#কলকাতা: কোভিড-১৯ সঙ্কট গোটা বিশ্বকে প্রভাবিত করেছে। এই মারণ ভাইরাসের তাণ্ডবে ব্যবসা-বাণিজ্য প্রায় তলানিতে। করোনার বিরূপ প্রভাব ভারতের ব্যবসা আর অর্থনীতিতেও পড়েছে। বহু মানুষ চাকরি হারিয়েছেন, ফলে অনেক পরিযায়ী শ্রমিকদের নিজেদের গ্রামে ফিরে যেতে হয়েছে। এখন দেশ আনলক ফেজে, এবার করোনা সঙ্কটের ধাক্কা থেকে ঘুরে দাঁড়ানোর জন্য কঠিন পরিশ্রম করছেন সকলেই। বিশেষ করে আরবান ইকোনমি বা সংগঠিত ক্ষেত্রের ব্যবসা ঘুরে দাঁড়ানোর তাগিদে সংগ্রাম করছে।
ঘুরে দাঁড়ানোর এই প্রয়াসে কিন্তু অতিক্ষুদ্র, মাঝারি ও ক্ষুদ্র শিল্প (MSME সেক্টর) আর গ্রামীণ অঞ্চলের ব্যবসাকে গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে দেখা হচ্ছে। আর যেহেতু এই উদ্যোগগুলির কাছে এখন লিকুইডিটি বা টাকার জোগান খুবই জরুরি, মাইক্রোফিনান্স বা ক্ষুদ্রঋণ শিল্পের ভূমিকা এই জায়গায় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরাI এই প্রসঙ্গে, কলকাতা-স্থিত মাইক্রোফিনান্স সংস্থা ভিলেজ ফিনান্সিয়াল সার্ভিসেসের (ভিএফএস) এমডি এবং সিইও কুলদীপ মাইতি বলেন, ‘‘আজ যখন আরবান ইকোনমি উদ্বেগজনক সময় দিয়ে যাচ্ছে তখন কিন্তু অর্থনীতিকে ঘুরে দাঁড়াতে অতিক্ষুদ্র, মাঝারি ও ক্ষুদ্র শিল্প আর গ্রামীণ অঞ্চলের ব্যবসায়িক ক্রিয়াকলাপ দিশা দেখাতে পারেI এমএফআই শিল্প সব সময়েই এই উদ্যোগগুলির কাছে নগদ প্রবাহের প্রধান উৎস, এবং বর্তমান পরিস্থিতিতেও এই ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানদের সচল রাখতে এটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে।’’
কাজ হারিয়ে বাড়ি ফিরে যাওয়া পরিযায়ী শ্রমিকদের অধিকাংশ চাষের কাজের সঙ্গে যুক্ত হয়েছেন। অনেকেই আবার জীবিকা চালানোর জন্য কাজের সন্ধানে এখনও আছেন। কিন্তু এদের সবার ক্ষেত্রে মূলধনের অভাব সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। ক্ষুদ্রঋণ শিল্পকে এই সমস্যারও সমাধান হিসেবে মন্তব্য করে, কুলদীপ মাইতি বলেন, ‘‘ক্ষদ্রঋণ শিল্প মূলত ফার্ম সেক্টর এবং গ্রামীণ অঞ্চলের ব্যবসায়িক ক্রিয়াকলাপের সাথে যুক্ত। বাড়ি ফিরে যাওয়া শ্রমিকদের কাছে আয় উপার্জনের হেতু ব্যবসায়িক ক্রিয়াকলাপ শুরু করার জন্য এটি মূলধন জোগানের মুখ্য স্রোত হতে পারে।’’ তিনি আরও যোগ করেন ‘‘এমএফআই সংস্থাগুলি কেবল ঋণ সরবরাহ করে না; তারা তাদের গ্রাহকদের অর্থের সঠিক ব্যবহার করতে এবং যাতে তাদের ব্যবসা উৎপাদনশীল হয় তার উপর বিষেশ প্রশিক্ষণ দেয়I সেইদিক দিয়ে পরিযায়ী শ্রমিকরা যারা চাষের কাজে যুক্ত হয়েছেন বা যারা কাজের সন্ধানে আছেন তারা ক্ষুদ্রঋণ শিল্পকে থেকে উপকৃত হতে পারবেন।’’
ভিএফএসের কর্ণধারের কথায় সাম্প্রতিক সময়ে এনবিএফসি খাতে যে সংকট তৈরি হয়েছিল তার মধ্যেও এমএফআই শিল্প গ্রামীণ লিকুইডিটি যোগান নিশ্চিত করতে পেরেছিল। তাই তিনি আশা প্রকাশ করেন যে বর্তমানে, ১০ কোটিরও বেশি মহিলা ঋণগ্রহীতা, তিন লক্ষ কোটি টাকার বেশি ক্রেডিট পোর্টফোলিও (যা প্রতি বছর ৩০-৪০% বৃদ্ধি পাচ্ছে) এবং ৯৯% ঋণ সংগ্রহ দক্ষতা নিয়ে এই শিল্প, কোভিড তৈরি অর্থনৈতিক সংকট থেকে বেরিয়ে আসার লক্ষ্যে গ্রামীণ নগদ প্রবাহের সফল কাহিনীর পুনরাবৃত্তি করতে সক্ষম।
ভিলেজ ফিনান্সিয়াল সার্ভিসেস (ভিএফএস) বর্তমানে দেশের ১৩টি রাজ্যে - পশ্চিম বাংলা, ত্রিপুরা, অসম, বিহার, ঝাড়খণ্ড, ওড়িশা, সিকিম, মধ্যেপ্রদেশ, উত্তরাখণ্ড, ছত্তিসগড়, মেঘালয়, হরিয়ানা এবং উত্তর প্রদেশে থাকা নিজেদের ২৪৬টি শাখার মাধ্যমে ৫ লাখের বেশি মহিলা ঋণগ্রহীতাদের পরিষেবা দেয়। সংস্থার আগামী বছরগুলিতে দেশের ২০টি রাজ্যে ব্যবসা সম্প্রসারণের পরিকল্পনা রয়েছে ।
নিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।
Tags: Coronavirus