজ্যও যে আদালতের কর্মসংস্কৃতি আরও উন্নত করার পক্ষে, এতেই তার প্রমাণ মিলেছে বলে দাবি আইনজীবী মহলের।