#নয়াদিল্লি: ২০২০-র ফেব্রুয়ারিতে ঘোষণা হয়ে গিয়েছিল ২০২০-২১ অর্থবর্ষের বাজেটের। কিন্তু তার পরই পরিস্থিতি পালটাতে থাকে। করোনার জেরে ক্ষতিগ্রস্ত হয় একাধিক ক্ষেত্র। যার মধ্যে সব চেয়ে বেশি ধাক্কা খায় ট্র্যাভেল ও ট্যুরিজম। করোনার জেরে লকডাউনে বন্ধ হয়ে যায় সমস্ত ভ্রমণকেন্দ্র। এবং তার পরও এই ক্ষেত্রে সে ভাবে কোনও পরিবর্তন আসেনি। করোনা পরিস্থিতির প্রায় এক বছরের মাথায় এবার মাস ভ্যাকসিনেশন বা টিকাকরণ শুরু করেছে সরকার। ফলে এই ক্ষেত্রে এবার পরিবর্তনের আশা করা যাচ্ছে। এবং আসন্ন বাজেটে এই পরিবর্তনে কথা মাথায় রেখে ট্র্যাভেল ও ট্যুরিজমের ক্ষেত্রকে আলাদা গুরুত্ব দেওয়া হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। তবে, বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কী ভাবে সরকার এই ক্ষেত্রকে তুলে ধরে সেটাই এখন দেখার!
Care Rating নামে এক সংস্থার তথ্য বলছে, ২০২০ সালে ১.২৫ লক্ষ কোটি টাকা ক্ষতি হয়েছে ভ্রমণক্ষেত্রে। জানুয়ারি থেকে ফেব্রুয়ারি ২০২০ সালের মধ্যেই ৫০ শতাংশ প্রভাব পড়েছে এই ক্ষেত্রে। এর পর মার্চে আন্তর্জাতিক বিমান বন্ধ হয়ে যাওয়ার ফলে, অন্তর্দেশীয় বিমান বন্ধ হয়ে যাওয়ার ফলে তা ৭০ শতাংশে পৌঁছায়। শুধুমাত্র এপ্রিল থেকে জুনের মধ্যেই ৬৯ হাজার ৪০০ কোটি টাকা রেভেনিউ লস হয়েছে, যা এই ক্ষেত্র থেকে বার্ষিক আয়ের ৩০ শতাংশ।
১৬ জানুয়ারি থেকে টিকাকরণ শুরু হয়েছে দেশে। আর কিছু দিনের মধ্যেই দেশের একটা অংশ টিকা পেয়ে যাবে, ফলে ধীরে ধীরে ভ্রমণক্ষেত্রের পরিস্থিতি পালটাবে বলে আশা করা হচ্ছে এবং আসন্ন বাজেটে এই ক্ষেত্র নিয়ে অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমন (Nirmala Sitharaman) কী সিদ্ধান্ত নেন, কী পদক্ষেপ করেন সেই দিকেই তাকিয়ে মানুষজন।
জানা যাচ্ছে, বাজেটের পছন্দের তালিকায় ভ্রমণক্ষেত্রটি রয়েছে। বাজারে এর পরিস্থিতি এখন ঠিক কী এবং শিল্প সম্ভাবনা এতে এখন কতটা রয়েছে তা জানতে চাওয়া হয়েছে সরকারের তরফে। Federation of Associations in Indian Tourism and Hospitality-কে রপ্তানি আয় কর থেকে অব্যাহতি দেওয়া এবং পর্যটন আয়ের ক্ষেত্রে করের বিষয়টি শূন্যের হারে রাখার জন্য বলা হয়েছে। প্যানডেমিক পরবর্তী পরিস্থিতিতে এই ক্ষেত্রটি পুনরুদ্ধারের জন্য ইন্ডিয়া স্কিম বা SEIS-এ বিদেশি মুদ্রা অর্জনকারী সকল সদস্যকে ১০ শতাংশ করে পাঁচ বছরের জন্য পরিষেবা রপ্তানির সুপারিশ করেছে।
ট্যুরিজম ইন্ডাস্ট্রি আশা করছে, আসন্ন বাজেটে বেশ কিছু এমন কৌশল নেওয়া হবে, যাতে এই ক্ষেত্রকে দ্রুত পুনরুজ্জীবিত করা যায়। FAITH-এর সুপারিশ, দেশের মধ্যে ট্র্যাভেল করার ক্ষেত্রে কর বৃদ্ধি করা যেতে পারে। পাশাপাশি GST-তে অন্তর্ভুক্ত অন্তর্দেশীয় ট্যুর, ট্র্যাভেল এজেন্ট, হোটেল, ট্রান্সপোর্ট এই সব ক্ষেত্র থেকে আয় হতে পারে। এর জন্য গুরুত্বপূর্ণ কৌশল নেওয়ার কথাও বলেছে তারা।
প্রসঙ্গত, দেশের অন্যতম আয়ের উৎস ভ্রমণক্ষেত্র। দেশের গড় GDP-র ৬.২৩ শতাংশ আয় হয় এখান থেকে। দেশের মোট জনসংখ্যার ৮.৭৮ শতাংশ মানুষের জীবিকা নির্ভর করে এই ক্ষেত্রের উপরে। এর সঙ্গেই ট্র্যাভেল, হসপিটালিটি, রেস্তোরাঁ-সহ একাধিক ইন্ডাস্ট্রি জড়িত। ফলে সেখান থেকেও আরও অনেকটা আয় হয় সরকারের।